হ্যাকিং সম্পর্কে কিছু কথা যা জানা দরকার

হ্যাকিং সম্পর্কে কিছু কথা যা জানা দরকার


হ্যাকিং সম্পর্কে কিছু কথা যা জানা দরকার


আগে জানতাম ফেসবুক ফিশিং আছে।ওয়াইফাইয়েরও আছে??
-জ্বী ভাই আছে
-একটু বুঝাইয়া দেন কেমনে কি?!
ওয়াইফাই ফিশিং এর শিকার হয়তোবা খুব কম মানুষ হয়েছেন।কারণ এটি অনেকেই জানেইনা।ওয়াইফাই ফিশিং সাধারণ ওয়েবসাইট বেজ ফিশিং থেকে অনেক আলাদা।এখানে হ্যাকার নিশ্চয়ই আপনাকে কোন লিংক দিবেনা।তবে যা করবে তা হচ্ছে আপনার ওয়াইফাই জ্যাম করে দিবে।এরপর আপনাকে তার বানানো ওয়াইফাইতে কানেক্ট করাবে।
ধরুন,
আপনার ওয়াইফাইয়ের নামে “A”।তো আপনি ওয়াইফাই চালাতে চালাতে দেখলেন আপনি আর কানেক্ট হতে পাচ্ছেন না নিজের ওয়াইফাইতেই!!সাধারণত আপনি এরপর চেক করবে ওয়াইফাই লিস্ট এবং সেখানে দেখবে আরেকটি “A” নামের ওয়াইফাই।এখন আপনি যদি মনে করেন যে আসলে ওই নকল ওয়াইফাইটি আপনার আর ভেবে কানেক্ট এর জন্য পাসওয়ার্ড বসিয়ে দেন।তাহলে হ্যাকারের কাছে আপনার আসল ওয়াইফাইয়ের পাসওয়ার্ড চলে যাবে।
=================
বাঁচার উপায়:-
আসলে এখান থেকে বাঁচার উপায় সীমিত।আপনি একটা কাজ করতে পারেন।তা হল এমন হলে ওয়াইফাইটি কিছু সময় অফ রাখুন।হ্যাকার নিজেই বিরক্ত হয়ে ছেড়ে দিবে।
অথবা সেটিংস এ গিয়ে আপনার ওয়াইফাইয়ের চ্যানেল বদলে দিন 🙂
আজ হঠাৎ করে ফরহাদ তার রাউটার দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে বুঝতেছে তার নেট স্লো হয়ে আছে।সে ভাবতে থাকলো,৩ এমবিপিএস এর নেট তো এত স্লো হওয়ার কথা না!সাথে সাথে সে বুদ্ধি করে আইএসপির লোকদের কাছে কল দিল এবং জানতে পারলো তার লাইন দিয়ে ১ দিন ধরে অনেক ডাউনলোড হচ্ছে এবং এখনও তা চলছে!
ঘটনা বুঝতে না পেরে সে তার ওয়াইফাইয়ের এডমিন প্যানেলে লগিন করে দেখলো কানেক্টেড ডিভাইসের মধ্যে একটি অজানা ডিভাইস কানেক্ট হয়ে আছে।ঘটনা বুঝতে পেরে সে সাথে সাথে পাসওয়ার্ড বদলে ফেললো এবং চিন্তামুক্ত হল।
উপরের ঘটনাটি কাল্পনিক।তবে অনেকেই এমন পরিস্থিতির শিকার হন।তো আসলে কেন হয়?কি কারণে আপনার রাউটারে অন্য কেউ এক্সেস নিতে পারে?হ্যাক হচ্ছেই বা কেন?
আমরা আজ আলোচনা করবো ওয়াইফাইয়ের পাসওয়ার্ড নিয়ে,
ওয়াইফাইতে সর্বনিম্ন ৮ ডিজিট পাসওয়ার্ড দিতে হয় যদি সেটি WPA/WPA2 হয়।কিন্তু WEP হলে আরও কম দেওয়া যায়।এদের মাঝে WEP এর সিকিউরিটি সবচেয়ে দূর্বল হয় এবং সহজেই হ্যাক করা যায়।অন্যদিকে WPA/WPA2 এর ব্যাপারটা অনেক ভিন্ন।এর সিকিউরিটি যথার্থই শক্তিশালী। তাই এখনও এটি টিকে আছে ওয়াইফাইয়ের সিকিউরিটি জগতে।তবে বিষয় হচ্ছে আপনি হ্যাকড হচ্ছেন কেন তাহলে?এছাড়াও বাই ডিফল্ট রাউটারগুলো WPA2 দিয়ে রাখে।এরপরেও কেন?
আমি ব্যক্তিগতভাবে একটা পরীক্ষা নিয়ে দেখেছি যে বেশিরভাগ মানুষ তাদের ওয়াইফাইয়ের পাসওয়ার্ড খুব সহজেই ধরা যায় এমন কিছু দিয়ে রাখে।বিশেষ করে পাসওয়ার্ড এর শেষের অংশ বেশিরভাগ মানুষের ১২৩ অথবা ২৩৪ হয়।এছাড়াও ডিকশনারিতে থাকা শব্দগুলো অনেক বেশিই ব্যবহৃত হয়!!এছাড়া রয়েছে নিজের দেওয়া ফোন নম্বর বা প্রিয় কোন কিছুর নাম।ঠিক এসব কিছু সামান্য কারণেই আপনার ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক সাধারণত হ্যাক হয়ে যায়!
তো আপনি এর মধ্যে আছেন নাকি?
(যারা ভাবছেন আমি বেঁচে গেছি!তাদের জন্য আরেক পর্ব আসিতেছে )
বেচারা ফরহাদের দিন কিছুদিন ভাল যাওয়ার পর আবারও তার রাউটার হ্যাকের শিকার হল।কিন্তু এবার সমস্যা ভিন্ন!!শালার কোন ভাবেই সে হ্যাকারকে বের করতে পারতেছেনা।পাসওয়ার্ড ১৬ ডিজিট দিয়েও কাজ হচ্ছেনা।ম্যাক ফিল্টার করেও কিছু থেকেই কিছু হচ্ছেনা।পরে হাল ছেড়ে দিয়ে ভাবলো ধুর,ব্যবহার করুক গিয়ে।হাশরের ময়দানে নেকির হিসাব নিয়ে নিবোনে
এত কিছুর পরেও হ্যাক হচ্ছে,শুনে নিশ্চয়ই অনেকেই অবাক হচ্ছেন যে কিভাবে সম্ভব!!আমিও তাই ভাবতাম এক কালে।কিভাবে কি রে ভাই।পরে বিষয়টি পরিষ্কার হলাম।আসুন জেনে নেই,
কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি দেখা যায় কোন হোম রাউটার।আমি চট করে বলে দেবো টিপি লিংক এর রাউটার।এর মধ্যে আবার এক এন্টেনা সহ অল্প দামের (১৬০০-১৮০০) একটা রাউটার খুব জনপ্রিয়। সম্ভবত WN-720 হবে।তো আমি কেন মডেলের পেছনে পরলাম?আছে রে ভাই কারণ আছে।
WPS Button এর কথা প্রায় প্রতিটা রাউটার ব্যবহারকারী জানেন।বাটনটায় চাপ দিলে ২ মিনিটের জন্য পাসওয়ার্ড ছাড়াই কানেক্ট করা যায় 😀ঘাপলা ওটা নিয়েই।আসলে ২ মিনিট না।বাই ডিফল্ট ওটা Enable থাকে সবসময়।কি অবাক হচ্ছেন?ভয়ের কিছু নেই।অন্য সময় কানেক্ট হতে ৮ ডিজিটের একটি নিউমেরিক্যাল কোড দিতে হয়।তবে ঘাপলা সেখানেই।এই পিনটি ব্রুটফোর্স করা যায়।বিশেষ করে পুরনো সস্তা মডেলের রাউটার যেমন উপরে একটা বললাম সেসবে।এখন অনেকে বলবেন “ভাই অনেক গুলা পারমিউটেশন হয়।খবর আছে বের করতে” আসলে তাও ভুল।শেষের ৪ ডিজিট মাঝে মাঝে বের করা যায় দ্রুত।অথবা রেস্পন্স থেকেই খুব সহজে বের করা যায় পিনের এলগোরিদম অথব ধরন কেমন।এর জন্য একটি সফটওয়্যারও আছে যা মাত্র ১১ হাজারবার চেষ্টা করে বেশিরভাগ সময় খুব সহজেই সফল হয় (নাম জিজ্ঞেস করবেন না,কমেন্টেও বলার দরকার নেই জানলে)।
তো বাঁচতে পারবেন কি করে?সুন্দর মত এখনই রাউটারের কন্ট্রোল প্যানেলে লগিন করুন এবং WPS অপশন খুঁজে বের করে ডিজেবল করে দিন।মনে রাখবেন।এসব ছোটখাটো জিনিষগুলই আমরা এড়িয়ে যাই,যেই কাজটা হ্যাকাররা করে না ।
সংবাদ ;সংগৃহীত

Post a Comment

Previous Post Next Post