⛔শ্রমিক কে:
শ্রম আইনের ধারা:২(৬৫) অনুযায়ী প্রশাসনিক,ব্যবস্থাপনামূলক এবং তদারকি কর্মকতা ব্যতিত সকলেই শ্রমিক।
সবার মধ্যে একটা ধারনা বিরাজমান যে এই তিন প্রকৃতির কর্মীগন শ্রমিক নয়।
ধারনাটা ২০১৫ সালের আগে নেহায়েত সঠিক ছিল;
কিন্ত শ্রম বিধিমালাতে ব্যবস্থাপনামূলক,প্রশাসনিক এবং তদারকি কর্মকতাগনের সংজ্ঞার মাধ্যমে এই তিন প্রকৃতির কর্মী কাদেরকে বলা হবে। সে বিষয়ে পরিস্কার ধারনা প্রদান করা হয়েছে।
শ্রম বিধিমালার বিধিঃ- ২(ছ) এবং (ঞ) অনুযায়ী,
"মালিক বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক লিখিতভাবে ক্ষমতা প্রাপ্ত কোন ব্যক্তি"
"যিনি প্রতিষ্ঠানের কোন শাখার কাজ বা সেবার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন,কাজের পরিধি নিয়ন্ত্রন,বাস্তবায়ন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রন,কাজের মূল্যায়ন বা পর্যালোচনা,শ্রমিকদের দিক নির্দেশনা প্রদান বা তদারকি করেন।"
দুটি বিষয় লক্ষ্য করেন;
১. মালিকে লিখিতভাবে ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।
২. নিচের অংশে যতগুলো কাজের কথা বলা আছে সবগুলো কাজ তাকে করতে হবে, এখানে একটা বা দুইটা কাজ করলে তিনি তদারকি কর্মকতা হিসাবে বিবেচিত হবেন না।
প্রশাসনিক বা ব্যবস্থাপনামূলক কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বলা হবে তাকে;
যিনি মালিক বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে নিন্মোক্ত সকল কাজের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়েছেন;
"প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক নিয়োগ,বেতন ও ভাতাদি নির্ধারন চাকরির অবসান বা চাকুরী হইতে অপসারন,চুড়ান্ত পাওনাদি পরিশোধ এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যয় অনুমোদন বা নিয়ন্ত্রন"
এখানেও লক্ষ্যনীয় বিষয় যে সব কাজগুলো করার ক্ষমতা লিখিতভাবে দিতে হবে এবং সব কাজগুলো যে ব্যক্তি করবেন তিনিই প্রশাসনিক বা ব্যবস্থাপনামূলক কর্মকতা হিসাবে বিবেচিত হবেন।
এবার একটু ঠান্ডা মাথায় ভাবেন যে আপনার প্রতিষ্ঠানে ২ বা ৩ জনের বেশি লোক নাই যারা উক্ত কাজগুলো করেন।
আপনি পে-রোল দেখেন কিন্ত আপনি আর কিছু করেন না।
আপনি শ্রমিক!!!
⛔ বাসৎরিক অর্জিত ছুটির টাকা নগদায়নের নিয়ম:
শ্রম আইনের ধারা-১১ তে বলা আছে যদি কোন শ্রমিকের কোন অর্জিত ছুটি অভোগকৃত থাকে, তবে উক্ত অভোগকৃত ছুটির বিপরীতে মজুরী প্রদান করিতে হবে।
এছাড়াও ২০১৫ সালের শ্রম বিধিমালার বিধি-১০৭ এ বলা আছে কর্মী চাইলে ছুটির বিনিময়ে অর্থ গ্রহন করতে পারবে।
ছুটির টাকা নগদায়নের ক্ষেএে যে সমস্যাটির সম্মুখীন অনেকে হয়ে থাকেন তা হল অভোগকৃত ছুটির মজুরী গননার নিয়ম নিয়ে।
ছুটি নগদায়নের ক্ষেএে মজুরী হিসাবের নিয়ম:
১.যে মাসে ছুটির টাকা নগদায়ন করবেন ঠিক তার আগের মাসের বোনাস ও ওভার টাইমের মজুরী ব্যতীত মোট মজুরীকে ভাগ দিতে হবে, আগের মাসের উপস্থিতির দিনগুলো দিয়ে। এরপরে যে ভাগফল পাওয়া যাবে তাকে আবার গুন করতে হবে, যে ছুটির দিনগুলো নগদায়ন করতে চায় তার মোট সংখ্যা দিয়ে।
২.যে মাসে ছুটির টাকা নগদায়ন করবেন ঠিক তার আগের মাসের বোনাস ও ওভার টাইমের মজুরী ব্যতীত মোট মজুরীকে ভাগ দিতে হবে, ৩০ দিয়ে এবং এরপর যে ভাগফল পাওয়া যাবে তাকে আবার গুন করতে হবে, যে ছুটির দিনগুলো নগদায়ন করতে চায় তার মোট সংখ্যা দিয়ে।
অনেকেই প্রায়শই জানাতে চান যে মূল মজুরী না গড় মজুরী হারে দিতে হবে। আসলে গড় বা মূল মজুরী কোন বিষয় নয়।
আরও দুটি বিষয় হচ্ছেঃ-
১. বাসৎরিক ছুটির অর্ধেকের বেশি নগদায়ন করা যাবে না।
২. প্রতি বছরে মাএ একবার নগদায়ন করা যাবে।
⛔ কর্মী নিজে চাকুরী ইস্তফা দিলে কি কি সুবিধা পাবেন:
প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মীকে নানা কারনে চাকুরী থেকে ইস্তফা দেয়ার প্রয়োজন হয়। সেটা হতে পারে পারিবারিক,শারীরিক সমস্যা বা চাকুরী পরিবর্তনের কারনে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২৭ ধারা অনুযায়ী যখন কোন কর্মী চাকুরী থেকে ইস্তফা প্রদান করবেন তখন একজন মানব সম্পদ কর্মীকে তিনটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে যেমন:
১। প্রতিষ্ঠানে কোন গ্রাচুইটি পলিসি আছে কি না।
২। চাকুরীর বয়স ৫ বছরের বেশি এবং ১০ বছরের কম কি না।
৩। চাকুরীর বয়স ১০ বছরের বেশি কি না।
১ নম্বর বিষয়টা সর্ব প্রথমে আলোচনা করা যাক। কেন বলা হল যে প্রতিষ্ঠানে গ্রাচুইটি পলিসি আছে কি না কারন হল যদি কোন প্রতিষ্ঠানে গ্রাচুইটি পলিসি থাকে, তবে প্রতিষ্ঠানে যদি কোন কর্মী ৬ মাস বা তার বেশি সময় কাজ করে থাকেন তাহলে উক্ত কর্মী প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর কাজের জন্য ৩০ দিনের মজুরী পাবেন। আর যদি প্রতিষ্ঠানে গ্রাচুইটি পলিসি না থাকে তবে ৫ বছরের একদিন কম কাজ করলে আপনি কর্মীকে একটা প্যাকেট দিয়ে বলবেন যে আমরা প্যাকেট দিলাম আপনি মুড়ি কিনে খেতে খেতে বাসায় চলে যান কারন তিনি কিছুই পাইবার অধিকারী হইবেন না।
২ নম্বর বিষয় হল ৫ বছরের বেশি এবং ১০ বছরের কম হলে প্রতি বছরের কাজের জন্য ১৪ দিনের করে মজুরী পাবেন। তবে যদি গ্রাচুইটি পলিসি থাকে সেক্ষেএে প্রতি বছর কাজের জন্য ৩০ দিনের মজুরী পাবেন।
৩ নম্বর বিষয়টা হল ১০ বছরের বেশি সময় কাজ করেছেন কি না। ১০ বছরের বেশি সময় কাজ করলে একজন কর্মীকে প্রতি বছর কাজের জন্য ৩০ দিনে মজুরী প্রদান করতে হবে। তবে গ্রাচুইটি পলিসি থাকলে প্রতি বছরের কাজের জন্য ৪৫ দিনের মজুরী পাবেন।
★একই সাথে কোন কর্মী গ্রাচুইটি এবং সার্ভিস বেনিফিট পাবেন কি না?
একটা বিষয় হল গ্রাচুইটি এবং সার্ভিস বেনিফিট এর মধ্যে টাকার পরিমানে যেটি বেশি হবে সেটা পাবেন।
★অনেকে প্রশ্ন করেন যে মূল মজুরী পাবেন না গড় মজুরী পাবেন?
বিনা চিন্তায় বলে দিতে পারেন যে মূল মজুরীর সম-পরিমান অর্থ পাবেন!
শ্রম আইনের ধারা:২(৬৫) অনুযায়ী প্রশাসনিক,ব্যবস্থাপনামূলক এবং তদারকি কর্মকতা ব্যতিত সকলেই শ্রমিক।
সবার মধ্যে একটা ধারনা বিরাজমান যে এই তিন প্রকৃতির কর্মীগন শ্রমিক নয়।
ধারনাটা ২০১৫ সালের আগে নেহায়েত সঠিক ছিল;
কিন্ত শ্রম বিধিমালাতে ব্যবস্থাপনামূলক,প্রশাসনিক এবং তদারকি কর্মকতাগনের সংজ্ঞার মাধ্যমে এই তিন প্রকৃতির কর্মী কাদেরকে বলা হবে। সে বিষয়ে পরিস্কার ধারনা প্রদান করা হয়েছে।
শ্রম বিধিমালার বিধিঃ- ২(ছ) এবং (ঞ) অনুযায়ী,
"মালিক বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক লিখিতভাবে ক্ষমতা প্রাপ্ত কোন ব্যক্তি"
"যিনি প্রতিষ্ঠানের কোন শাখার কাজ বা সেবার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন,কাজের পরিধি নিয়ন্ত্রন,বাস্তবায়ন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রন,কাজের মূল্যায়ন বা পর্যালোচনা,শ্রমিকদের দিক নির্দেশনা প্রদান বা তদারকি করেন।"
দুটি বিষয় লক্ষ্য করেন;
১. মালিকে লিখিতভাবে ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।
২. নিচের অংশে যতগুলো কাজের কথা বলা আছে সবগুলো কাজ তাকে করতে হবে, এখানে একটা বা দুইটা কাজ করলে তিনি তদারকি কর্মকতা হিসাবে বিবেচিত হবেন না।
প্রশাসনিক বা ব্যবস্থাপনামূলক কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বলা হবে তাকে;
যিনি মালিক বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে নিন্মোক্ত সকল কাজের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়েছেন;
"প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক নিয়োগ,বেতন ও ভাতাদি নির্ধারন চাকরির অবসান বা চাকুরী হইতে অপসারন,চুড়ান্ত পাওনাদি পরিশোধ এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যয় অনুমোদন বা নিয়ন্ত্রন"
এখানেও লক্ষ্যনীয় বিষয় যে সব কাজগুলো করার ক্ষমতা লিখিতভাবে দিতে হবে এবং সব কাজগুলো যে ব্যক্তি করবেন তিনিই প্রশাসনিক বা ব্যবস্থাপনামূলক কর্মকতা হিসাবে বিবেচিত হবেন।
এবার একটু ঠান্ডা মাথায় ভাবেন যে আপনার প্রতিষ্ঠানে ২ বা ৩ জনের বেশি লোক নাই যারা উক্ত কাজগুলো করেন।
আপনি পে-রোল দেখেন কিন্ত আপনি আর কিছু করেন না।
আপনি শ্রমিক!!!
⛔ বাসৎরিক অর্জিত ছুটির টাকা নগদায়নের নিয়ম:
শ্রম আইনের ধারা-১১ তে বলা আছে যদি কোন শ্রমিকের কোন অর্জিত ছুটি অভোগকৃত থাকে, তবে উক্ত অভোগকৃত ছুটির বিপরীতে মজুরী প্রদান করিতে হবে।
এছাড়াও ২০১৫ সালের শ্রম বিধিমালার বিধি-১০৭ এ বলা আছে কর্মী চাইলে ছুটির বিনিময়ে অর্থ গ্রহন করতে পারবে।
ছুটির টাকা নগদায়নের ক্ষেএে যে সমস্যাটির সম্মুখীন অনেকে হয়ে থাকেন তা হল অভোগকৃত ছুটির মজুরী গননার নিয়ম নিয়ে।
ছুটি নগদায়নের ক্ষেএে মজুরী হিসাবের নিয়ম:
১.যে মাসে ছুটির টাকা নগদায়ন করবেন ঠিক তার আগের মাসের বোনাস ও ওভার টাইমের মজুরী ব্যতীত মোট মজুরীকে ভাগ দিতে হবে, আগের মাসের উপস্থিতির দিনগুলো দিয়ে। এরপরে যে ভাগফল পাওয়া যাবে তাকে আবার গুন করতে হবে, যে ছুটির দিনগুলো নগদায়ন করতে চায় তার মোট সংখ্যা দিয়ে।
২.যে মাসে ছুটির টাকা নগদায়ন করবেন ঠিক তার আগের মাসের বোনাস ও ওভার টাইমের মজুরী ব্যতীত মোট মজুরীকে ভাগ দিতে হবে, ৩০ দিয়ে এবং এরপর যে ভাগফল পাওয়া যাবে তাকে আবার গুন করতে হবে, যে ছুটির দিনগুলো নগদায়ন করতে চায় তার মোট সংখ্যা দিয়ে।
অনেকেই প্রায়শই জানাতে চান যে মূল মজুরী না গড় মজুরী হারে দিতে হবে। আসলে গড় বা মূল মজুরী কোন বিষয় নয়।
আরও দুটি বিষয় হচ্ছেঃ-
১. বাসৎরিক ছুটির অর্ধেকের বেশি নগদায়ন করা যাবে না।
২. প্রতি বছরে মাএ একবার নগদায়ন করা যাবে।
⛔ কর্মী নিজে চাকুরী ইস্তফা দিলে কি কি সুবিধা পাবেন:
প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মীকে নানা কারনে চাকুরী থেকে ইস্তফা দেয়ার প্রয়োজন হয়। সেটা হতে পারে পারিবারিক,শারীরিক সমস্যা বা চাকুরী পরিবর্তনের কারনে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২৭ ধারা অনুযায়ী যখন কোন কর্মী চাকুরী থেকে ইস্তফা প্রদান করবেন তখন একজন মানব সম্পদ কর্মীকে তিনটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে যেমন:
১। প্রতিষ্ঠানে কোন গ্রাচুইটি পলিসি আছে কি না।
২। চাকুরীর বয়স ৫ বছরের বেশি এবং ১০ বছরের কম কি না।
৩। চাকুরীর বয়স ১০ বছরের বেশি কি না।
১ নম্বর বিষয়টা সর্ব প্রথমে আলোচনা করা যাক। কেন বলা হল যে প্রতিষ্ঠানে গ্রাচুইটি পলিসি আছে কি না কারন হল যদি কোন প্রতিষ্ঠানে গ্রাচুইটি পলিসি থাকে, তবে প্রতিষ্ঠানে যদি কোন কর্মী ৬ মাস বা তার বেশি সময় কাজ করে থাকেন তাহলে উক্ত কর্মী প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর কাজের জন্য ৩০ দিনের মজুরী পাবেন। আর যদি প্রতিষ্ঠানে গ্রাচুইটি পলিসি না থাকে তবে ৫ বছরের একদিন কম কাজ করলে আপনি কর্মীকে একটা প্যাকেট দিয়ে বলবেন যে আমরা প্যাকেট দিলাম আপনি মুড়ি কিনে খেতে খেতে বাসায় চলে যান কারন তিনি কিছুই পাইবার অধিকারী হইবেন না।
২ নম্বর বিষয় হল ৫ বছরের বেশি এবং ১০ বছরের কম হলে প্রতি বছরের কাজের জন্য ১৪ দিনের করে মজুরী পাবেন। তবে যদি গ্রাচুইটি পলিসি থাকে সেক্ষেএে প্রতি বছর কাজের জন্য ৩০ দিনের মজুরী পাবেন।
৩ নম্বর বিষয়টা হল ১০ বছরের বেশি সময় কাজ করেছেন কি না। ১০ বছরের বেশি সময় কাজ করলে একজন কর্মীকে প্রতি বছর কাজের জন্য ৩০ দিনে মজুরী প্রদান করতে হবে। তবে গ্রাচুইটি পলিসি থাকলে প্রতি বছরের কাজের জন্য ৪৫ দিনের মজুরী পাবেন।
★একই সাথে কোন কর্মী গ্রাচুইটি এবং সার্ভিস বেনিফিট পাবেন কি না?
একটা বিষয় হল গ্রাচুইটি এবং সার্ভিস বেনিফিট এর মধ্যে টাকার পরিমানে যেটি বেশি হবে সেটা পাবেন।
★অনেকে প্রশ্ন করেন যে মূল মজুরী পাবেন না গড় মজুরী পাবেন?
বিনা চিন্তায় বলে দিতে পারেন যে মূল মজুরীর সম-পরিমান অর্থ পাবেন!
⛔বাংলাদেশ শ্রম আইনের সবচেয়ে বহুল ব্যবহারিত ধারা হল ধারা-২৬।
কোন মালিক কোন স্থায়ী বা অস্থায়ী কর্মীকে বিনা কারনে চাকুরী থেকে ধারা-২৬ অনুযায়ী অব্যাহতি প্রদান করতে পারেন।
অনেকের ধারনা বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী খুব সম্ভাবত ৭ শ্রেণির কর্মীদেরকেই টার্মিনেইশন করা যায়।
না, শ্রম আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী শুধুমাত্র স্থায়ী এবং অস্থায়ী এই দুই শ্রেণীর কর্মীদের টার্মিনেইশন করা যায়।
মাসিক ভিত্তিতে মজুরী গ্রহন করেন এমন যেকোন স্থায়ী কর্মীকে টার্মিনেইট করার জন্য ১২০ দিনের নোটিশ প্রদান করতে হবে অথবা ১২০ দিনের মূল মজুরী টাকা প্রদান করতে হবে।
স্থায়ী শ্রমিকের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা সাপ্তাহিক এবং দৈনিক ভিত্তিতে মজুরী গ্রহন করেন।উক্ত স্থায়ী শ্রমিকদেরকে টার্মিনেইট করার জন্য ৬০ দিনের নোটিশ বা ৬০ দিনের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে।
অস্থায়ী কর্মীদের মধ্যে যারা মাসিক ভিত্তিতে মজুরী গ্রহন করেন তাদেরকে টার্মিনেইট করার জন্য ৩০ দিনের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে অথবা ৩০ দিনের নোটিশ প্রদান করতে হবে।
অস্থায়ী শ্রমিকদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা সাপ্তাহিক এবং দৈনিক ভিত্তিতে মজুরী গ্রহন করেন। তাদেরকে ১৪ দিনের নোটিশ প্রদান করতে হবে অথবা ১৪ দিনের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে।
২৬ ধারা অনুযায়ী কোন স্থায়ী কর্মীকে অব্যাহতি প্রদান করলে তাকে ২৬(৪) ধারা অনুযায়ী প্রতি বছর কাজের জন্য এক মাসের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে। যা শুধুমাত্র একজন স্থায়ী কর্মী পাবেন এবং ইহা অস্থায়ী কর্মীর জন্য প্রযোজ্য নয়।
শ্রম আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী যদি কোন কর্মীকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
তবে তিনি শ্রম আদালতে মামলা করতে পারিবেন না।তবে ৩৩(৯) ধারা অনুযায়ী ৩টি কারনে মামলা করা যাবে।
১। ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের কারনে কেউকে টার্মিনেইট করলে।
২। ২৬ ধারা অনুযায়ী পাওনা পরিশোধ না করতে।
৩। উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোন কর্মীকে টার্মিনেইট করলে।
⛔চলতি প্রতিষ্ঠান মালিক হঠাৎ বন্ধ করলে কর্মী কোন ধারায় ক্ষতিপূরণ পাবেন
পাঠক আপনার মাথায় প্রথম যে ভাবনা আসবে তা হল ধারা-২০ অনুযায়ী ছাটাই কিন্ত বাস্তবিকভাবে ছাটাই করা যাবে না।
কেন ছাটাই করা যাবে না বিপত্তি কোথায়।
১।প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনের অতিরিক্ত যদি কোন কর্মী থাকে তবে তাকে ছাটাই করা যাবে।
২। প্রতিষ্ঠানে যদি ধারা-১২ অনুযায়ী এমন কোন সমস্যার সৃষ্টি হয় যাতে প্রতিষ্ঠান ৪৫ দিন পর্যন্ত বন্ধ থাকে তবে ধারা- ২০ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মী ছাটাই করতে হবে।
৩। একটা বিষয় লক্ষ্য করেন (২) নম্বর ক্ষেএটি ছাড়া এক ভাবে বলাই যায় যে কোন কর্মীকে ছাটাই করতে হলে প্রতিষ্ঠান চালু থাকতে হবে।
তাহলে কি পাবেন উক্ত কর্মীগন,
যেহেতু একটি চালু প্রতিষ্ঠান মালিক কোন কারন ছাড়া বন্ধ করছেন অতএব, মালিকে ধারা-২৬ অনুযায়ী প্রতি বছর কাজের জন্য ১ মাসের মূল মজুরী এবং এছাড়াও ১২০ দিনের পূর্ব নোটিশ অথবা নোটিশের পরিবর্তে ১২০ দিনের সমান মূল মজুরী প্রদান করতে হবে।
⛔বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ এর ১৯ নং ধারায় শ্রমিকের নিয়োগ পত্র ও পরিচয় পত্র প্রদান এবং গোপনীয়তা রক্ষাকরণ সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে,
১। কোন মালিক নিয়োগপত্র প্রদান না করিয়া কোন শ্রমিককে নিয়োগ করিতে পারিবেন না।
২।কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরিকালীন কোন ব্যক্তিকে কেবল একবার নিয়োগপত্র প্রদান করিতে হইবে।
৩। কোন শ্রমিকের নিয়োগপত্র হারাইয়া গেলে বা নষ্ট হইয়া গেলে শ্রমিকের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাহার ব্যক্তিগত ফাইলে রক্ষিত নিয়োগপত্রের ফটোকপি বা হুবহু নকল সরবরাহ করা যাইবে
৪। ধারা ৫ মোতাবেক প্রদত্ত নিয়োগপত্রে নিম্নবর্ণিত তথ্যের উল্লেখ থাকিবে, যথাঃ-
(ক) শ্রমিকের নাম;
(খ) পিতার নাম;
(গ) মাতার নাম;
(ঘ) স্বামী বা স্ত্রীর নাম (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে);
(ঙ) ঠিকানাঃ
বর্তমান;
স্থায়ী;
(চ) পদবী, কাজের ধরন, যোগদানের তারিখ;
(ছ) শ্রমিকের শ্রেণী;
(জ) মজুরি বা বেতন স্কেল (মজুরি বেতন এবং বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধির হার যদি থাকে);
(ঝ) অন্যান্য প্রদেয় আর্থিক সুবিধা (বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা, শিক্ষা, খাদ্য, যাতায়াত, উৎসব ও হাজিরা ভাতা এবং গ্রাচুইটি (যদি থাকে); এবং
(ঞ) নিয়োগের যাবতীয় শর্ত প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান চাকরি বিধি (যদি থাকে) ও বিদ্যমান শ্রম আইন অনুযায়ী পরিচালিত হইবে মর্মে উল্লেখ।
(৫) প্রত্যেক মালিক তাহার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত প্রত্যেক শ্রমিককে ফরম-৬ অনুযায়ী মালিকের খরচে ছবিসহ পরিচয় পত্র প্রদান করিবেন।
(৬) শ্রমিক পরিচয়প্ত্র হারাইয়া ফেলিলে ৫০ ফি পরিশোধ সাপেক্ষে নূতন পরিচয়পত্র প্রদান করিতে হইবে।
(৭) নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বহি প্রদান সম্পর্কীত তথ্য রেজিস্টারের ফরম-৬ (ক) অনুযায়ী সংরক্ষন করিতে হইবে।
(৮) এই বিধিমালায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কোন শ্রমিক বা প্রশাসনিক বা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনকালে বা চাকরি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক কৌশলের গোপনীয়তা সংরক্ষন করিবেন।
মন দিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ সবাইকে।
⛔ Job Separation:
১. পদত্যাগ ( Resignation ) ধারা - ২৭
*কোন স্থায়ী শ্রমিক মালিক কে ৬০ দিনের লিখিত নোটিশ দিয়ে চাকুরী হতে ইস্তফা দিতে পারবেন ।
* কোন অস্থায়ী শ্রমিক যারা মাসিক মজুরী ভিত্তিতে নিয়জিত তারা ৩০ দিনের ও অনান্য শ্রমিক ১৪ দিনের লিখিত নোটিশ দিয়ে চাকুরী হতে ইস্তফা দিতে পারবেন ।
যদি কোন শ্রমিক বিনা নোটিশে চাকুরি ছাড়তে চান তাহলে নোটিশ মেয়াদের জন্য সমপরিমান মজুরী মালিক কে প্রদান করে চাকুরী ছাড়তে পারবেন ।
* কোন শ্রমিক বিনা অনুমতিতে ১০ দিনের বেশি অনুপস্থিত থাকলে, মালিক ১০ দিন সময় দিয়ে কারন ব্যাখ্যা করে পুনরায় যোগদানের নোটিশ প্রদান করবেন, উক্ত সময়ের মধ্যে যোগদান না করলে মালিক তাকে আত্নপক্ষ সমর্থনের জন্য আরো ৭ দিন সময় দিয়ে নোটিশ প্রদান করবেন তবুও তিনি না আসলে, তিনি অনুপস্থিতির দিন হতে ইস্তফা দিয়েছেন বলে গন্য হবে ।
* এই ধারার অধিনে কোন স্থায়ী শ্রমিক ইস্তফা দিলে , পাচ বছর বা তার অধিক সময় কিন্তু ১০ বছরের কম সময় চাকুরির জন্য প্রতি বছরের জন্য ১৪ দিনের মজুরী,১০ বছরের অধিক সময়ের জন্য ৩০ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি যেটি বেশি হয় সেটি ক্ষতিপুরন হিসেবে প্রদান করবেন । ক্ষতিপুরন অনান্য সকল সুবিধার অতিরিক্ত বলে বিবেচিত হবে ।
২. বরখাস্ত (Dismissal) ধারা - ২৩ (১)
এই আইনের অধিনে কোন শ্রমিক কে বিনা নোটিশে বরখাস্ত করা যাবে যদি তিনি * ফৌজদারী অপরাধে দন্ড প্রাপ্ত হন অথবা ধারা ২৪ অনুযায়ী অসদাচরনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন ।
৩. অপসারণ (Removal)ধারা ২৩(২)ক
ধারা ২৪ অনুযায়ী , অসদাচরনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত শ্রমিক কে বরখাস্ত না করে অপসারন করা যাবে সেক্ষত্রে উক্ত শ্রমিকের চাকুরির মেয়াদ যদি অবিচ্ছিন্ন ভাবে এক বছর বা তার বেশি সময় হয় তাহলে মালিক তাকে প্রত্যক বছরের জন্য ক্ষতিপুরন বাবদ ১৫ দিনের মজুরী প্রদান করবেন , তবে উক্ত শ্রমিক মালিকের ব্যাবসা বা সম্পত্তি চুরি বা আত্নসাৎ, প্রতাড়ণা ও প্রতিষ্ঠানে দাঙ্গা হাঙ্গামা অগ্নি সংযোগ , ভাঙচুর করলে ক্ষতিপুরন পাবেনা , তবে তার আইনানুগ অনান্য পাওনা পাবে ।
৪ . অবসান ( Termination ) ধারা - ২৬
এই ধারা অনুযায়ী মালিক চাইলে যেকোন শ্রমিক কে টার্মিনেট করতে পারবেন তবে স্থায়ী শ্রমিক যারা মাসিক মজুরী ভিত্তিতে নিয়জিত তাদের ১২০ দিনের নোটিশ দিতে হবে , অনান্যদের ৬০ দিনের , অস্থায়ী শ্রমিক যারা মাসিক মজুরী ভিত্তিতে নিয়জিত আছেন তাদের ক্ষেত্রে ৩০ দিনের নোটিশ অনান্যদের ক্ষত্রে ১৪ দিনের নোটিশ দিতে হবে অথবা নোটিশ মেয়াদের পরিবর্তে মজুরী পরিশোধ করে মালিক এটা করতে পারবেন ।
* এই ধারার অধিনে কোন স্থায়ী শ্রমিকের চাকুরি অবসান করা হলে প্রত্যক পুর্ন বছরের জন্য মালিক ক্ষতিপুরন হিসেবে ৩০ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি যেটি বেশি হয় সেটি প্রদান করবেন ।
ক্ষতিপুরন অনান্য সকল সুবিধার অতিরিক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে ।
৫. ছাটাই (Retrenchment ) ধারা - ২০
প্রয়োজনের অতিরিক্ততার কারনে কোন প্রতিষ্ঠান হতে শ্রমিক ছাটাই করা যাবে , তবে কোন শ্রমিকের চাকুরির মেয়াদ অবিচ্ছিন্ন ভাবে এক বছর বা তার বেশি হয় তাহলে তাকে এক মাসের লিখিত নোটিশ দিতে হবে অথবা মজুরী প্রদান করতে হবে ।
নোটিশের এক কপি প্রধান পরিদর্শক ও এক কপি সিবিএ যদি থাকে , দিতে হবে ।
* উক্ত শ্রমিক কে প্রতি বছর চাকুরীর জন্য ক্ষতিপুরন হিসেবে ৩০ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি যেটা বেশি হবে সেটা প্রদান করতে হবে ।
* তবে নোটিশের প্রয়োজন হবেনা যদি উক্ত শ্রমিক কে ৪৫ দিন লে-অফের পরে আরো ১৫ দিন লে-অফ করাতে হয় তবে সে ক্ষেত্রে তাকে প্রতি বছর চাকুরির জন্য আরো ১৫ দিনের মজুরী প্রদান করতে হবে ।
* মালিক শ্রমিকের মধ্যে ভিন্ন কোন চুক্তি না থাকলে সর্বশেষ নিযুক্ত শ্রমিক কে ছাটাই করবেন ।
৬. ডিসচার্জ (Discharge ) ধারা - ২২
কোন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রত্যায়ন পত্র অনুযায়ী শারীরিক বা মানুষিক অক্ষমতা বা অব্যাহত ভগ্ন স্বাথ্যর কারনে চাকুরী হতে ডিসচার্জ করা যাবে ।
ডিসচার্জ কৃত শ্রমিক কে মালিক তাহার প্রত্যক বছর চাকুরীর জন্য ক্ষতিপুরন হিসেবে ৩০ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি যেটি বেশি হয় সেটি প্রদান করবেন ।
৭. মৃত্যজনিত (Death ) ধারা - ১৯
কোন শ্রমিক দুই বছর অবিছিন্ন ভাবে চাকুরীরত থাকা অবস্থায় মৃত্য বরন করলে মালিক তাহার মনোনিত ব্যাক্তি কে প্রত্যক বছরের জন্য বা উহার ছয় মাসের অধিক সময়ের জন্য ক্ষতিপুরন হিসেবে ৪৫ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি যেটা বেশি হবে সেটা প্রদান করবেন, এই অর্থ মৃত শ্রমিক চাকুরী হতে অবসর গ্রহন করলে যে সুবিধা পেতেন তার অতিরিক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে ।
৮. অবসর (Retirement ) ধারা - ২৮
কোন শ্রমিকের বয়স ৬০ বছর পুর্ন হলে তিনি চাকুরি হতে স্বাভাবিক অবসর গ্রহন করবেন , ধারা ২৬(৪) অনুযায়ী অথবা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব চাকুরী বিধি অনুযায়ী , অবসর প্রাপ্ত শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করতে হবে ।
* এর পরে প্রতিষ্ঠান তাকে উপযুক্ত মনে করলে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দিতে হবে ।
⛔মজুরীবিহীন ছুটি বা অসাধারণ ছুটি:
মানুষের জীবনের সব দিন গুলো সমান ভাবে যায় না।কখনও ভাল আবার কখনও বা খারাপ, জীবনের খুব খারাপ বা খুব ভাল সময় গুলোকে আমরা অসাধারণ সময় বলে থাকি।আর এই অসাধারন ভাল ও খারাপ সময় গুলোকে মোকাবেলার জন্য এক ধরনের ছুটির খুব প্রচলন আছে জগত জুড়ে।আর সেই ছুটিকে বলা হয় মজুরীবিহীন ছুটি বা অসাধারন ছুটি।
আমি অনেকের কাছ থেকে এই ছুটি নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন শুনেছি যেমন এই ছুটি কেন দেয়া হয়,কতদিন দেয়া হয়,কাকে দেয়া হবে,মজুরীবিহীন ছুটির দিন গুলো কি চাকুরীকালীন সময় হিসাবে গননা করা যাবে কি না. আমি জানি এ রকম ডজন খানেক প্রশ্ন সবার মনেই আছে যাই হোক এবার আসি মূল বিষয়ে।
এই ছুটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার আগে আপনাদেরকে কিছু তথ্য দেই বাংলাদেশ শ্রম আইনে মজুরীবিহীন ছুটি বিষয়ে কিছু বলা নাই,
তবে শ্রম বিধিমালাতে উক্ত বিষয়ে বলা আছে কিন্ত বাংলাদেশ সাভিস রুলসে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে যা থেকে আমি কিছু উদাহরণ আপনাদের কে দিব।
প্রথম বিষয় হল এই ছুটি কেন দেয়া হয়,মূলত যে সময়ে কোন কর্মীর আর কোন ছুটি পাওনা বা ভোগ করা বাকি না থাকে কিন্ত তার ছুটির খুব প্রয়োজন হয় তখন মালিক বিশেষ বিবেচনায় এই ছুটি দিয়ে থাকে।একটা বিষয় মনে রাখবেন কোন কর্মীর ছুটি পাওনা থাকাকালীন সময়ে বা কর্মীর ছুটি অভোগ্য থাকলে তাকে মজুরীবিহীন ছুটি প্রদান করা যাবে না।
মজুরীবিহীন ছুটি কতদিন দেওয়া হবে,ছুটির পরিমানের বিষয়ে বাংলাদেশ সাভিস রুলসে বলা আছে যে অস্থায়ী কর্মীদেরকে চিকিৎসার জন্য ৬ মাস এবং অন্যান্য কারনে ৩ মাস দেয়া যাবে,তবে স্থায়ী কর্মীদের জন্য কোন সময় সীমা উল্লেখ নাই।তবে একজন সরকারি কর্মচারী যে কোন ছুটি ১ বছরের বেশি একবারে নিতে পারেন না কিন্তু চিকিৎসার বেলাতে ২ বছর নিতে পারে।তাই এটা বলা যায় যে সাধারন ভাবে মোট ১ বছর এবং চিকিৎসার বেলাতে ২ বছর পর্যন্ত দেয়া যাবে মজুরীবিহীন ছুটি।
মজুরীবিহীন ছুটি যদি অসুস্থতার জন্য হয় তবে সে দিন গুলো চাকরীকালীন সময় হিসাবে গননা করা হবে বাংলাদেশ শ্রম আইন ধারা ১৪ অনুসারে,তবে যদি অন্য কোন কারনে হয় তাহলে উক্ত দিন গুলো চাকরীকালীন দিন হিসাবে বিবেচিত হবে না।
মজুরীবিহীন ছুটিতে থাকাকালীন কর্মী মূল মজুরী ছাড়া অন্যান্য সুবিধা পাইবেন ধারা-১২৬ অনুযায়ী।
⛔ বিনা নোটিশে কোন শ্রমিক কাজে অনুপস্হিত থাকলে করনিয় কি?
কোন শ্রমিক বিনা নোটিশে অথবা বিনা অনুমতিতে ১০ দিনের বেশি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে মালিক ঐ শ্রমিককে ১০ দিনের সময় প্রদান করে এই সম্পর্কে ব্যাখ্যা প্রদান করতে এবং চাকরিতে যোগদানের জন্য নোটিশ প্রদান করবেন। উক্ত শ্রমিক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদান বা চাকরীতে যোগদান না করলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আরো ৭ দিন সময় প্রদান করবেন। তার পরেও যদি ঐ শ্রমিক চাকরীতে যোগদান অথবা আত্মপক্ষ সমর্থন না করেন তবে, উক্ত শ্রমিক অনুপস্থিতির দিন হতে চাকরি থেকে অব্যহতি গ্রহণ করেছে বলে বিবেচিত হবে।
⛔ শ্রম অাইন ২০০৬ এর ধারা ২৮ নিয়ে অালোচনা
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৮ এবং ধারা-২(১) এ অবসর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৮ অনুযায়ী কোন শ্রমিকের বয়স ৬০ হলে তিনি স্বাভাবিকভাবে অবসর গ্রহন করবেন।
আর ধারা-২(১) অনুযায়ী যদি কোন কর্মীর চাকুরীর বয়স ২৫ বছর পূর্ন হয় তবে তিনি স্বেচ্ছায় অবসরে যেতে পারবেন।
এখানে দুটি বিষয় মাথায় রাখা ভাল:
১. কর্মীর নিজের বয়স।
২. কর্মীর চাকুরীর বয়স।
চাকুরীর বয়স এবং কর্মীর বয়স নির্ধারণ করার জন্য কর্মীর নিজ সার্ভিস বুকে চুড়ান্ত প্রমান হিসাবে বিবেচনা করা হবে।
কোন কর্মী তার চাকুরী থেকে অবসর গ্রহন করলে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৮ অনুযায়ী প্রতি পূর্ন বছর কাজের জন্য এক মাসের মূল মজুরী পাইবেন।
কোন মালিক যদি মনে করেন অবসরের পরে কোন কর্মীকে নিয়োগ প্রদান করবেন সেক্ষেএে উক্ত কর্মীকে চুক্তিভিত্তিক হিসাবে নিয়োগ করতে পারবেন।
⛔কর্মীর চুড়ান্ত পাওনার নিষ্পত্তি
যেকোন কর্মী চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণের কারনে অথবা মালিক কতৃক ছাঁটাই,ডিসচার্জ,অপসারণ,বরখাস্ত অথবা শ্রমিক কতৃক অব্যাহতি গ্রহনের কারনে বা অন্য কোন কারনে যদি কোন শ্রমিকের চাকুরীর ছেদ ঘটে সেক্ষেএে কর্মীদের চুড়ান্ত পাওনার নিষ্পত্তি করতে হয়।
শ্রম আইনের ধারা-৩০ এবং ১২৩ অনুযায়ী পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে যাবতীয় পাওনাদি পরিশোধ করতে হবে।
কিন্তু শ্রম বিধিমালা-২০১৫ এর বিধি-১১২(৪) অনুযায়ী চাকুরী ছেদ ঘটিবার তারিখ হইতে পরবর্তী ৭ কর্মদিনের মধ্যে প্রাপ্য মজুরী পরিশোধের বিষয়ে বলা হয়েছে।
এছাড়া বিধি-১১২ তে আরও বলা হয়েছে যে ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য পাওনাদি চাকুরী ছেদ হইবার পরবর্তী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
কিন্তু মজুরী ৭ দিনের মধ্য দেয়ার কথা বলা হলেও বাস্তবে খুব কম প্রতিষ্ঠান আছে যারা মজুরী ৭ কর্মদিবসের পরিশোধ করে থাকে।
⛔ শ্রমিকের জন্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী সরবরাহ:
(১) যে সকল উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত শ্রমিকের দৈহিক ক্ষতি অথবা জখমের আশংকা রহিয়াছে এইরুপ স্থানে বা কাজে আইন, এই বিধিমালা বা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্দেশমত পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করিতে হইবে।
( ২) উপ-বিধি (১) এ উল্লিখিত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করিবার পাশাপাশি শ্রমিকের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে যথাযথ নিরাপত্তা উপকরন যেমন - সেইফটি স্যুজ, হেলমেট, গগলস, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, ইয়ার মাফ, ও ইয়ার প্লাগ, কোমড় বন্দ, এপ্রোন, প্রভৃতিসহ সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা উপকরন সরবরাহ ও উক্ত সামগ্রী ব্যবহারের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং ব্যবহার নিশ্চিত করিতে হইবে।
(৩) উপ-বিধি (১) ও (২) এ উল্লিখিত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত না করিয়া কোন শ্রমিককে উক্ত কাজে নিয়োজিত করা যাইবেনা এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা উপকরন সরবরাহের তথ্য ফরম-২৩ অনুযায়ী সংরক্ষন করিতে হইবে।
⛔ ধারা-১৯। মৃত্যুজনীত ক্ষতিপূরনঃ-
যদি কোন শ্রমিক কোন মালিকের অধীন অবিচ্ছিন্ন ভাবে অন্ততঃ ০২(দুই) বৎসরের অধিক কাল চাকুরীরত থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরন করেন, তাহা হইলে মালিক মৃত শ্রমিকের কোন মনোনীত ব্যক্তি মনোনীত ব্যক্তির অবর্তমানে তাহার কোন পোষ্যকে তাহার প্রত্যেক পূর্ন বৎসর বা উহার ০৬ (ছয়) মাসের অধিক সময় চাকুরীর জন্য ক্ষতিপূরন হিসাবে ৩০ (ত্রিশ) দিনের এবং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অবস্থায় অথবা কর্মকালীন দুর্ঘটনার কারনে পরবর্তীতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৪৫ (পয়তাল্লিশ) দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি, যাহা অধিক হইবে, প্রদান করিবেন, এবং এই অর্থ মৃত শ্রমিক চাকুরী হইতে অবসর গ্রহন করিলে যে অবসর জনীত সুবিধা প্রাপ্ত হইতেন, তাহার অতিরিক্ত হিসাবে প্রদেয় হইবে।
⛔ ছাঁটাইঃ-
কোন শ্রমিককে প্রয়োজন অতিরিক্ততার কারনে কোন প্রতিষ্ঠান হইতে ছাঁটাই করা যাবে।
১) কোন শ্রমিক যদি কোন মালিকের অধীনে অবিচ্ছিন্নভাবে অনুযায়ী এক বৎসর চাকুরীতে নিয়োজিত থাকেন তাহলে তাহার ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে মালিক কে
ক) তাহার ছাটাইয়ের কারন উল্লেখ করিয়া একমাসের লিখিত নোটিশ দিতে হবে,অথবা নোটিশের মেয়াদের জন্য নোটিশের পরিবর্তে মজুরী প্রদান করিতে হইবে
খ) নোটিশের একটি কপি প্রধান পরিদর্শক অথবা তৎকর্তৃক নির্ধারিত কোন কর্মকর্তার নিকট প্রেরন করিতে হইবে,এবং আরেকটি কপি প্রতিষ্ঠানের যৌথ দর কষাজষি প্রতিনিধিকে,যদি থাকে,দিতে হইবে এবং
গ) তাহাকে ক্ষতিপুরন বাবদ প্রত্যেক বৎসর চাকুরীর জন্য ত্রিশ দিনের মজুরী গ্রাচুয়ইটি যদি প্রদেয় হয়,যাহা অধিক হইবে,প্রদান করতি হইবে
(৩) উপ-ধারায় (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন,ধারা১৬(৭)এর অধীন ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে উপ-ধারা(২)(ক) এর উল্লিখিত কোন নোটিশের প্রয়োজন হইবে না,তবে ছাঁটাইকৃত উপ-ধারা(২) মোতাবেক প্রদেয় ক্ষতিপুরন বা গ্রাচুয়ইটির অতিরিক্ত হিসাবে আরো পনের দিনের মজুরী দিতে হইবে।
⛔ প্রভিডেন্ট ফান্ডে মালিকের অংশ কর্মী কখন নিয়ে যেতে পারেন:
বর্তমানে যে সকল প্রতিষ্ঠানে প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু আছে তাদের তৈরি করা একটা রেওয়াজ আছে।
যে সকল কর্মীরা প্রতিষ্ঠানে ৩ বছর সময় চাকুরী সম্পন্ন না করবেন তারা প্রভিডেন্ট ফান্ডে মালিকের অংশ পাবেন না।
কিন্তু আইন বলছে ভিন্ন বিষয়,
বাংলাদেশ শ্রম আইনের বিধি-২৬৩ অনুযায়ী যদি কোন কর্মীর চাকুরীর বয়স ২ বছর হয় বা প্রভিডেন্ট ফান্ডের সদস্য পদের মেয়াদ ১ বছর হয়।
তবে উক্ত কর্মী মালিকের অংশের সম্পূর্ণ টাকা পাবেন।
কোন কর্মী চাকুরীকালীন সময়ে মৃত্যুবরন করলে তাহার চাকুরীর মেয়াদ যাই হোক না কেন, তাহার পোষ্যগন মালিকের অংশ সম্পূর্ণ পাইবার অধিকারী হইবেন।
⛔ গ্র্যাচুয়িটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের এক মূলার নাম হল গ্র্যাচুয়িটি।
মূলা বলার কারন কি?
১। গ্র্যাচুয়িটি কোন প্রতিষ্ঠানের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।
২। গ্র্যাচুয়িটি ফান্ডের সদস্যপদ কত দিনে পাওয়া যাবে তা উল্লেখ্য না থাকা।
৩। ইহা অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হবে কিন্তু তা বাস্তবতার সাথে কোন ভাবেই মিলে না।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা ২(১০) অনুযায়ী গ্র্যাচুয়িটির সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে।
যেখানে বলা হয়েছে যে, কোন কর্মী যদি প্রতিষ্ঠানে ১ বছর বা ৬ মাসের বেশি সময় কাজ করেন তবে তিনি প্রতি বছর কাজের জন্য ৩০ দিনের মজুরী পাবেন এবং ১০ বছরের বেশি সময় কাজ করলে প্রতি বছর কাজের জন্য ৪৫ দিনের মজুরী পাবেন।
উপরের লেখাটা পড়ে আপনার মনে হতেই পারে যে ৬ মাসের বেশি কাজ করলেই আমি গ্র্যাচুয়িটি পেয়ে যাব।
বাস্তবিক জিনিটা আপনি যত সহজ ভাবছেন আইন ততটাই কঠিন করেছে বিষয়টিকে।
একটু উদাহরণ দিয়ে পরিস্কার করছি।
আপনি যদি প্রভিডেন্ট ফান্ড বিষয়ে জানেন তবে গোলোক ধাধাটা বুঝতে সহজ হবে।
আপনি যদি আয়কর অধ্যাদেশ এবং বিধিমালা পড়ে থাকেন তবে সেখানে কিছু ফান্ডের কথা বলা আছে।
১। প্রভিডেন্ট ফান্ড।
২। গ্র্যাচুয়িটি ফান্ড।
৩। বার্ধক্য ফান্ড।
প্রভিডেন্ট ফান্ডের মত গ্র্যাচুয়িটি ফান্ডেও সদস্যপদ গ্রহন করতে হয়।
কিন্তু সেটা কত দিনে, শ্রম আইনে প্রভিডেন্ট ফান্ডের সদস্যপদ পাওয়া যাবে চাকুরী বয়স ১ বছর হলে।
গ্র্যাচুয়িটি ফান্ডের সদস্যপদ কত দিনে পাবে তা আইনে নিদিষ্ট করে বলা হয় নি।
তাই অনেক প্রতিষ্ঠান ৩ বছর,কোন কোন প্রতিষ্ঠান ৫ বছর, আবার ১০ বছর সময় দিয়ে থাকে কোন কোন প্রতিষ্ঠান সদস্য পদ প্রাপ্তির জন্য।
কিছুটা বলা যায় খেয়াল খুশি মত যেহেতু আইনি কোন বাধা নাই।
অনেকেই জানতে চান যে, মূল মজুরী না, মোট মজুরী দিতে হবে গ্র্যাচুয়িটিতে।
মূল মজুরী কিভাবে?
শ্রম আইনের ২য় অধ্যায়ের অধীন কোন অর্থ প্রদেয় হলে তা মূল মজুরী অনুযায়ী হবে তা ধারা ১৪ তে বলা আছে।
তবে গ্র্যাচুয়িটির ক্ষেএে সর্বশেষ প্রাপ্ত মূল মজুরী অনুযায়ী দিতে হবে।
⛔ ধারা। ২৮। চাকরি হইতে ডিসচার্জঃ-
১। ধারা ২২ এ বর্ণিত রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক শ্রমিকের অক্ষমতার প্রত্যয়ন পত্র ফরম-১১ অনুযায়ী হইতে হইবে এবং উহার একটি কপি সংশ্লিষ্ট শ্রমিককেও সরবরাহ করিতে হইবে।
২। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রদান করা প্রত্যয়নে অথবা মালিক সন্তুষ্ট না হইলে তিনি উহা প্রাপ্তির ১০ (দশ) দিনের মধ্যে পূনরায় পরীক্ষা করিবার জন্য সরকারি মেডিকেল কলেজের অন্যুন সহকারী অধ্যাপকের পদমর্যাদা সম্পন্ন কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট পেশ করিতে পারিবেন এবং উক্ত পুনঃপরীক্ষার খরচ আবেদনকারীকে বহন করিতে হইবে।
⛔ ধারাঃ ০৪
শ্রমিকের শ্রেনীবিভাগ ও শিক্ষানবিশকাল
(কোন প্রতিষ্ঠানে সাধারনত ৭ ধরনের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়)
১. শিক্ষাধীনঃ(Apprentice) প্রশিক্ষনার্থী হিসেবে নিয়োগ করা হবে এবং প্রশিক্ষন কালে ভাতা প্রদান করা হবে।
২. বদলীঃ(Substitute) প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কোন শ্রমিকের সাময়িক অনুপস্থিত সময়ে নিয়োগ করা হয়।
৩. সাময়িকঃ(Casual) প্রতিষ্ঠানের সাময়িক কোন কাজে কিছুদিনের জন্য নিয়োগ করা হবে।
৪. অস্থায়ীঃ(Temporary) এধরনের শ্রমিক কে নিয়োগ করা হয় একান্তভাবে অস্থায়ী কোন কাজের জন্য এবং কাজটি সীমিত সময়ের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
৫. শিক্ষানবিশঃ(Probationer) কোন স্থায়ী পদে তাকে নিয়োগ করা হয়,এবং শিক্ষানবিশ বলা হয় শিক্ষানবিশকাল সমাপ্ত না হওয়ার আগ পর্যন্ত।
৬. স্থায়ীঃ(Permanent) শিক্ষানবিশকাল সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ার পর স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হয়।
* কেরানী সংক্রান্ত কাজে শিক্ষানবিসকাল হবে ৬ মাস আর অন্যান্য ক্ষেত্রে হবে ৩ মাস।
*দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে তার কাজের মান যাচাইয়ের জন্য শিক্ষানবিসকাল ৩ মাসের পরিবর্তে আরো ৩ মাস বাড়ানো যেতে পারে।তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিষয়টি চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিতে হবে।
* অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৩ মাস পরে কনফারমেশন লেটার না দেওয়া হলেও তাকে স্থায়ী বলে গন্য করা হবে।
*যদি কোন শ্রমিক শিক্ষানবিসকালে চাকুরী থেকে চলে যায়,এবং পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে একই মালিকের অধীনে চাকুরীতে আসে তাহলে পূর্ববর্তী শিক্ষানবিসকালের দিন সংখ্যা বর্তমান দিনের সাথে যোগ করতে হবে।
৭. মৌসুমীঃ(Seasonal) মৌসুমকালে কোন শ্রমিককে মৌসুম কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং মৌসুম চলা কালীন সময়ে কর্মরত থাকেন।
⛔ উৎসব ছুটির দিনে কাজ করলে কি ক্ষতিপূরন পাবেন কর্মী
কিছু মানুষ থাকে যারা চাইলেও প্রিয় মানুষের সাথে উৎসব ছুটির আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারেন না।
প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মীরা এমন একটা শ্রেণী যাদেরকে সকলের আনন্দের সময় কর্মস্থালে দায়িত্ব পালন করতে হয়।
একজন কর্মী উৎসব ছুটির দিনে কাজ করলে কি পরিমান ক্ষতিপূরন দিতে হবে। ১ দিন উৎসব ছুটির বিনিময়ে ১ দিনের বিকল্প ছুটি এবং ২ দিনের ক্ষতিপূরণমূলক মজুরী দিতে হবে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-১১৮ অনুযায়ী।
★ কত দিনের মধ্যে উক্ত ক্ষতিপূরন ছুটি দিতে হবে?
মাএ তিন দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ ছুটি দিতে হবে।
কেন তিন দিনের মধ্যে দিতে হবে?
শ্রম আইনের ধারা-১১৮ তে বলা আছে যে ধারা-১০৩ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ ছুটি দিতে হবে। যেহেতু ধারা- ১০৩ অনুযায়ী কোন পাওনা ছুটি শ্রম বিধিমালার বিধি-১০১ অনুযায়ী ছুটি পাওনা হইবার পরবর্তী ৩ দিনের মধ্যে দিতে হবে।
ছুটি না দিয়ে ওভার টাইম দিলে হবে কি না?
কথাটা শুনতে খারাপ লাগলেও বলতে হচ্ছে যে কোন সু্যোগ নাই। আপনাকে অবশ্যই ১ দিনের জন্য ১দিনের বিকল্প ছুটি দিতেই হবে এবং ২ দিনের ক্ষতিপূরণমূলক মজুরী দিতে হবে।
⛔বাৎসরিক অর্জিত ছুটির টাকা নগদায়নের নিয়ম
শ্রম আইনের ধারা-১১ তে বলা আছে যদি কোন শ্রমিকের কোন অর্জিত ছুটি অভোগকৃত থাকে, তবে উক্ত অভোগকৃত ছুটির বিপরীতে মজুরী প্রদান করিতে হবে।
এছাড়াও ২০১৫ সালের শ্রম বিধিমালার বিধি-১০৭ এ বলা আছে কর্মী চাইলে ছুটির বিনিময়ে অর্থ গ্রহন করতে পারবে।
ছুটির টাকা নগদায়নের ক্ষেএে যে সমস্যাটির সম্মুখীন অনেকে হয়ে থাকেন তা হল অভোগকৃত ছুটির মজুরী গননার নিয়ম নিয়ে।
ছুটি নগদায়নের ক্ষেএে মজুরী হিসাবের নিয়ম:
১.যে মাসে ছুটির টাকা নগদায়ন করবেন ঠিক তার আগের মাসের বোনাস ও ওভার টাইমের মজুরী ব্যতীত মোট মজুরীকে ভাগ দিতে হবে, আগের মাসের উপস্থিতির দিনগুলো দিয়ে। এরপরে যে ভাগফল পাওয়া যাবে তাকে আবার গুন করতে হবে, যে ছুটির দিনগুলো নগদায়ন করতে চায় তার মোট সংখ্যা দিয়ে।
২.যে মাসে ছুটির টাকা নগদায়ন করবেন ঠিক তার আগের মাসের বোনাস ও ওভার টাইমের মজুরী ব্যতীত মোট মজুরীকে ভাগ দিতে হবে, ৩০ দিয়ে এবং এরপর যে ভাগফল পাওয়া যাবে তাকে আবার গুন করতে হবে, যে ছুটির দিনগুলো নগদায়ন করতে চায় তার মোট সংখ্যা দিয়ে।
অনেকেই প্রায়শই জানাতে চান যে মূল মজুরী না গড় মজুরী হারে দিতে হবে। একটা বিষয় বলি গড় বা মূল মজুরী কোন বিষয় নয়।
আরও দুটি বিষয় বলি:-
১. মোট বাৎসরিক ছুটির অর্ধেকের বেশি নগদায়ন করা যাবে না।
২. প্রতিবছরে মাএ একবার নগদায়ন করা যাবে।
⛔ মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধার বিশ্লেষন
বাংলাদেশ শ্রম আইনে মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধাকে চারটি ভাগে ভাগ করেছে।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুবিধা।
২। মাতৃত্বকালীন সুবিধাবিহীন ছুটি।
৩। নোটিশের পূর্বে সন্তান জন্ম পরবর্তী মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধা।
৪। গর্ভপাত জন্য ছুটি।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুবিধা:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-৪৫ অনুযায়ী যদি কোন নারী কর্মী প্রতিষ্ঠানে সন্তান জন্মের পূর্বে ৬ মাস কাজ করেন এবং তার ২টি সন্তান জীবিত নেই।
সেক্ষেত্রে তিনি ১১২ দিনের ছুটি এবং ধারা-৪৮ অনুযায়ী ১১২ দিনের সুবিধা পাবেন কিন্তু মজুরী পাওয়ার কোন সুযোগ আর থাকছে না।
যেহেতু শ্রম আইনের ২(৩৪) ধারা সংশোধন করা হয়েছে এবং মজুরীসহ শব্দটি বাদ দেয়া হয়েছে।
২। মাতৃত্বকালীন সুবিধাবিহীন ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-৪৫ অনুযায়ী যদি কোন নারী কর্মী প্রতিষ্ঠানে সন্তান জন্মের পূর্বে ৬ মাস কাজ না করে থাকেন অথবা তার ২টি সন্তান জীবিত থাকে।
তবে তিনি মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন না কিন্তু এক্ষেত্রে তিনি কোন ছুটি পাইবার অধিকারী হইলে তাহা পাইবেন।
এক্ষেত্রে তার বৎসরিক ছুটি এবং অসুস্থতা ছুটি প্রথমে ভোগ করার পরে আর ছুটি প্রয়োজন হলে মজুরীবিহীন ছুটি পাবে।
৩। নোটিশের পূর্বে সন্তান জন্ম পরবর্তী মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধা:
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে নারী কর্মীরা মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য আবেদন করার পূর্বেই সন্তান জন্ম দান করেন।
উক্ত ক্ষেত্রে নারী কর্মী শুধুমাত্র ৫৬ দিনের ছুটি পাবেন এবং ১১২ দিনের মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন।
৪। গর্ভপাত জন্য ছুটি:
২০১৮ সালের সংশোধনীর পূর্বে কোন নারীর গর্ভপাতের জন্য কোন ছুটি বা সুবিধা পাইবার সুযোগ ছিল না কিন্তু ২০১৮ এর সংশোধনী অনুযায়ী কোন নারী কর্মীর গর্ভপাত হলে।
তিনি কোন মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন না কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার জন্য ছুটি ভোগ করতে পারবেন।
⛔ Bangladesh_Labor_Law বাংলাদেশ শ্রম আইন
ধারা_২৪ শাস্তির_পদ্ধতি
অসদাচরণ এবং দন্ড প্রাপ্তির কারণে দোষী সাব্যস্ত কোন শ্রমিককে শাস্তি দিতে হলে _
প্রথমত সেই শ্রমিকের বিরুদ্ধে written allegation বা লিখিত অভিযোগ করতে হবে এবং সেই অভিযোগের একটি কপি শ্রমিককে দিতে হবে। আর অভিযোগের উপযুক্ত জবাব দেয়ার জন্য অন্তত ৭দিন সময় দিতে হবে।
এরপর শ্রমিককে অবশ্যই শুনানীর সু্যোগ দিতে হবে।
পাশাপাশি মালিক পক্ষের এবং শ্রমিক পক্ষের সমান সদস্য দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। তদন্ত কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে শ্রমিককে দোষী সাব্যস্ত করতে হবে।
সবশেষে মালিক বা মালিক দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যাক্তি বরখাস্তের আদেশ অনুমোদন করবেন।
আরও কিছু নিয়মাবলী আলোচনা হয়েছে এই ধারাটিতে_
অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত শ্রমিককে সর্বোচ্চ ৬০ দিনের জন্য বরখাস্ত করা যাবে যদি তার বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন না থাকে। মনে রাখতে হবে সাময়িক বরখাস্তের যে কোন আদেশ লিখিত হবে এবং তা প্রদানের সাথে সাথেই কার্যকর হবে।
কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে তদন্তের সময়ে একই প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত কোন ব্যাক্তি তদন্তের কাজে সাহায্য করতে পারবে। তদন্তে যদি কোন পক্ষ মৌখিক স্বাক্ষী প্রদান করে তাহলে যার বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য দিবে সে স্বাক্ষ্যদাতাকে জেরা করতে পারবেন।
কোন শ্রমিক যদি অসদাচরণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয় অথবা ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়, আর দোষী সাব্যস্ত হবার কারণে তাকে যদি বিনা নোটিশে বা নোটিশের পরিবর্তে বিনা মজুরীতে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়, তাহলে তদন্ত চলাকালীন সময়ে তাকে যে সাময়িক বরখাস্ত রাখা হয়েছিল তার জন্য কোন মজুরী পাবেনা, তবে উক্ত সময়ের জন্য খোরাকী ভাতা পাবে। আর যদি কাউকে সাময়িক বরখাস্ত রেখে তদন্ত করার পর দোষী প্রমাণিত না হয় তাহলে সেই সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে সেই ব্যাক্তি কোম্পানিতে কর্মরত ছিল বলে গণ্য হবে এবং মজুরী পাবে। তবে খোরাকী ভাতা মজুরী থেকে কেটে রাখা হবে।
শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে শাস্তির আদেশের একটি কপি শ্রমিককে দিতে হবে। কোন শ্রমিক মালিক কর্তৃক পাঠানো চিঠি, আদেশ বা অন্য কোন কাগজ গ্রহন করতে অস্বীকার করে তাহলে সেই চিঠি বা আদেশ তাকে দেয়া হয়েছে বলে বিবেচনা করতে হবে। তবে এর জন্য সেই আদেশ বা চিঠির একটি কপি নোটিশ বোর্ডে লাগাতে হবে আর আরেকটি কপি শ্রমিকের ঠিকানায় রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে পাঠাতে হবে।
পরিশেষে বলা হচ্ছে যে, কোন শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে মালিক অবশ্যই শ্রমিকের পূর্ববর্তী রেকর্ড, যে কোন অবদান, কৃতিত্ব বিবেচনায় আনবেন।
⛔ ধারা ২৭ (৩ক) উপ-ধারা (৩) যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন শ্রমিক বিনা নোটিশে অথবা বিনা অনুমতিতে ১০ দিনের অধিক কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকিলে মালিক উক্ত শ্রমিক কে ১০ দিনের সময় প্রদান করিয়া এই সম্পর্কে ব্যাখ্যা প্রদান করিতে এবং চাকুরীতে পুনরায় যোগদানের জন্য নোটিশ প্রদান করিবেন। এবং এইরুপ ক্ষেত্রে উক্ত শ্রমিক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদান বা চাকুরীতে যোগদান না করিলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আরও ৭ দিন সময় প্রদান করিবেন। তাহাতেও যদি সংশ্লিষ্ট শ্রমিক চাকুরীতে যোগদান অথবা আত্মপক্ষ সমর্থন না করেন তবে, উক্ত শ্রমিক অনুপস্থিতির দিন হইতে চাকুরীতে ইস্তফা দিয়েছেন বলিয়া গণ্য হইবেন ।
⛔কোন কর্মী দীর্ঘ দিন নিখোঁজ থাকলে কি করবেন:
যদি কোন কর্মী ১০ দিনের বেশি সময় নিখোঁজ থাকেন তবে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৭(৩)(ক) অনুযায়ী কর্মীকে প্রথমে ১০ দিনের মধ্যে দীর্ঘ অনুপস্থির কারন ব্যাখ্যাসহ কাজে যোগদানের জন্য সময় প্রদান করে রেজিস্টার ডাক যোগে চিঠি প্রদান করতে হবে।
প্রথম ১০ দিনের মধ্যে যদি কর্মীর কোন উত্তর না পাওয়া যায়, তবে পূনরায় তাকে ৭ দিনের সময় দিয়ে রেজিস্টার ডাক যোগে চিঠি পাঠাতে হবে।
যদি উক্ত ৭ দিন পরেও কোন উত্তর না পাওয়া যায় তবে, কর্মীকে রেজিস্টার ডাক যোগে চুড়ান্ত অব্যাহতি পএ প্রদান করতে হবে।
অনেকে যে বিষয়টি বা সমস্যার কথা বলেন সেটা হল।
আরেকটা সমস্যায় পরতে হয় যেমন কর্মীকে ১ম বা ২য় পএ দেয়ার পরে এসে হাজির হন।
তখন কি করনীয় থাকে,
১। কর্মী যে ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির হবে সে ব্যাখ্যা যদি আপনার নিকট সন্তোষজনক হয় তবে কর্মীকে কাজ করতে দিতে পারেন।
২। যদি সন্তোষজনক না হয় তবে আপনি তার বিরুদ্ধে অসদাচরনমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
ইদানীং ভদ্র শ্রমিকগন একটা কাজ করেন যে মালিকের ল্যাপটপ এবং মোবাইল ফোন নিয়ে নিখোঁজ থাকেন। তাদের জন্য যে কাজটি করবেন তা হল ২৭(৩)(ক) এর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরে থানায় গিয়ে একটা জিডি করবেন এবং কোন ভাবেই মামলা করতে যাবেন না কারন মামলা করলে নানান জামেলাই পরবেন। শুধু থানায় গিয়ে বলবেন যে আমার একজন কর্মী নিখোঁজ আমি জিডি করতে চাই।চুরির কথা মুখে আনলেও কিন্ত পুলিশ জিডি নিবে না,তখন আপনাকে মামলা করতে হবে।
⛔ গর্ভবতী মহিলা শ্রমিকের প্রতি মালিক ও অন্যান্য শ্রমিকের দায়ীত্বঃ-
একজন গর্ভবতী মহিলা শ্রমিকের প্রতি মালিক ও অন্যান্য শ্রমিকের দায়ীত্ব হইবে নিম্নরুপ, যথাঃ-
(ক) এমন কোন আচরণ বা মন্তব্য না করা যাহাতে তিনি শারীরিক বা মানসিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হন বা অপমাণিত বোধ করেন;
(খ) সরকার কর্তৃক ঘোষিত ঝুকিপূর্ণ কাজে অথবা তাহার স্বাস্থ্যের প্রতি ঝুকিপূর্ণ হয় এমন কোন কাজে নিয়োজিত না করা;
(গ) ঝুকি বিহীন কাজে স্থানান্তর বা পদায়ন করা;
(ঘ) কর্মকালীন লিফট ব্যবহারে অগ্রাধিকার প্রদান করা;
(ঙ) সন্তান প্রসব উত্তর কালে তাহার শিশুর দুগ্ধপানের সুযোগ ও পরিবেশ নিশ্চিত করা।
⛔খোরাকি ভাতা (Subsistence Allowance) কি:
কোন কর্মীকে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৪ অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করা হলে উক্ত কর্মী খোরাকি ভাতার পাইবার অধিকারী হবেন।
খোরাকি ভাতার পরিমান কত হবে?
শ্রম আইনের ধারা-২(৯)(ক) অনুযায়ী খোরাকি ভাতা হবে "মূল মজুরী,মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তর্বতীকালীন মজুরী এর অর্ধেক।"
তবে বাংলাদেশে শ্রম আইনের ধারা-২৪(২) অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালীন শ্রমিক খোরাকি ভাতা পাইবেন এবং অন্যান্য ভাতা পূর্ন হারে প্রাপ্য হইবেন।
এছাড়াও যদি কোন কর্মী দোষী সাবস্ত হন তবে তিনি সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালীন সময়ের জন্য খোরাকি ভাতা ছাড়া অন্য কোন মজুরী পাইবেন না।
তবে উক্ত কর্মী যদি নিদোর্ষ প্রমানিত হন হবে তার খোরাকি ভাতা সমন্বয়সহ মজুরী প্রদেয় হইবে।
⛔ ক্ষতিপূরনমূলক ছুটির পরিবর্তে শুধু অর্থ প্রদান বৈধ কি না:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের দুটি ধারাতে ক্ষতিপূরণমূলক ছুটির বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ধারা-১০৪ এবং বিধি-১০১ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদানের কথা বলা আছে।
বিধি-১০১ অনুযায়ী একজন কর্মীকে কোন কারনে সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করা না গেলে ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করতে হবে।
এছাড়াও ধারা-১১৮ অনুযায়ী কোন কর্মীকে উৎসব ছুটির দিনে কাজ করালে দুই দিনের মজুরী এবং একদিনের ক্ষতিপূরণমূলক বিকল্প ছুটি প্রদান করতে হবে।
উপরের দুটি ধারাতেই ছুটির পরিবর্তে ছুটি এবং মজুরী দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
কোথাও ছুটির বিকল্প হিসাবে মজুরীকে বিবেচনা করা হয় নি।
উভয় ক্ষেত্রেই মজুরী এবং ছুটিকে আলাদা ভাবে দিতে বলা হয়েছে।
কিছু প্রতিষ্ঠান ছুটি প্রদান না করে,কর্মীদেরকে অতিরিক্ত মজুরী প্রদান করছে কিন্তু ছুটি প্রদান করছে না।
যাহা শ্রম আইনের ধারা-১০৪ এবং ধারা-১১৮ অনুযায়ী অবৈধ।
তবে কোন কর্মী যদি ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি ভোগ করার পূর্বে তাহার চাকুরীর অবসান হয়, তাহলে তাকে মোট মজুরীর সমান অর্থ প্রদান করলেই হবে।
কিন্তু চাকুরীতে থাকাকালীন সময়ে বিকল্প ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান বাধ্যতামূলক।
⛔ একই পরিবারভূক্ত শ্রমিকদের ছুটি একত্রে প্রদানঃ-
(১) অবস্থানুসারে যতটুকু সম্ভব, একই পরিবারভূক্ত শ্রমিক যেমন স্বামী-স্ত্রী এবং সন্তান-সন্ততিকে ধারা ১১৫ মোতাবেক ছুটি একই দিনে মঞ্জুর করিতে হইবে।
(২) কারখানার ব্যবস্থাপকের অনুমোদন সাপেক্ষে একজন শ্রমিক তাহার ছুটি অন্য শ্রমিকের সহিত বদল করিতে পারিবেন।
(৩) ধারা ১১৫, ১১৬, ও ১১৮ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বৎসর বলিতে ইংরেজি পঞ্জিকা বৎসর বুঝাইবে।
⛔ শ্রম বিধিমালা - ২০১৫
কোন প্রতিষ্ঠানে ৫০ জন বা উহার চাইতে অধিক লোক নিয়োগ করা হয় এমন প্রতিষ্ঠানের বিভাগ, শাখা,ও তলায় প্রতিটি প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্স বা আলমারিতে মহাপরিদর্শক কর্তৃক ভিন্নরুপ নির্দেশ না হওয়া পর্যন্ত নিম্নবর্ণিত সরঞ্জামাদি থাকিবে। যেমন ঃ-
(ক) ১২টি (০.৫ আউন্স) জীবাণুমুক্ত তুলার প্যাকেট;
(খ) ১২ টি মাঝারি আকারের জীবাণুমুক্ত তুলার প্যাকেট;
(গ) ১২ টি বড় আকারের জীবাণুমুক্ত তুলার প্যাকেট;
(ঘ) ২৪ টি ছোট জীবাণুমুক্ত ব্যান্ডেজ;
(ঙ) পোড়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার্য ১২টি বড় আকারের জীবাণুমুক্ত ব্যান্ডেজ;
(চ) ১২টি (৪" চওড়া) রোলার ব্যান্ডেজ;
(ছ) ১২টি (২" চওড়া) রোলার ব্যান্ডেজ;
(জ) ৬ টি ত্রিকোণাকৃতি ব্যান্ডেজ;
(ঝ) টুরনিকেট (রক্তপাত বন্ধ করিবার উপকরণ);
(ঞ) শতকরা ২ ভাগ আয়োডিনের এলকোহলিক দ্রবণ ভর্তি ১ টি বোতল (৪ আউন্স);
(ট) এক জোড়া কাচি;
(ঠ) ১টি (৪আউন্স) রেক্টিফাইড স্পিরিড ভর্তি বোতল;
(ড) ২ প্যাকেট সেইফটি পিন;
(ঢ) হাড়ভাঙ্গার ক্ষেত্রে ব্যবহার্য ১২ টি বাশের/কাঠের চটি;
(ণ) বেদনানাশক ও এণ্টাসিড বড়ি, পোলার ক্ষেত্রে ব্যবহার্য মলম এবং শল্য চিকিৎসার জীবাণুনাশক দ্রব্য;
(ত) খাবার স্যালাইন প্যাকেট ১২ টি; এবং
(থ) ১টি প্রাথমিক চিকিৎসার প্রচারপত্র।।
⛔ মহিলা শ্রমিকের জন্য সীমিত কর্মঘণ্টাঃ-
কোন মহিলা শ্রমিককে তাহার বিনা অনুমতিতে কোন
প্রতিষ্ঠানে রাত দশ ঘটিকা হইতে ভোর ছয় ঘটিকা পর্যন্ত
সময়ের মধ্যে কোন কাজ করিতে দেওয়া হইবেনা।
⛔ অফিসে বিলম্বে উপস্থিতির জন্য মজুরী কর্তন:
বাংলাদেশে একটা রেওয়াজ প্রচলিত আছে যে কোন কর্মী মাসে তিন দিন বিলম্বে অফিসে প্রবেশ করলে উক্ত কর্মীর ১ দিনের হাজিরা কর্তন করা হবে।
আপনি বিশ্বাস করেন বা নাই করেন কথা কিন্ত সত্য, এমনকি অনেক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে এমন রেওয়াজ এখনও চালু আছে।
উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মানব সম্পদ বিভাগের কর্মকতাদের কাছে আইনের ধারা জানতে চাইলে শুধু মৃধু হাসি ছাড়া আর প্রতি উত্তরে কিছুই পাওয়া যায় না।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-১২৬ অনুযায়ী একজন শ্রমিক যেটুকু সময় বিলম্বে কাজে যোগদান করবেন ঠিক উক্ত সময়ের জন্য মজুরী কর্তন করা যাবে।
একটা বিষয় নিয়ে বিব্রতকর সমস্যা সবারই হয় আর তা হল কর্তনের নিয়মটা কি হবেঃ
যেকোন কর্মীর মূল বেতনকে ৩০ দিয়ে ভাগ দিবেন এবং তারপরে অনুপস্থিতির দিন দিয়ে গুন দিবেন অথবা যদি আপনি ঘন্টার মজুরী বের করতে চান তবে ১ দিনের মূল মজুরীকে ৮ দিয়ে ভাগ করলে ১ ঘন্টার মজুরী পাওয়া যাবে।
আর একটু সহজ করার চেষ্টা করছি
দিনের মূল মজুরী (৩০০০ টাকা):-
★ ৩০০০/৩০=১ দিনের মজুরী* অনুপস্থিতির মোট দিনগুলো।
ঘন্টার মূল মজুরীঃ-
৩০০০/৩০=১ দিনের মজুরী/৮ ঘন্টা * অনুপস্থিতির মোট ঘন্টা।
বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালার বিধি-১১৫ অনুযায়ী অনুপস্থিতির জন্য যাবতীয় কর্তনের হিসাব করতে হবে
⛔ শ্রম আইনের কিছু গুরুত্বপূর্ন সংশোধনী যাহা সংবাদ মাধ্যমে পাওয়া:
এই সংশোধনী প্রস্তাবে ২টি ধারা, ৪টি উপধারা, ৮টি দফা সংযোজন করা হয়েছে; ৬টি উপধারা বিলুপ্ত করা হয়েছে এবং ৪১টি ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
১। শিশু শ্রম নিষিদ্ধকরন।
২। ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে ৩০% এর পরিবর্তে ২০% এর সমর্থন।
৩। উৎসব ভাতাকে মূল আইনে অংশ করা যা শুধু বিধিতে ছিল।
৪। উৎসব ছুটির ক্ষতিপূরণ ছুটি কমিয়ে উৎসব ছুটিতে ১ দিন কাজ করালে পূরবর্তী ৩ দিনের ক্ষতিপূরণ ছুটির পরিবর্তে ১ দিন ছুটি প্রদান এবং দুই দিনের মজুরী প্রদান করতে হবে।
৫। কর্ম ঘন্টা আহার ও বিশ্রামের সময় ব্যতীত ১০ ঘন্টার বেশি সম্প্রসারণ করা যাবে না।
৬। মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ ১০০০০০ টাকা থেকে ২০০০০০ টাকা করা হয়েছে।
৭। স্থায়ী অক্ষমতার জন্য ১২৫০০০ টাকা থেকে ২৫০০০০টাকা করা হয়েছে।
৮। যেকোন মামলা ৯০ দিন থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
৯। ধর্ম ঘটের জন্য ৫১% এর সমর্থন থাকলেই চলবে।
১০। নিরাপত্তা কর্মী,গোপন সহকারীগন সহ ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারবে।
১১। কোনও শ্রমিক সংগঠন বিদেশ থেকে অনুদান নিলে তা সরকারকে জানাতে হবে।
১২। শ্রমিক সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন ৬০ দিনের পরিবর্তে ৫৫ দিনের মধ্যে করতে হবে।
(collected).
⛔ঈদ বোনাস:
যেকোন ঈদ মানেই চাকুরীজীবীদের জন্য বিশেষ আকর্ষন হল ঈদ বোনাস।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখের পূর্বে শ্রম আইনে ঈদ বোনাসের বিষয়ে কোন বাধ্যবাধকতা ছিল না।
এছাড়াও ২০১৮ সালের সংশোধনীর মাধ্যমে উৎসব ভাতা মূল আইনের মধ্যে ২(ক) হিসাবে সংজ্ঞায়িত হয়েছে।
কিন্তু ২০১৫ সালে পাস হওয়া শ্রম বিধিমালার বিধি ১১১(৫) অনুযায়ী বোনাস বাধ্যতামূলক করা হয়।
বিধি ১১১(৫) অনুযায়ী কোন কর্মী নিরবিচ্ছিন্নভাবে ১ বছর চাকুরী পূর্ন করিয়াছেন তাহারা বছরে ২টি উৎসব ভাতা পাইবার অধিকারী হইবেন।
উৎসব ভাতার পরিমান মূল বেতনের অধিক হইবে না।
এছাড়া উক্ত উৎসব ভাতা মজুরীর অতিরিক্ত হিসাবে বিবেচিত হবে।
সংবাদপএ,সংবাদ সংস্থা, প্রশাসনিক কর্মচারী এবং প্রেস শ্রমিকের উৎসব ভাতা অন্যদের চেয়ে আলাদা।
উক্ত কর্মীদের জন্য উৎসব ভাতার পরিমান হবে পূর্ববর্তী মাসে উত্তোলনকৃত এক মাসের মূল বেতনের সমান এবং বছরে দুটি উৎসব ভাতা প্রাপ্য হবেন।
⛔ ছাটাই
1.ছাঁটাই(Retrenchment) : ধারা-20
2.কর্মচ্যৃুতি(Discharge) : ধারা-22
3.বরখাস্ত (Dismissal) : ধারা-ধারা-23
4.অপসারন (Removal) : ধারা-23 (2) ক
5.অবসান (Termination) : ধারা-26
6.পদত্যাগ (Resignation) : ধারা-27
7.অবসর গ্রহন (Retirement) : ধারা-28
8.মৃত্যু (Death) : ধারা-19
* ছাঁটাই(Retrenchment)-ধারা-20- কোন কারখানায় কাজের প্রয়োজন অপেক্ষা বেশি শ্রমিক থাকার কারনে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকুরী অবসান করাকে ছাঁটাই বলে:
শ্রম আইনে সংজ্ঞা :
অপ্রয়োজনীয়তার কারনে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকুরীর অবসান। ধারা: 2(11)
ছাঁটাই করার নিয়ম:
1) একটানা একবছর কাজ করেছেন এমন শ্রমিককে ছাঁটাই করতে হলে ছাঁটাই এর কারন উল্লেখ করে এক মাসের লিখিত নোটিশ দিতে হবে , নোটিশ না দিলে এক মাসের ( নোটিশ সময়ের) মজুরি দিতে হবে।
2) ছাঁটাই নোটিশের একটি কপি প্রধান পরিদর্শক অথবা প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তাকে দিতে হবে। এবং আরেকটি কপি কারখানায় কোন ইউনিয়ন বা সিবিএ থাকলে দিতে হবে।
ছাঁটাই নোটিশে নিম্নলিখিত তথ্যসমূহ উল্লেখ করতে হবে :- যথা-
ক)প্রতিষ্ঠানের নাম
খ) শ্রমিকের নাম, পদবী ও কার্ড নম্বর।
গ)ছাঁটাই এর কারন।
ঘ) ছাঁটাই কার্যকর হইবার তারিখ।
ঙ)মোট চাকুরীকাল
চ) শ্রমিকের প্রাপ্য: নোটিশ পে( যদি প্রযোজ্য হয়) , ক্ষতিপূরন।
ছ)অভোগকৃত বার্ষিক ছুটির মজুরি।
জ) বকেয় মজুরি, অন্যান্য ভাতা ও অধিকাল ভাতা (যদি পাওনা থাকে)
ঝ) পাওনা পরিশোধের তারিখ:
ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে সুবিধাদি বা পাওনাদি:-
* বকেয়া মজুরি ও ওভারটােইম।
*বর্তমান মাসের মজুরি ও ওভারটাইম
* অর্জিত ছুটি পাওনা থাকলে তার মজুরি।
* প্রত্যেক বৎসর চাকুরীর জন্য 30 দিনের মজুরি বা গ্রাচুইটি যেটি বেশি হবে।
*এক মাস আগে নোটিশ না দিলে( প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) এক মাসের মজুরি।
* প্রভিডেন্ট ফান্ড থাকলে প্রভিডেন্ট ফান্ড এর টাকা।
* কোন শ্রমিককে ধারা 16 (7) এর অধীন ছাঁটাই করিলে ধারা-20 এর (2) এর (ক) অনুযায়ী নোটিশ দিতে হইবে না, তবে ক্ষতিপূরণ বা গ্রাচুইটির অতিরিক্ত হিসাবে আরোও 15 দিনের মজুরী দিতে হইবে।
⛔ বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১০৯ ধারায় মহিলা শ্রমিকের জন্য সীমিত কর্মঘন্টার বিধান বর্ণনা করা হয়েছে।এই ধারা অনুযায়ী কোন মহিলা শ্রমিককে তার বিনা অনুমতিতে কোন প্রতিষ্ঠানে রাত দশ ঘটিকা হতে ভোর ছয় ঘটিকা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কোন কাজ করতে দেয়া যাবে না ।অথাৎ কোনমহিলাকে তার অনুমতি ব্যতিত কোন প্রতিষ্ঠানে নৈশ পালায় কাজ করার জন্য নিয়োজিত করা যাবে না ।
কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় বেশরভাগ কারখানা ই জোরপূর্বক মহিলা শ্রমিকদের দিয়ে দিনের পর দিন নৈশ পালায় কাজ করায়,তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে জানে ই না যে “নাইট ডিউটি” তাদের অনুমতি লাগে ।
⛔বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১০৯ ধারায় মহিলা শ্রমিকের জন্য সীমিত কর্মঘন্টার বিধান বর্ণনা করা হয়েছে।এই ধারা অনুযায়ী কোন মহিলা শ্রমিককে তার বিনা অনুমতিতে কোন প্রতিষ্ঠানে রাত দশ ঘটিকা হতে ভোর ছয় ঘটিকা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কোন কাজ করতে দেয়া যাবে না ।অথাৎ কোনমহিলাকে তার অনুমতি ব্যতিত কোন প্রতিষ্ঠানে নৈশ পালায় কাজ করার জন্য নিয়োজিত করা যাবে না ।
কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় বেশরভাগ কারখানা ই জোরপূর্বক মহিলা শ্রমিকদের দিয়ে দিনের পর দিন নৈশ পালায় কাজ করায়,তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে জানে ই না যে “নাইট ডিউটি” তাদের অনুমতি লাগে ।
⛔ কোন কর্মী দীর্ঘ দিন নিখোঁজ থাকলে কি করবেন:
যে দিন কাল যাচ্ছে বলা যায় না, যে আপনার পাশের আসনে বসে কাজ করা লোকটা কোন দিন নিখোঁজ হয়ে গিয়ে অ-কাজ কু-কাজের সাথে জড়িয়ে পরছেন।
যদি কোন কর্মী ১০ দিনের বেশি সময় নিখোঁজ থাকেন তবে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৭(৩)(ক) অনুযায়ী কর্মীকে প্রথমে ১০ দিনের মধ্যে দীর্ঘ অনুপস্থির কারন ব্যাখ্যাসহ কাজে যোগদানের জন্য সময় প্রদান করে রেজিস্টার ডাক যোগে চিঠি প্রদান করতে হবে।
প্রথম ১০ দিনের মধ্যে যদি কর্মীর কোন উত্তর না পাওয়া যায়, তবে পূনরায় তাকে ৭ দিনের সময় দিয়ে রেজিস্টার ডাক যোগে চিঠি পাঠাতে হবে।
যদি উক্ত ৭ দিন পরেও কোন উত্তর না পাওয়া যায় তবে, কর্মীকে রেজিস্টার ডাক যোগে চুড়ান্ত অব্যাহতি পএ প্রদান করতে হবে।
অনেকে যে বিষয়টি বা সমস্যার কথা বলেন সেটা হল।
উক্ত কর্মী ২ মাস পরে এসে বলেন যে আমি আমার চাকুরী নেই ঠিক আছে আমার বেতন দেন।
লক্ষ্য করেন,
যখন একজন কর্মীকে খুজে পাওয়া যায় না তখন উক্ত কর্মীর মাসিক বেতন বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৩১ ধারা অনুযায়ী শ্রম আদালতে জমা প্রদান করতে হয়। যদি আপনি টাকা আদালতে জমা দিয়ে দেন তবে শ্রমিকে বলে দিবেন শ্রম আদালতে যোগাযোগ করার জন্য এবং আপনি জামেলা মুক্ত হয়ে যাবেন।
কিন্ত যদি আপনি টাকা জমা না দেন তবে, আপনাকে শ্রম আইন অনুযায়ী যাবতীয় পাওনাদির নিষ্পত্তি করতে হবে।
আরেকটা সমস্যায় পরতে হয় যেমন কর্মীকে ১ম বা ২য় পএ দেয়ার পরে এসে হাজির হন।
তখন কি করনীয় থাকে,
১। কর্মী যে ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির হবে সে ব্যাখ্যা যদি আপনার নিকট সন্তোষজনক হয় তবে কর্মীকে কাজ করতে দিতে পারেন।
২। যদি সন্তোষজনক না হয় তবে আপনি তার বিরুদ্ধে অসদাচরন মূলক ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
ইদানীং ভদ্র শ্রমিকগন একটা কাজ করেন যে মালিকের ল্যাপটপ এবং মোবাইল ফোন নিয়ে নিখোঁজ থাকেন। তাদের জন্য যে কাজটি করবেন তা হল ২৭(৩)(ক) এর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরে থানায় গিয়ে একটা জিডি করবেন এবং কোন ভাবেই মামলা করতে যাবেন না কারন মামলা করলে নানান জামেলাই পরবেন। শুধু থানায় গিয়ে বলবেন যে আমার একজন কর্মী নিখোঁজ আমি জিডি করতে চাই।চুরির কথা মুখে আনলেও কিন্ত পুলিশ জিডি নিবে না,তখন আপনাকে মামলা করতে হবে।
⛔ফায়ার সেফটি অফিসার:
বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫ প্রকাশের পরে ফায়ার সেফটি অফিসারের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব পেতে শুরু করে কারন শ্রম বিধিমালার বিধি- ৫৫ অনুযায়ী কমপক্ষে ৫০০ জন শ্রমিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত থাকলে ১ জন ফায়ার সেফটি অফিসার নিয়োগ প্রদান বাধ্যতামূলক।
বিধি-৫৫(১২) অনুযায়ী একজন ট্রেনিং প্রাপ্ত কর্মকর্তাকে রাখিতে হইবে।
এখন প্রশ্ন হল কে হবে উক্ত ফায়ার সেফটি অফিসার।
অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ বিধিমালা ২০১৪ এর বিধি ২(১১) অনুযায়ী "ফায়ার সেফটি আফিসার" অর্থ অগ্নি প্রতিরোধ, অগ্নি নির্বাপন,উদ্ধার কার্যক্রমে অধিদপ্তর কর্তৃক স্বীকৃত কোন প্রতিষ্ঠান হইতে অন্যূন ৬ মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও অভিজ্ঞ কোন কর্মকর্তা এবং অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন।
উক্ত অফিসারের কাজ হবে সব অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জামাদির যথাযথ সংরক্ষন এবং প্রস্তুত রাখা।
এছাড়াও বিধি-৫৫(১০) অনুযায়ী গঠিত তিনটি দলকে প্রতি ৬ মাস পরপর পুনঃপ্রশিক্ষন প্রদান করা।
⛔ প্রসূতি কল্যাণ সুবিধাঃ-
(১) প্রত্যেক মহিলা শ্রমিক তাহার মালিকের নিকট হইতে তাহার সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী আট সপ্তাহ এবং সন্তান প্রসবের অব্যবহিত পরবর্তী আট সপ্তাহের জন্য প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা পাইবার অধিকারী হইবেন এবং তাহার মালিক তাহাকে এই সুবিধা প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেনঃ
তবে শর্ত থাকে যে, কোন মহিলা উক্তরূপ সুবিধা পাইবেন না যদি না তিনি তাহার মালিকের অধীন তাহার সন্তান প্রসবের অব্যবহিত পূর্বে অন্যূন ছয় মাস কাজ করিয়া থাকেন।
(২) কোন মহিলাকে উক্তরুপ সুবিধা প্রদেয় হইবে না যদি তাহার সন্তান প্রসবের সময় তাহার দুই বা ততোধিক সন্তান জীবিত থাকে, তবে এক্ষেত্রে তিনি কোন ছুটি পাইবার অধিকারী হইলে তাহা পাইবেন।
⛔শিক্ষানবিসকালে (Probation Period) কর্মী ছুটি পাবে কি না
অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে কর্মীকে শিক্ষানবিসকালে কোন প্রকার ছুটি প্রদান করা হয় না কারন হিসাবে বলা হয় যে, স্থায়ী না হলে ছুটি পাবে না।
বাংলাদেশ শ্রম আইনে শুধুমাএ দুই প্রকার ছুটি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শর্তপূরণ করতে হয়।
১। বাৎসরিক ছুটি পেতে হলে এক বছর কাজ করতে হয়।
২। মাতৃত্বকালীন ছুটি পেতে ছয় মাস কাজ করতে হয়।
বাংলাদেশ শ্রম আইনে অন্য কোন ছুটি পেতে এমন কোন শর্তপূরণ করতে হয় না।
এছাড়াও যদি কোন শ্রমিক বছরের মাঝামাঝি সময়ে চাকুরীতে যোগদান করে, তবে তাকে বিধি-১০৬ অনুযায়ী আনুপাতিক হারে ছুটি প্রদান করতে হবে।
তবে অসুস্থতা ছুটি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কর্মীকে ডাক্তারের পরামর্শ সনদ উপস্থাপন করতে হবে, অন্যথায় কর্মী উক্ত ছুটি পাইবেন না।
তাই যে সকল প্রতিষ্ঠান শিক্ষানবিসকালে ছুটি প্রদান করেন না, তারা বে-আইনী কাজে লিপ্ত আছেন।
⛔ কেন সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটির দেয়া যাবে না:
সবাই আমার কথা শুনে একটু অবাক হয়েছিলেন যে কেন সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দেয়া যাবে না।
শ্রম আইনের ১০৩ ধারাতে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে প্রত্যেক বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে দেড় দিন এবং কারখানাকে একদিন সাপ্তাহিক ছুটি দিতে হবে।
এবার আপনি খুব জ্ঞানী মানুষের মত করে যে কাজটি করেন তা হল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিয়ে দেন।খুবই ভাল আপনি শ্রমিকে ভালবেসে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিলেন।
এবার বলেন দাদা শ্রমিকে আপনি ঘোষনা করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিলেন তাহলে শ্রমিক উক্ত সপ্তাহে কোন সাপ্তাহিক ছুটি পায়নি কারন আপনিই শ্রমিকে উক্ত সপ্তাহে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিয়েছেন এবং হাজিরা খাতায় উৎসব ছুটি লিখেছেন কিন্তু সাপ্তাহিক ছুটি লিখেন নাই।
শ্রম আইনের ১০৪ ধারাতে এবং বিধিমালার ১০১ বিধিতে বলা আছে যদি কোন শ্রমিকে সাপ্তাহিক ছুটি দেয়া না হয় বা যায় তবে পরর্বতী ৩ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করতে হবে।
আমার যুক্তি খুব সাধারণ আপনি সাপ্তাহিক ছুটি দিনকে উৎসব ছুটি দিয়ে রিপপ্লেস (replace) করতে পারবেন কোথাও বলা নাই তাই আপনি শ্রমিকে যে সাপ্তাহিক ছুটি দেননি সেটি দিয়ে দেন।
তাহলে আর সমস্যা নেই কারন আপনি শুক্রবার ছাড়া উৎসব ছুটি দিতে পারে না তাহলে সাপ্তাহিক ছুটির ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেন।
অনেকে বলার চেষ্টা করবেন যে আমি শ্রমিকে শুক্রবারে বন্ধ দিয়েছে তাহলে আবার ক্ষতিপূরণ কি জন্য। দাদা শুক্রবারে বন্ধ দিয়েছে এবং হাজিরা খাতায় কিন্তু উৎসব ছুটি লিখিছেন সেখানে কিন্তু সাপ্তাহিক/উৎসব লেখা যায় না কারন একদিনে দুটি ছুটি দেয়া যাবে তা কিন্তু বলা নাই শ্রম আইনে।তবে সাপ্তাহিক ছুটি না দিলে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি দিতেই হবে তা শ্রম আইনে বলা আছে।
সরকারী প্রতিষ্ঠানের কথা টেনে লাভ নাই কারন সরকারী কর্মীরা নিজস্ব চাকুরী বিধিমালাতে চলে।
আশা করি এরপরে আর কেউ ব্যাখ্যা চেয়ে লজ্জা দিবেন না।
⛔ শ্রম আইনে অসদাচরণঃ কারণ দর্শানোর নোটিশ নিয়ে কথা
কোন শ্রমিক (বা কর্মচারী) অসদাচরণ করলে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তি প্রদানের বিধান দিয়েছে। শ্রম আইনের ২৩ ধারা অসদাচরণের উপাদান এবং ২৪ ধারা তদন্ত ও শাস্তির প্রক্রিয়া বিধৃত করেছে। এর ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া এবং প্রদত্ত শাস্তি চ্যালেঞ্জযোগ্য হতে পারে। মাননীয় শ্রম আদালতে এবং ক্ষেত্র বিশেষে মাননীয় হাই কোর্ট বিভাগে তা করা যেতে পারে।
এবার একটি কারণ-দর্শানো বা শো-কোজ নোটিশের অংশ বিশেষ আপনাদের দেখাচ্ছিঃ
“আপনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ এই যে, আপনি নিয়মিত ভাবে কারখানার সুইং মেশিনের পার্টস চুরি করে বাহিরে নিয়ে বিক্রি করেন। যাহার একাধিক প্রমাণ কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে। আপনার উক্ত আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী “অসদাচরণের” আওতায় পড়ে। যাহা শাস্তি যোগ্য অপরাধ ...”।
দেখার বিষয় এই কারণ-দর্শানো নোটিশে সমস্যা কি?
প্রথমতঃ
কবে-কোথায় কথিত চুরি সংগঠিত হয়েছে তা নোটিশে উল্লেখ নেই। কি কি পার্টস চুরি হয়েছে তা নেই। কোন মেশিনের পার্টস তাও উল্লেখ নেই।
কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে হলে তা সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট হতে হবে; যাতে করে অভিযুক্ত ব্যক্তি অভিযোগ কি তা বুঝে তার উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পান। অভিযোগ যে সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট হতে হবে- সে বিষয়ে আমাদের মাননীয় উচ্চ আদালত থেকে একাধিক মামলায় সিদ্ধান্ত রয়েছে।
অভিযোগ সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি স্বীকারোক্তি দিলেও পরে তা চ্যালেঞ্জ করতে পারেন যে জোর করে ও তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে উক্ত স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে।
আরেকটি বিষয়, কর্তৃপক্ষের কাছে কোন “প্রমাণ” থাকলে তারা তা তদন্ত কমিটির কাছে দাখিল করবেন। কারণ-দর্শানোর নোটিশে তার উল্লেখ অভিযুক্তের প্রতি এক প্রকার হুমকি এবং অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের আগেই ঘটনার বিষয়ে পক্ষপাতদুস্টভাবে দোষী সাব্যস্ত করার এবং একতরফা সিদ্ধান্তে পৌঁছার দায়ে অভিযুক্ত হতে পারে।
⛔ মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধার বিশ্লেষণ:
বাংলাদেশ শ্রম আইনে মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধাকে চারটি ভাগে ভাগ করেছে।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুবিধা।
২। মাতৃত্বকালীন সুবিধাবিহীন ছুটি।
৩। নোটিশের পূর্বে সন্তান জন্ম পরবর্তী মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধা।
৪। গর্ভপাত জন্য ছুটি।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুবিধা:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-৪৫ অনুযায়ী যদি কোন নারী কর্মী প্রতিষ্ঠানে সন্তান জন্মের পূর্বে ৬ মাস কাজ করেন এবং তার ২টি সন্তান জীবিত নেই।
সেক্ষেত্রে তিনি ১১২ দিনের মজুরীসহ ছুটি এবং ধারা-৪৮ অনুযায়ী ১১২ দিনের সুবিধা পাবেন।
২। মাতৃত্বকালীন সুবিধাবিহীন ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-৪৫ অনুযায়ী যদি কোন নারী কর্মী প্রতিষ্ঠানে সন্তান জন্মের পূর্বে ৬ মাস কাজ না করে থাকেন অথবা তার ২টি সন্তান জীবিত থাকে।
তবে তিনি মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন না কিন্তু এক্ষেত্রে তিনি কোন ছুটি পাইবার অধিকারী হইলে তাহা পাইবেন।
এক্ষেত্রে তার বৎসরিক ছুটি এবং অসুস্থতা ছুটি প্রথমে ভোগ করার পরে আর ছুটি প্রয়োজন হলে মজুরীবিহীন ছুটি পাবে।
৩। নোটিশের পূর্বে সন্তান জন্ম পরবর্তী মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধা:
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে নারী কর্মীরা মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য আবেদন করার পূর্বেই সন্তান জন্ম দান করেন।
উক্ত ক্ষেত্রে নারী কর্মী শুধুমাত্র ৫৬ দিনের ছুটি পাবেন এবং ১১২ দিনের মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন।
৪। গর্ভপাত জন্য ছুটি:
২০১৮ সালের সংশোধনীর পূর্বে কোন নারীর গর্ভপাতের জন্য কোন ছুটি বা সুবিধা পাইবার সুযোগ ছিল না কিন্তু ২০১৮ এর সংশোধনী অনুযায়ী কোন নারী কর্মীর গর্ভপাত হলে।
তিনি কোন মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন না কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার জন্য ছুটি ভোগ করতে পারবেন
⛔ অংশগ্রহণ কমিটি:
৬ জনের কম এবং ৩০ জনের অধিক হবেনা।
সাধারণ শ্রমিক সংখ্যা, কমিটির সদস্য সংখ্যা
১-১০০ জন = ৬ জন
১০১-৪০০ জন = ১০ জন
৪০১-৮০০ জন। = ১২ জন
৮০১-১৫০০ জন। = ১৪ জন
১৫০১-৩০০০ জন = ১৮ জন
৩০০১-৫০০০ জন। = ২২ জন
৫০০১-৭৫০০ জন = ২৪ জন
৭৫০১-ততোধিক = ৩০ জন
⛔ শ্রম আইন অনুসারে কিছু ছুটির হিসাব
শ্রম আইন অনুসারে কিছু ছুটির বিবরণঃ
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি।
২। সাপ্তাহিক ছুটি।
৩। নৈমেত্তিক ছুটি।
৪। অসুস্থতা ছুটি।
৫। বাৎসরিক ছুটি।
৬। উৎসব ছুটি।
৭। ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি।
৮। অস্থায়ী অক্ষমতা ছুটি।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের প্রথমে মাতৃত্বকালীন ছুটির কথা বলা আছে।
শ্রম আইনের ধারা-৪৬ অনুযায়ী একজন নারী কর্মী মোট ১৬ সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন ছুটি পাইবেন।
২। সাপ্তাহিক ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১০৩ ধারাতে সাপ্তাহিক ছুটি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
কারখানা এবং সড়ক পরিবহনের কর্মীরা এক দিন এবং দোকান,বাণিজ্যিক এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা দেড় দিন করে সাপ্তাহিক ছুটি পাবে।
৩। নৈমেত্তিক ছুটি:
ধারা-১১৫ অনুযায়ী একজন কর্মী ১০ দিন নৈমেত্তিক ছুটি পাইবার অধিকারী হইবেন।
তবে কোন কর্মী বছরের মাঝামাঝি সময়ে যোগদান করলে তিনি আনুপাতিক হারে নৈমেত্তিক ছুটি পাইবেন।
৪। অসুস্থতা ছুটি:
একজন কর্মী শ্রম আইনের ১১৬ ধারা অনুযায়ী ১৪ দিন অসুস্থতা ছুটি পাইবেন।
উক্ত ছুটি পেতে হলে একজন কর্মীকে ডাক্তারের প্রত্যয়নপএ প্রদর্শন করতে হবে।
৫। বাৎসরিক ছুটি:
কোন প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিক প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য একদিন বাৎসরিক ছুটি পাইবেন।
শ্রম আইনে একটি মাএ ছুটি যা নগদায়ন করা যায়।
৬। উৎসব ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১১৮ ধারা অনুযায়ী একজন কর্মী ১১ দিন উৎসব ছুটি পাইবেন।
প্রতি বছর ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে উক্ত ছুটির দিনগুলো নির্ধারন করতে হবে।
৭। ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি:
শ্রম আইনের দুটি ধারাতে ক্ষতিপূরন ছুটি দেয়ার কথা বলা আছে।
সাপ্তাহিক ছুটি এবং উৎসব ছুটির ক্ষেএে ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি প্রদান করতে হবে।
৮। অস্থায়ী অক্ষমতা ছুটি:
শ্রম আইনের ৫ম তফসিলে উক্ত ছুটির বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
১ বছরের বেশি কেউ উক্ত ছুটি পাইবেন না এবং পেশাগত ব্যাধির জন্য উক্ত ছুটি ২ বছরের বেশি কেউ পাবেন না।
⛔ সেফটি কমিটি গঠনের সময়সীমা:
*বিদ্যমান কারখানাসমুহের খেত্রে এ বিধিমালা কর্যকর হবার তারিখ হতে ৬(ছয়) মাসের মধ্যে
এবং
*বিধিমালা কার্যকরী হওয়ার পর স্থাপিত কারখানাসমুহের খেত্রে উৎপাদন চালু হওয়ার ৯(নয়) মাসের মধ্যে সেফটি কমিটি গঠণ করতে হবে।
সেফটি কমিটির সদস্য সংখ্যা:
*সেফটি কমিটিতে মোট সদস্য সংখ্যা ৬(ছয়) এর কম এবং ১২(বার) এর অধিক হবেনা।
মালিক এবং শ্রমিক সমসংখ্যক প্রতিনিধি থাকবে।
সাধারণ শ্রমিক সংখ্যা, কমিটির সদস্য সংখ্যা
৫০-৫০০ জন। = ৬ জন
৫০১-১০০০ জন। = ৮ জন
১০০১-৩০০০ জন। = ১০ জন
৩০০১-ততোধিক। = ১২ জন
(শ্রম বিধি-৮১)
⛔ পদত্যাগ (Resignation) বেপজার জন্য:
বেপজা নির্দেশনা অনুযায়ী শুধুমাএ স্থায়ী কর্মীদেরকে চাকুরী হতে পদত্যাগ করার জন্য নোটিশ প্রদান করতে হবে।
কোন স্থায়ী কর্মীকে চাকুরী হতে পদত্যাগের ৩০ দিনের আগাম নোটিশ অথবা ৩০ দিনের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে।
কোন অস্থায়ী কর্মীকে পদত্যাগের জন্য কোন নোটিশ বা টাকা প্রদান করতে হবে না।
শ্রম আইনের মত বেপজা নির্দেশনায় কোন সার্ভিস বেনিফিটের ব্যবস্থা নেই স্থায়ী কর্মীদের জন্য।
এছাড়াও কোন কর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চালু থাকাকালীন ৬০ দিন অতিক্রম না করলে চাকুরী হতে পদত্যাগ করতে পারবে না,যদি না মালিকের শর্ত মানে।
⛔ চুক্তিভিত্তিক(Contractual) কর্মী নিয়োগঃ
দেশের Corporate Office গুলোতে খুব বেশি জন প্রিয় শব্দ হল Contractual Employee.
সবাই প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ প্রদানে বেশ আগ্রহী থাকে কিন্তু শ্রম আইন কি বলে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৮ অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ দানের বিধান আছে।
তবে ২৮ ধারাতে সুকৌশলে একটা শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে।২৮ ধারা অনুযায়ী কোন কর্মীকে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসাবে নিয়োগ প্রদান করতে পারবেন তবে সেটা উক্ত কর্মীর অবসর গ্রহন করার পরে যদি তিনি উক্ত কাজের জন্য উপযুক্ত হন।
অথাৎ ৬০ বছরের পরে কোন কর্মীকে চুক্তিভিত্তিক হিসাবে নিয়োগ প্রদান করতে পারবেন।
আমি শ্রম আইনের ২৮ ধারা মানবো না,চুক্তি করে কর্মী নিয়োগ দিলে তা বৈধ হবে কি না?
বাংলাদেশের চুক্তি আইনটি ১৮৭২ সালের আইন।
উক্ত আইনের ২৩ ধারাতে বলা আছে:
The consideration or object of agreement is lawful; unless it is forbidden by law.
মূল বক্তব্য হল:-
আপনি কোন চুক্তি করেন তা আইনত বৈধ হতে হবে অন্যথায় উক্ত চুক্তি আইনে নিষিদ্ধ।
বিষয়টা কেমন হয়ে গেল না।
শ্রম আইনের ধারা-৫ অনুযায়ী একজন কর্মীকে নিয়োগ দিতে হলে নিয়োগপএ এবং পরিচয়পএ দেয়ার কথা বলা আছে।
কিন্তু আপনি নিয়োগপএ প্রদান না করে দিলেন চুক্তিপত্র,
কি সেই চুক্তিপএ বৈধ, না অবৈধ।
এটা বুঝতে আপনাকে আইনবিদ হতে হবে না নিশ্চয়ই।
"Contractual Employment" শব্দটা ভুলে যেতে পারেন কারন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অবৈধ ৬০ বছরের পূর্বে।
⛔বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারাঃ ০৪
শ্রমিকের শ্রেনীবিভাগ ও শিক্ষানবিশকাল
(কোন প্রতিষ্ঠানে সাধারনত ৭ ধরনের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়)
১. শিক্ষাধীনঃ(Apprentice) প্রশিক্ষনার্থী হিসেবে নিয়োগ করা হবে এবং প্রশিক্ষন কালে ভাতা প্রদান করা হবে।
২. বদলীঃ(Substitiute) প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কোন শ্রমিকের সাময়িক অনুপস্থিত সময়ে নিয়োগ করা হয়।
৩. সাময়িকঃ(Casual) প্রতিষ্ঠানের সাময়িক কোন কাজে কিছুদিনের জন্য নিয়োগ করা হবে।
৪. অস্থায়ীঃ(Temporary) এধরনের শ্রমিক কে নিয়োগ করা হয় একান্তভাবে অস্থায়ী কোন কাজের জন্য এবং কাজটি সীমিত সময়ের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
৫. শিক্ষানবিশঃ(Probationer) কোন স্থায়ী পদে তাকে নিয়োগ করা হয়,এবং শিক্ষানবিশ বলা হয় শিক্ষানবিশকাল সমাপ্ত না হওয়ার আগ পর্যন্ত।
৬. স্থায়ীঃ(Permanent) শিক্ষানবিশকাল সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ার পর স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হয়।
* কেরানী সংক্রান্ত কাজে শিক্ষানবিসকাল হবে ৬ মাস আর অন্যান্য ক্ষেত্রে হবে ৩ মাস।
*দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে তার কাজের মান যাচাইয়ের জন্য শিক্ষানবিসকাল ৩ মাসের পরিবর্তে আরো ৩ মাস বাড়ানো যেতে পারে।তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিষয়টি চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিতে হবে।
* অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৩ মাস পরে কনফারমেশন লেটার না দেওয়া হলেও তাকে স্থায়ী বলে গন্য করা হবে।
*যদি কোন শ্রমিক শিক্ষানবিসকালে চাকুরী থেকে চলে যায়,এবং পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে একই মালিকের অধীনে চাকুরীতে আসে তাহলে পূর্ববর্তী শিক্ষানবিসকালের দিন সংখ্যা বর্তমান দিনের সাথে যোগ করতে হবে।
৭. মৌসুমীঃ(Seasonal) মৌসুমকালে কোন শ্রমিককে মৌসুম কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং মৌসুম চলা কালীন সময়ে কর্মরত থাকেন।
⛔ধারাঃ১২ কাজ বন্ধ রাখা( Stoppage of work)
১. অগ্নিকান্ড,আকস্মিক বিপত্তি,যন্ত্রপাতি বিকল,বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ,মহামারী,ব্যাপক দাঙ্গা-হাঙ্গামা বা মালিকের নিয়ন্ত্রন বহির্ভুত অন্য কোন কারনে প্রয়োজন হলে মালিক যেকোন সময় তার প্রতিষ্ঠানের কোন শাখা বা শাখা সমুহ আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে পারবেন।এবং যে কারনে উক্তরুপ বন্ধের আদেশ দেওয়া হবে তা বিদ্যমান থাকা পর্যন্ত এই আদেশ বহাল রাখতে পারবেন।
২. যদি উক্তরুপ বন্ধের আদেশ কর্মসময়ের পরে দেওয়া হয়,তা হলে পরবর্তী কর্মসময় শুরু হওয়ার আগে মালিক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ঠ শাখার নোটিশ বোর্ড বা প্রকাশ্য কোন স্থানে লটকাইয়া দিয়ে বিষয়টি শ্রমিককে অবহিত করবেন।
৩. উল্লেখিত নোটিশে বন্ধ পরবর্তী কাজ কখন শুরু হবে ও কাজ পুনরায় শুরু হওয়ার কোন সময় তাকে কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে সে সম্পর্কে নির্দেশ থাকবে।
৪. যদি উক্তরুপ বন্ধ কর্মসময়ের মধ্যে সংঘটিত হয় তা হলে মালিক উপধারা ২ এর পন্থায় শ্রমিকগনকে যথাশিঘ্র অবহিত করবেন এবং নোটিশে বন্ধ পরবর্তী কাজ কখন শুরু হবে ও কাজ পুনরায় শুরু হওয়ার কোন সময় তাকে কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে সে সম্পর্কে নির্দেশ থাকবে।
৫. উক্তরুপ কাজ বন্ধের পর যে সমস্ত শ্রমিককে কর্মস্থলে অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হবে,তাদের অবস্থানের সময় ১ ঘন্টার কম হলে তারা মজুরী নাও পেতে পারে এবং অবস্থানের সময় এর অধিক হলে অবস্থান কালীন সম্পূর্ণ সময়ের জন্য মজুরী পাবেন।
৬. যদি কাজ বন্ধ এর মেয়াদ এক কর্মদিবসের চেয়ে বেশি না হয় তা হলে সংশ্লিষ্ঠ কোন শ্রমিক, উপধারা ৫ এর ক্ষেত্র ব্যতীত,কোন শ্রমিক মজুরী নাও পেতে পারে।
৭. যদি কাজ বন্ধের মেয়াদ ১ কর্মদিবসের বেশি হয় তাহলে সাময়িক বা বদলী শ্রমিক ব্যতীত সংশ্লিষ্ঠ শ্রমিককে ১ দিনের অতিরিক্ত সকল বন্ধ কর্মদিবসের জন্য মজুরী প্রদান করতে হবে।
৮. যদি কাজ বন্ধের মেয়াদ ৩ কর্মদিবশের বেশি হয় তাহলে শ্রমিকগনকে ধারাঃ১৬ (**** শীঘ্র আলোচনা করা হবে) অনুযায়ী লে অফ করা হবে।
৯. এই লে অফ কাজ বন্ধ হওয়ার ১ম দিন হতে বলবত হবে।এবং ১ম তিন দিনের জন্য প্রদত্ব কোন মজুরী সংশ্লিষ্ঠ শ্রমিককে প্রদেয় লে-অফ কালীন ক্ষতিপূরণ এর সাথে সমন্বয় করা হবে।
১০. কাজ বন্ধের কারনে যদি কোন ঠিকা হারের শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে উপধারা ৯ এর প্রয়োজনে তার পূর্ববর্তী এক মাসের গড় দৈনিক আয়কে দৈনিক মজুরী বলে গন্য করা হবে।
তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ শ্রম ও শিল্প আইন এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫
⛔ধারাঃ২৪ শাস্তির পদ্ধতি(Procedure for punishment)
১. ধারা ২৩ এর অধীনে কোন শ্রমিকের বিরুদ্ধে শাস্তির আদেশ প্রদান কিরা যাবে না,যদি
ক) তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়।
খ) অভিযোগের একটি কপি তাকে দেওয়া হয় এবং ইহার জবাব দেওয়ার জন্য অন্তত ৭ দিন সময় দেওয়া হয়।
গ)তাকে শুনানীর সময় দেওয়া হয়।
ঘ) মালিক ও শ্রমিকের সম সংখ্যক প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তের পর তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
- তবে শর্ত থাকে যে,উক্ত তদন্ত ৬০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে।
ঙ) মালিক বা ব্যবস্থাপক বরখাস্তের আদেশ অনুমোদন করেন।
২. অসদাচরনের অভিযোগে অভিযুক্ত কোন শ্রমিককে তদন্ত সাপেক্ষে সাময়িক বরখাস্ত করা যাবে,এবং যদি না বিষয়টা আদালতে বিচারাধীন থাকে,এই সময়িক বরখাস্তের মোট মেয়াদ ৬০ দিনের অধিক হবে না।
-তবে শর্ত থাকে যে,উক্তরুপ সাময়িক বরখাস্ত কালে মালিক তাকে খোরাকী ভাতা প্রদান করবেন এবং অন্যান্য ভাতা পূর্ণ ভাবে প্রাপ্য হবেন।
৩. সাময়িক বরখাস্তের কোন আদেশ লিখিতভাবে হবে এবং ইহা শ্রমিককে প্রদানের সাথে সাথে কার্যকর হবে।
৪. কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে,তার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কোন ব্যক্তি সহায়তা করতে পারবেন।
৫. যদি কোন তদন্তে কোন পক্ষ মৌখিক সাক্ষ্য প্রদান করেন তাহলে যার বিরুদ্ধে এই সাক্ষ্য প্রদান করা হবে তিনি সাক্ষীকে জেরা করতে পারবেন।
৬. যদি তদন্তে কোন শ্রমিককে দোষী পাওয়া যায়,এবং তাকে ধারা ২৩(১) এর অধীনে শাস্তি প্রদান করা হয়,তাহলে তিনি তার সাময়িক বখাস্তকালীন সময়ের জন্য কোন মজুরী পাবেন না।তবে উক্ত সময়ের জন্য তার খোরাকী ভাতা প্রাপ্য থাকবেন।
৭. যদি তদন্তেবকোন শ্রমিকের অপরাধ প্রমানিত না হয় তাহলে তিনি সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে কর্মরত ছিলেন বলে গন্য হবেন এবং ঐ সময়ের জন্য তার খোরাকী ভাতা সমন্বয় সহ মজুরী প্রদেয় হবে।
৮. শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে, শাস্তি অদেশের একটি কপি সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে দিতে হবে।
৯. যদি কোন শ্রমিক মালিক কর্তৃক প্রেরিত কোন নোটিশ,চিঠি, অভিযোগনামা,আদেশ বা অন্য কোন কাগজপত্র গ্রহন করতে অস্বীকার করেন,তাহলে উহা তাকে প্রদান করা হয়েছে বলে বুঝতে হবে যদি উহার একটি কপি নোটিশবোর্ডে প্রদর্শিত হয় এবং এরেকটি কপি মালিকের নথিপত্র হতে প্রাপ্ত শ্রমিকের ঠিকানায় রেজিষ্ট্রি ডাক যোগে প্রেরন করা হয়।
১০. কোন শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে মালিক সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের পূর্বতন নবি পত্র, অপরাধের [গুরুত্ব, চাকুরীকালীন কৃতিত্ব ও অবদান] এবং বিদ্যমান অন্য কোন বিশেষ অবস্থা বিবেচনায় আনবেন।
⛔ মজুরীসহ বাৎসরিক ছুটি শ্রমিক চাওয়ার পর মালিক প্রদান না করিলে মালিকের শাস্তি:
১১৭(৭) ধারা মূলত মালিকে শ্রমিকের বাৎসরিক মজুরীসহ ছুটি ভোগ করতে বাধা দান থেকে বিরত রাখার জন্য কারা হয়েছে।
এবার একটা ছোট গল্প দিয়ে ধারা ১১৭(৭) সম্পর্কে পরিস্কার হওয়া যাক। রাফি মামা লুঙ্গি নামক একটি কারখানায় চাকরি করেন।সে এই প্রতিষ্ঠানে ৩ বছর কাজ করে এবং ধারা ১১৭(৫) অনুযায়ী তার ৪০ দিন ছুটি বকেয়া পাওনা আছে,রাফির বন্ধুরা সবাই ঠিক করল সবাই ঈদের পরে কুয়াকাটা ঘুরতে যাবে।
যেই কথা সেই কাজ,রাফি মালিকের কাছে ১০ দিনের বাৎসরিক ছুটির জন্য আবেদন করল,মালিক তাকে জানালেন ঈদের পরে আমেরিকাতে লুঙ্গির শিপমেন্ট আছে।তাই ঈদের পারে তাকে কোন ছুটি দেয়া যাবে না।
অতএব, মালিকের ব্যবসায়িক প্রয়োজনে রাফির ছুটির আবেদন না মঞ্জুর করা হল।
এবার আসেন দেখি মালিকে ১১৭(৭) ধারায় কি শাস্তি দেয়া হবে। সকলের সুবিধার জন্য আমি ধারাটি উল্লেখ করে দিয়ে পরে বিশ্লেষণ করলে সকলের জন্য বুঝতে সুবিধা হবে।
"১১৭(৭) কোন শ্রমিক অর্জিত ছুটির জন্য দরখাস্ত করিলে যদি মালিক কোন কারনে উহা না-মঞ্জুর করেন,তাহা হইলে উক্ত না- মঞ্জুরকৃত ছুটি সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের হিসাবে উপধারা (৫) অথবা (৬) এ উল্লেখিত সীমার অতিরিক্ত পাওনা হিসাবে যুক্ত হইবে।"
★ প্রথম বিষয়ে হল, মালিক রাফির যে ১০ দিন ছুটি না মঞ্জুর করেছেন তা তার মোট বকেয়া সীমার ৫০ দিন ছুটির সাথে যোগ হবে।এটাই হল মালিকের শাস্তি ১১৭(৭) ধারা অনুযায়ী।
অথাৎ রাফি এখন মোট ৫০ টি ছুটি জমা রাখতে পারবে।
★এখন কথা হল বছরে কতবার মালিককৃত না-মঞ্জুরীকৃত বাৎসরিক ছুটি শ্রমিকের ছুটি হিসাবের সাথে যোগ হবে?
উত্তরটা হল মালিক যতবার বাৎসরিক ছুটি না-মঞ্জুর করবেন ততবার ধারা ১১৭(৫)অথবা(৬) ধারাতে বকেয়া ছুটি হিসাবে যোগ হবে।
★ এই ছুটি নগদায়ন করা যাবে কি না?
নগদায়ন করতে কোন বাধা নেই কারন শ্রম আইনের ধারা ১১ ও বিধি-১০৭ তে বলা আছে।
⛔ সাপ্তাহিক ছুটির আগে ও পরে কর্মী অনুপস্থিত থাকলে সাপ্তাহিক ছুটি পাবে কি না?
উত্তরটা হল ১০০% পাবে।
কারনটা কি?
প্রথমে বুঝতে হবে অনুপস্থিতি কি?
শর্ত হল প্রতিষ্ঠান খোলা থাকতে হবে,প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে অনুপস্থির প্রশ্ন কিভাবে আসে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-১২৬ এ বলা আছে নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী কোন ব্যক্তি কাজে উপস্থিত থাকার কথা কিন্তু তিনি উক্ত সময়ে কাজে না থাকলে,
তাকে বলা হবে অনুপস্থিতি।
আপনারা যখন কোন কর্মীকে নিয়োগপএ প্রদান করেন তখন তার নিয়োগপএে লিখে দেন তার অফিস কোন সময়ে থেকে কোন সময় পর্যন্ত।
তিনি সাপ্তাহিক ছুটি কোন দিন ভোগ করবেন তাও লেখা থাকে।
এবার আসেন ধারা-১১১ তে যেখানে কোন মালিক শ্রম পরিদর্শকের কাছ থেকে কাজের সময়ের অনুমোদন নিয়ে আসেন সেখানে নিদিষ্ট ভাবে বলা থাকে কোন দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে।
এখন দেখেন,
যেখানে মালিক নিজে দুটি জায়গাতে ঘোষনা দিয়ে রাখছে যে কোন দিনটি সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে।
ঠিক তার আগে ও পরের দিনটি অনুপস্থিত থাকলে কিভাবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনটি অনুপস্থিত দেখান যায়।
তাহলে যে দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে,তার আগের দিন যারা অনুপস্থিত থাকবে তারা সাপ্তাহিক ছুটি পেতে হলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আফিসে এসে দারোয়ানের সাথে কোলাকুলি করে যাবে।
আর রবিবারে এসে বলবে স্যার আমি বৃহ:পতি বার আসি নাই।
শুক্রবার কোলাকুলি করেছি দারোয়ানের সাথে।
শনিবার আসি নাই।
আজকে রবিবার আসছি।
আমি সাপ্তাহিক ছুটি পাব।
এক শ্রেনির লোক আছে যারা বিধি-১০৬ এর কথা বলেন।
বিধি-১০৬ অনুযায়ী আগে ও পরে ছুটির কথা বলা আছে অনুপস্থির জন্য কিছু বলা নাই।
যে দিন একটা প্রতিষ্ঠানের কর্ম দিবস থাকে না, সেই দিনটিকে কিভাবে অনুপস্থিত হিসাবে গন্য করেন।
ভেবেছেন কখন?
আগে নিজেদের ঠিক করেন পরে অন্যের দোষ দেন।
⛔ চাকুরীর বয়স গননার নিয়ম:
কোন কর্মীকে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২য় অধ্যায় অনুযায়ী কোন ক্ষতিপূরণ বা সুবিধা প্রদানের ক্ষেএে উক্ত কর্মীর চাকুরীর বয়স গননা করা একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়।
চাকুরীর বয়স গননার ক্ষেএে কিছু ভুল ধারনা আছে।
অনেকের ভুল ধারনা বাস্তবে ২৪০ দিন উপস্থিত থাকলেই তা ১ বছর হিসাবে গননা করা হবে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-১৪(১) এ বলা আছে
"কোন শ্রমিক কোন প্রতিষ্ঠানে পূর্ববর্তী (১২) বার পজ্ঞিকা মাসে বাস্তবে অন্তত ২৪০ দিন বা ১২০ দিন কাজ করিয়া থাকেন,তা হলে তিনি যথাক্রমে ১ বছর বা ৬ মাস প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করিয়াছেন বলিয়া গন্য হবে"
এখানে দুটি শর্ত লক্ষ্য করতে হবে,
১। পূর্ববর্তী ১২ পজ্ঞিকা মাসে।
২। বাস্তবে অন্তত ২৪০ দিন কাজ করিয়া থাকেন।
দিপ্তি XYZ কোম্পানিতে ৪ বছর ১১ মাস ২৫ দিন কাজ করেন।তারপরে তিনি ব্যক্তিগত কারন দেখিয়ে চাকুরী থেকে পদত্যাগ করে।
এখন প্রশ্ন হল ধারা ১৪ অনুযায়ী দিপ্তির চাকুরীর বয়স ৫ বছর হবে কি না?
উত্তর হল না।
কারন ধারা-১৪(১) অনুযায়ী দুটি শর্ত পূরন হতে হবে।
১। পূর্ববর্তী ১২ পজ্ঞিকা মাসে।
২। বাস্তবে অন্তত ২৪০ দিন কাজ করিয়া থাকেন।
দিপ্তির ক্ষেএে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল।তিনি ২য় শর্তটি পূরন করেছে ২৪০ দিনে উপস্থিত ছিলেন কিন্তু যে দিনে চাকুরী ছাড়ছেন।
তার ১২ পজ্ঞিকা মাস পূর্ন হয়নি।
অনেকে ভুল ধরতে চেষ্টা করবেন কিন্তু লক্ষ্য করুন যোগদানের তারিখ থেকে যোগদানের তারিখ ১২ পজ্ঞিকা মাস হিসাব করে তার মধ্যে ২৪০ দিন কাজের দিন হিসাব করুন।
তবে আর আমার কথাগুলো ভুল মনে হবে না।
অনেকের কাছে মনে হবে ৬ মাসের বেশি কাজ করলে এক বছর বিবেচনা করতে হবে, আইনে বলা আছে।
হ্যা,শুধুমাএ তা ধারা-১৯ এবং ২(১০) এর ক্ষেএে অন্য কোন ক্ষেএে না।
আর বাস্তবিক কাজের দিনের জন্য ধারা-১৪(২) এ উল্লেখিত দিনগুলোকে গননায় আনতে হবে।
⛔ ধারাঃ ০৪ - শ্রমিকের শ্রেনীবিভাগ ও শিক্ষানবিশকাল
(কোন প্রতিষ্ঠানে সাধারনত ৭ ধরনের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়)
১. শিক্ষাধীনঃ(Apprentice) প্রশিক্ষনার্থী হিসেবে নিয়োগ করা হবে এবং প্রশিক্ষন কালে ভাতা প্রদান করা হবে।
২. বদলীঃ(Substitiute) প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কোন শ্রমিকের সাময়িক অনুপস্থিত সময়ে নিয়োগ করা হয়।
৩. সাময়িকঃ(Casual) প্রতিষ্ঠানের সাময়িক কোন কাজে কিছুদিনের জন্য নিয়োগ করা হবে।
৪. অস্থায়ীঃ(Temporary) এধরনের শ্রমিক কে নিয়োগ করা হয় একান্তভাবে অস্থায়ী কোন কাজের জন্য এবং কাজটি সীমিত সময়ের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
৫. শিক্ষানবিশঃ(Probationer) কোন স্থায়ী পদে তাকে নিয়োগ করা হয়,এবং শিক্ষানবিশ বলা হয় শিক্ষানবিশকাল সমাপ্ত না হওয়ার আগ পর্যন্ত।
৬. স্থায়ীঃ(Permanent) শিক্ষানবিশকাল সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ার পর স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হয়।
* কেরানী সংক্রান্ত কাজে শিক্ষানবিসকাল হবে ৬ মাস আর অন্যান্য ক্ষেত্রে হবে ৩ মাস।
*দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে তার কাজের মান যাচাইয়ের জন্য শিক্ষানবিসকাল ৩ মাসের পরিবর্তে আরো ৩ মাস বাড়ানো যেতে পারে।তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিষয়টি চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিতে হবে।
* অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৩ মাস পরে কনফারমেশন লেটার না দেওয়া হলেও তাকে স্থায়ী বলে গন্য করা হবে।
*যদি কোন শ্রমিক শিক্ষানবিসকালে চাকুরী থেকে চলে যায়,এবং পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে একই মালিকের অধীনে চাকুরীতে আসে তাহলে পূর্ববর্তী শিক্ষানবিসকালের দিন সংখ্যা বর্তমান দিনের সাথে যোগ করতে হবে।
৭. মৌসুমীঃ(Seasonal) মৌসুমকালে কোন শ্রমিককে মৌসুম কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং মৌসুম চলা কালীন সময়ে কর্মরত থাকেন।
⛔ কোন কর্মী কি তদন্ত কমিটিতে তার সহায়তার জন্য আইনজীবিকে নিয়ে আসতে পারবে কি না :
আমি নিশ্চিত যে ৯৯.৯৯% বলবেন যে পারবে না কিন্তু আসল কথা হল পারবে।
কিভাবে এবং কোন ধারা বলে পারবে এটা হল প্রশ্ন।
পারবেন ধারা ২৪(৪) অনুযায়ী, এবার আসেন ধারাটাতে কি লেখা আছে
"২৪(৪) কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে, তাহার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত (কোন ব্যক্তি সাহায্য করিতে পারিবেন) এবং (কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে)তৎকতৃক মনোনীত কোন ব্যক্তি সাহায্য করিতে পারিবেন।
আপনারা লক্ষ্য করেন যে আমি ধারা ২৪(৪) কে একটু আলাদাভাবে লিখেছি আমার ব্যাখ্যা করার সুবিধার জন্য। যারা সাধারনভাবে ধারাটি পড়বেন তারা লক্ষ্য করেন।
এই ধারাতে " এবং " একটা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
ধারা ২৪(৪) এ দুটি বাক্য আছে যা "এবং" দিয়ে কৌশালে বলা হয়েছে যাতে আম জনতা বুঝতে না পারে। আমি যেভাবে লিখেছি আশা করি আপনারা বুঝতে পারবেন।
এছাড়াও কতজন লোককে কর্মী নিয়ে আসতে পারবে তদন্ত কমিটিতে সেটার কোন সংখ্যা বলা নাই তাই যত ইচ্ছা তত।
অনেকে এই লেখা পাড়ার পরে তদন্ত কমিটির সদস্যের সাথে সাহায্যকারীকে মিলাবেন না যেন কারন দুটি দুই জিনিস।
আর যারা English এর Compound Sentence এবং বাংলায় মিশ্র বাক্য ভাল ভাবে জানেন তারা "এবং" এর ব্যবহারটা ভাল ভাবে বুঝতে পারবেন।জেনে
⛔ওভার টাইম নীতি ও ওভার টাইম নির্নয়ের সুত্র
ওভার টাইম নীতি:
ওভার টাইম নীতি ও ওভার টাইম নির্নয়ের সুত্র – ইন্ডাঃ(প্রাঃ) লিঃ কর্তৃপক্ষ এই মর্মে ঘোষনা করছে যে, প্রচলিত শ্রম ও শিল্প কারখানা আইন ২০০৬, আর্ন্তজাতিক শ্রম আইন, আই,এল,ও এবং আর্ন্তজাতিক খ্যাতিমান ক্রেতা ও নিরিক্ষাকারী সংস্থা সমূহের নির্দেশিত আচরন বিধিমালা অনুযায়ী অত্র প্রতিষ্ঠানে কোন শিশু শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয় না। এবং অত্র প্রতিষ্ঠান উক্ত শিশু শ্রম সমর্থনও করে না।দেশের প্রচলিত আইন, আন্তজার্তিক শ্রমিক আইন অনুসারে অতিরিক্ত সময় নির্ধারণ এবং অতিরিক্ত সময়ের মজুরী প্রদান করে থাকে।
১। ওভারটাইম কাজ পুরোপুরিভাবেই কর্মীদের স্বেচ্ছাধীন।
২। কর্মীদের যে কোন সময় ওভারটাইম প্রত্যাখ্যান করার অধিকার আছে।
৩। আমরা ওভারটাইম সময়কে নিন্মোক্ত গন্ডির মধ্যে সীামত রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব:
ক) ওভারটাইম সহ দৈনিক কার্যঘন্টা হবে সর্বোচ্চ ১০ ঘন্টা।
খ) ওভারটাইম সহ সাপ্তাহিক কার্যঘন্টা হবে সর্বোচ্চ ৬০ ঘন্টা।
৪। আমরা নিশ্চিত করব যে, সকল কর্মী ওভারটাইম ডিউটি করার আগে স্ব -প্রণোদিত হয়ে একটি ওভারটাইম বিবৃতিতে স্বাক্ষর করবেন।
৫। কোন আকস্মিক এবং অনিবার্য কারণে সপ্তাহে ৬০ ঘন্টার বেশী ওভারটাইমের প্রয়োজন দেখা দিলে এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সংগে কর্মীদের সহযোগীতার মনোভাবকে ইতিবাচক ভাবে মূল্যায়ন করা হবে।
৬। ওভারটাইমের সকল পাওনা বেসিকের দ্বিগুন হিসাবে পরিশোধ করা হবে।
ওভারটাইম নির্নয় পদ্ধিতি : মূল বেতনের হারের দ্বিগুন।
মূল বেতন ওভার টাইম নির্নয়ের সুত্র : ————— X ২ = ঘন্টা প্রতি ওভার টাইমের হার। ২০৮
উদাহরন : একজন ব্যক্তির মোট বেতন ৮০০০ টাকা হলে তার ঘন্টা প্রতি ওভার টাইমের হার হবে নিম্নরুপ (৮০০০ – ১৮৫০) ÷ ১.৫ ওভার টাইম —————-- -–––-–—X ২ = ২০৮
টাকা (ঘন্টা প্রতি ওভার টাইমের হার। )
⛔ ধারাঃ৩৩ অভিযোগ পদ্ধতি (Section:33 Procedure of making complaint Procedure)
১. লে-অফ, ছাঁটাই,ডিসচার্জ,বরখাস্ত,অপসারন বা অন্য কোন কারনে চাকুরীর অবসান হয়েছে এবং শ্রমিকসহ যে কোন শ্রমিকের,এই অধ্যায়ের অধীন কোন বিষয় সম্পর্কে যদি কোন অভিযোগ থাকে এবং যদি তিনি তা সম্পর্কে এই ধারার অধীন প্রতিকার পেতে ইচ্ছুক হন তাহলে তিনি, অভিযোগের কারন অবহিত হওয়ার তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগটি লিখিত আকারে রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে মালিকের নিকট প্রেরন করবেন।
-তবে শর্ত থাকে যে,যদি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি সরাসরি গ্রহন করে লিখিতভাবে প্রাপ্তি স্বীকার করেন,সে ক্ষেত্রে উক্ত অভিযোগটি রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে না পাঠালেও চলবে।
২. মালিক অভিযোগ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ সম্পর্কে তদন্ত করবেন এবং সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে শুনানীর সুযোগ দিয়ে তা সম্পর্কে তার সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে জানাবেন।
৩. যদি মালিক উপধারা (২) এর অধীন সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হন অথবা সংশ্লিষ্ট শ্রমিক উক্তরুপ সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হন,তাহলে উপধারা(২) এ উল্লেখিত সময় অতিক্রান্ত হওয়ার তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে অথবা ক্ষেত্রমত, মালিকের সিদ্ধান্তের তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে শ্রম আদালতে লিখিতভাবে অভিযোগ পেশ করতে পারবেন।
৪. শ্রম আদালত অভিযোগ প্রাপ্তির পর উভয় পক্ষকে নোটিশ প্রদান করে অভিযোগটি সম্পর্কে তাদের বক্তব্য শ্রবণ করবেন। এবং উহার বিবেচনায় মামলার অবস্থাধীনে যেরুপ আদেশ দেওয়া ন্যায়সংগত সেরুপ আদেশ প্রদান করবেন।
৫. উপধারা(৪) এর অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ দ্বারা আদালত,অন্যান্য প্রতিকারের মধ্যে, অভিযোগকারীকে, বকেয়া মজুরীসহ বা ভাড়া ছাড়া
,তার চাকুরীতে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দিতে পারবে এবং কোন বরখাস্ত, অপসারন বা ডিসচার্জ এর আদেশকে ধারা ২৩(২) এ উল্লেখিত কোন লঘু দন্ডে পরিবর্তিত করতে পারবে।
৬. শ্রম আদালতের কোন আদেশ দ্বারা সংক্ষুদ্ধ কোন ব্যাক্তি আদেশের ৩০ দিনের মধ্যে ট্রাইবুনালের নিকট আপীল দায়ের করতে পারবেন,এবং এই আপীলের উপড় উহার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।
৭. এই ধারার অধীন কোন আভিযোগ বা আপীল দায়েরের জন্য কোন কোর্ট ফিস প্রদেয় হবে না।
৮.এই ধারার অধীন কোন অভিযোগ এই আইনের অধীন কোন ফৌজদারি অভিযোগ বলে গন্য হবে না।
৯. এই ধারায় যা কিছুই থাকুক না কেন,ধারা ২৬ এর অধীন প্রদত্ত চাকুরীর আদেশের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করা যাবে না,যদি না অবসানের আদেশটি সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের ট্রেড ইউনিয়ন কর্মকান্ডের কারনে অথবা উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে প্রদত্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয় অথবা যদি না তিনি উক্ত ধারার অধীন প্রাপ্য সুবিধা হতে বঞ্চিত হন।
⛔ ছাঁটাই : কাজের অতিরিক্ততার কারণে মালিক কর্তৃক শ্রমীকের চাকুরীর অবসান।
ছাঁটাইয়ের সুবিধা :
ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করা হলে যে দিন শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করা হয়েছে তার পরবর্তী ত্রিশ কর্মদিবসের মধ্যে নিন্মুক্ত পাওনা পরিশোধ করিতে হইবে।
১. বকেয়া মজুরী, ওভারটাইম ও অন্যান্যভাতা।
২. অভোগকৃত বাৎসরিক ছুটির মজুরী।
৩. শ্রমিক যতিদিন কাজ করেছে তার প্রতি পূর্ণ বছরের জন্য ৩০ দিনের মজুরী হারে খিতপূরন অথবা গ্রাচুইটি থাকলে এর মধ্যে যেটি বেশি হবে সেটি।
৪. ছাঁটাইয়ের এক মাস পূর্বে যদি নোটিশ না দিয়ে থাকে তাহলে এক মাসের মজুরী।
৫. প্রবিডেন্ট ফান্ডের বিধান থাকলে প্রবিডেন্ট ফান্ডের টাকা।
⛔ ধারাঃ২৫ জরিমানা সম্পর্কে বিশেষ বিধান (Section:25 Special provision relating to fine)
১. কোন মজুরী মেয়াদে প্রদেয় মজুরীর এক দশমাংশের অধিক পরিমান অর্থ কোন শ্রমিককে জরিমানা করা যাবে না।
২. পনের বছরের কম বয়স্ক কোন শ্রমিকের উপর জরিমানা আরোপ করা যাবে না।
৩. কোন শ্রমিকের উপর আরোপিত জরিমানা কিস্তি ভিত্তিতে বা উহা আরোপের তারিখ হতে ৬০ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর আদায় করা যাবে না।
৪. কোন জরিমানা,যে অপরাধের জন্য আরোপিত হয়েছে সে আপরাধ সংঘটনের তারিখেই উহা আরোপিত হয়েছে বলে গন্য হবে।
৫. সকল জরিমানা এবং উহার আদায় বিধি দ্বারা নির্ধারিত একটি রেজিস্টারে মালিক কর্তৃক লিপিবদ্ধ করা হবে এবং আদায়কৃত জরিমানা কেবলমাত্র প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শ্রমিকগনের কল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা যাবে।
⛔ শিক্ষানবিস কাল:
শিক্ষানবিস কাল নিয়ে সবার মাঝে ব্যাপক ভুল ধারনা আছে যেমন অনেকে প্রথমে শিক্ষানবিস কাল হিসাবে ৬ মাস দেয়ার পারে সেটা আবার ৩ মাস বৃদ্ধি করেন ইত্যাদি ইত্যাদি।
আসলে কি বলা আছে আইনে
কেরানি ধরনের কাজ যারা করেন তাদের শিক্ষানবিসকাল হবে ৬ মাস। এবার কেরানি নিয়ে আলোচনা করা যাক যে কেরানি কে?
আমরা যারা টেবিলে বসে কাজ করি তাদের কাজেকে কেরানির কাজ বলে। আমার একটা সাধারন উদাহরণ দিয়ে বলার চেষ্টা করলাম এটার আরও অনেক বিষয় আছে কিন্ত তা নিয়ে আলোচনা করলে বিষয়টা জটিল হয়ে যাবে।
যাই হোক, যেকোন কেরানি ধরনের কাজের জন্য শিক্ষানবিস কাল ৬ মাস এবং ইহা কোন অবস্থায় এই ধরনের কর্মীর শিক্ষানবিস কাল আর বৃদ্ধি করা যাবে না।
কেরানি ধরনের কর্মী ব্যতীত অন্য সকল কর্মীদের শিক্ষানবিস কাল হবে ৩ মাস এবং যদি নিয়োগকারী কর্মী অদক্ষ হয় তার শিক্ষানবিস কাল আর বৃদ্ধি করা যাবে না। কিন্ত যদি নিয়োগকারী কর্মীর নিয়োগপএে উল্লেখিত কাজে যদি পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকে তবে শিক্ষানবিস কাল ৩ মাস থেকে বৃদ্ধি করে ৬ মাস করা যাবে কিন্ত ৬ মাসকে কোন ভাবে ৯ মাস করা যাবে না।
অনেকে এই ভুলটি করেন যে শিক্ষানবিস কাল ৬ মাস থেকে ৯ মাস করে থাকেন। কিন্ত আপনি যেকোন ধরনের কর্মীই নিয়োগ করেন না কেন, কোন অবস্থাতেই শিক্ষানবিস কাল ৬ মাসের বেশি হবে না।
৬ মাসে মধ্যে যদি কর্মীর কাজের মান ভাল না হয় তবে আপনি তাকে শুভ বিদায় দিয়ে দিতে পারেন কিন্ত ৬ মাসের পরে একদিন বেশি হলেও সে স্থায়ী কর্মী হিসাবে বিবেচিত হবে আইন অনুযায়ী তাকে আপনি স্থায়ীকরন পএ দেন বা না দেন তাতে কিছু আসে যায় না।
⛔ Disciplinary Action Procedure:
1. প্রথমে মৌখিকভাবে সতর্ক করে দেয়া যে কাজ সে করছে সেটা ভালো নয় এটা তাকে বুঝিয়ে দেয়া ! এটা একটা রেজিস্টার খাতায় লিপিবদ্ধ করে তার সই নেয়া !
2. লিখিতভাবে নোটিশ করে সতর্ক করে দেয়া !
3. লিখিতভাবে কারণ দর্শানো নোটিশ করা এবং
জবাব সন্তোষজনক হলে লিখিতভাবে সতর্ক করে দেয়া !
4. অপরাধ মারাত্মক হলে কিংবা গুরুতর হলে
লিখিতভাবে কারণ দর্শানো নোটিশসহ সাময়িকভাবে থেকে বরখাস্ত করা এবং জবাব যুক্তিসংগত ও সন্তোষজনক হলে লিখিতভাবে সতর্ক করে দেয়া !
5. জবাব সন্তোষজনক না হলে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা এবং লিখিতভাবে তদন্তের নোটিশ করা !
6. তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর অপরাধ প্রমানিত না হলে
লিখিতভাবে সতর্ক করে দিয়ে কাজে যোগদানের অনুমুতি দেয়া ! আর অপরাধ প্রমানিত হলে লিখিতভাবে নোটিসের মাধ্যমে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা !
⛔ধারাঃ২৩ অসদাচরন এবং দন্ড-প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শাস্তি। (Punishment for misconduct and conviction)
১. এই আইনে লে-অফ, ছাঁটাই, ডিসচার্জ, এবং চাকুরীর অবসান সম্পর্কে অন্যত্র যা কিছু বলা হোক না কেন,কোন শ্রমিককে বিনা নোটিশে বা নোটিশের পরিবর্তে বিনা মজুরীতে চাকুরী হতে বরখাস্ত করা যাবে,যদি তিনি
ক) কোন ফৌজদারী অপরাধের জন্য দন্ড প্রাপ্ত হন।
খ) ধারাঃ২৪ এর অধীনে দোষী সব্যস্ত হন।
২. অসদাচরনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত কোন শ্রমিককে উপধারা (১) এর অধীন চাকুরী হতে বরখাস্তের পরিবর্তে,বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে, নিম্ন লিখিত কোন শাস্তি প্রদান করা যাবেঃ-
ক) অপসারন
খ) নীচের কোন পদে, গ্রেডে বা বেতন স্কেলে অনধিক ১ বছর পর্যন্ত আনয়ন।
গ) অনধিক ১ বছরের জন্য পদোন্নতি বন্ধ।
ঘ) অনধিক ১ বছরের জন্য মজুরী বৃদ্ধি বন্ধ।
ঙ) জরিমানা
চ) অনধিক ৭ দিন পর্যন্ত বিনা মজুরীতে বা বিনা খোরাকীতে সাময়িক বরখাস্ত।
ছ) ভতসনা ও সতর্কীকরন।
৩. উপধারা ২ (ক) এর অধীন অপসারিত কোন শ্রমিককে, যদি তার অবিচ্ছিন্ন চাকুরীর মেয়াদ অন্যুন ১ বছর হয়,মালিক ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রত্যেক সম্পূর্ণ চাকুরী বছরের জন্য ১৫ দিনের মজুরী প্রদান করবেন।
তবে শর্ত থাকে যে,কোন শ্রমিক উপধারা ৪ (খ) ও (ছ) এর অধীন অসদাচরনের জন্য বরখাস্ত করা হলে তিনি কোন ক্ষতিপূরন পাবেন না।তবে এরুপ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক তার অন্যান্য আইনানুগ পাওনাদি যথা নিয়মে পাবেন।
৪. নিম্ন লিখিত কাজ অসদাচরণ বলে গন্য হবেঃ-
ক) উপরস্থের কোন আইনসংগত বা যুক্তিসংগত আদেশ মানার ক্ষেত্রে এককভাবে বা অন্যের সংগে সংঘবদ্ধ হয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্যতা।
খ) মালিকের ব্যবসা বা সম্পত্তি সম্পর্কে চুরি, (আত্নসাৎ), প্রতারনা বা অসাধুতা।
গ) মালিকের আধীনে তাঁহার বা অন্য কোন শ্রমিকের চাকুরী সংক্রান্ত ব্যাপারে ঘুষ গ্রহন বা প্রদান।
ঘ) বিনা ছুটিতে অভ্যাসগত অনুপস্থিতি বা ছুটি না নিয়ে একসংগে ১০ দিনের বেশি সময় অনুপস্থিতি।
ঙ) অভ্যাসগত বিলম্বে উপস্থিতি।
চ) প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য কোন আইন,বিধি প্রবিধানের অভ্যাসগত লংঘন।
ছ) প্রতিষ্ঠানে উচ্ছৃংখলতা, দাংগা-হাংগামা,অগ্নিসংযোগ বা ভাংচুর।
জ) কাজে কর্মে অভ্যাসগত গাফিলতি।
ঝ) প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত চাকুরী সংক্রান্ত শৃঙ্খলা, আচরনসহ যে কোন বিধির অভ্যাসগত লংঘন।
ঞ) মালিকের অফিসিয়াল রেকর্ডের রদবদল,জালকরন,অন্যায় পরিবর্তন, উহার ক্ষতিকরন বা উহা হারিয়ে ফেলা।
৫. উপধারা ১(ক) এর অধীন বরখাস্তকৃত কোন শ্রমিক যদি আপীলে খালাশ পান,তাহলে তাকে পূর্বতন পদে বহাল করতে হবে,অথবা নতুন কোন উপযুক্ত পদে তাকে নিয়োগ করতে হবে।এবং ইহার কোনটিই যদি সম্ভব না হয়, তাহলে তাকে ডিসচার্জকৃত কোন শ্রমিককে প্রদেয় ক্ষতিপূরণের সমান হারে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।তবে বরখাস্ত হওয়ার কারনে ইতোমধ্যে প্রাপ্ত ক্ষতিপূরণের টাকা ইহা হতে বাদ যাবে।
⛔ কেন সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটির দেয়া যাবে না:
সবাই আমার কথা শুনে একটু অবাক হয়েছিলেন যে কেন সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দেয়া যাবে না।
শ্রম আইনের ১০৩ ধারাতে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে প্রত্যেক বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে দেড় দিন এবং কারখানাকে একদিন সাপ্তাহিক ছুটি দিতে হবে।
এবার আপনি খুব জ্ঞানী মানুষের মত করে যে কাজটি করেন তা হল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিয়ে দেন।খুবই ভাল আপনি শ্রমিকে ভালবেসে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিলেন।
এবার বলেন দাদা শ্রমিকে আপনি ঘোষনা করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিলেন তাহলে শ্রমিক উক্ত সপ্তাহে কোন সাপ্তাহিক ছুটি পায়নি কারন আপনিই শ্রমিকে উক্ত সপ্তাহে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিয়েছেন এবং হাজিরা খাতায় উৎসব ছুটি লিখেছেন কিন্তু সাপ্তাহিক ছুটি লিখেন নাই।
শ্রম আইনের ১০৪ ধারাতে এবং বিধিমালার ১০১ বিধিতে বলা আছে যদি কোন শ্রমিকে সাপ্তাহিক ছুটি দেয়া না হয় বা যায় তবে পরর্বতী ৩ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করতে হবে।
আমার যুক্তি খুব সাধারণ আপনি সাপ্তাহিক ছুটি দিনকে উৎসব ছুটি দিয়ে রিপপ্লেস (replace) করতে পারবেন কোথাও বলা নাই তাই আপনি শ্রমিকে যে সাপ্তাহিক ছুটি দেননি সেটি দিয়ে দেন।
তাহলে আর সমস্যা নেই কারন আপনি শুক্রবার ছাড়া উৎসব ছুটি দিতে পারে না তাহলে সাপ্তাহিক ছুটির ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেন।
অনেকে বলার চেষ্টা করবেন যে আমি শ্রমিকে শুক্রবারে বন্ধ দিয়েছে তাহলে আবার ক্ষতিপূরণ কি জন্য। দাদা শুক্রবারে বন্ধ দিয়েছে এবং হাজিরা খাতায় কিন্তু উৎসব ছুটি লিখিছেন সেখানে কিন্তু সাপ্তাহিক/উৎসব লেখা যায় না কারন একদিনে দুটি ছুটি দেয়া যাবে তা কিন্তু বলা নাই শ্রম আইনে।তবে সাপ্তাহিক ছুটি না দিলে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি দিতেই হবে তা শ্রম আইনে বলা আছে।
সরকারী প্রতিষ্ঠানের কথা টেনে লাভ নাই কারন সরকারী কর্মীরা নিজস্ব চাকুরী বিধিমালাতে চলে।
আশা করি এরপরে আর কেউ ব্যাখ্যা চেয়ে লজ্জা দিবেন না।
⛔ শ্রম আইনে অসদাচরণঃ কারণ দর্শানোর নোটিশ নিয়ে কথা
কোন শ্রমিক (বা কর্মচারী) অসদাচরণ করলে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তি প্রদানের বিধান দিয়েছে। শ্রম আইনের ২৩ ধারা অসদাচরণের উপাদান এবং ২৪ ধারা তদন্ত ও শাস্তির প্রক্রিয়া বিধৃত করেছে। এর ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া এবং প্রদত্ত শাস্তি চ্যালেঞ্জযোগ্য হতে পারে। মাননীয় শ্রম আদালতে এবং ক্ষেত্র বিশেষে মাননীয় হাই কোর্ট বিভাগে তা করা যেতে পারে।
এবার একটি কারণ-দর্শানো বা শো-কোজ নোটিশের অংশ বিশেষ আপনাদের দেখাচ্ছিঃ
“আপনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ এই যে, আপনি নিয়মিত ভাবে কারখানার সুইং মেশিনের পার্টস চুরি করে বাহিরে নিয়ে বিক্রি করেন। যাহার একাধিক প্রমাণ কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে। আপনার উক্ত আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী “অসদাচরণের” আওতায় পড়ে। যাহা শাস্তি যোগ্য অপরাধ ...”।
দেখার বিষয় এই কারণ-দর্শানো নোটিশে সমস্যা কি?
প্রথমতঃ
কবে-কোথায় কথিত চুরি সংগঠিত হয়েছে তা নোটিশে উল্লেখ নেই। কি কি পার্টস চুরি হয়েছে তা নেই। কোন মেশিনের পার্টস তাও উল্লেখ নেই।
কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে হলে তা সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট হতে হবে; যাতে করে অভিযুক্ত ব্যক্তি অভিযোগ কি তা বুঝে তার উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পান। অভিযোগ যে সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট হতে হবে- সে বিষয়ে আমাদের মাননীয় উচ্চ আদালত থেকে একাধিক মামলায় সিদ্ধান্ত রয়েছে।
অভিযোগ সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি স্বীকারোক্তি দিলেও পরে তা চ্যালেঞ্জ করতে পারেন যে জোর করে ও তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে উক্ত স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে।
আরেকটি বিষয়, কর্তৃপক্ষের কাছে কোন “প্রমাণ” থাকলে তারা তা তদন্ত কমিটির কাছে দাখিল করবেন। কারণ-দর্শানোর নোটিশে তার উল্লেখ অভিযুক্তের প্রতি এক প্রকার হুমকি এবং অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের আগেই ঘটনার বিষয়ে পক্ষপাতদুস্টভাবে দোষী সাব্যস্ত করার এবং একতরফা সিদ্ধান্তে পৌঁছার দায়ে অভিযুক্ত হতে পারে।
⛔ মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধার বিশ্লেষণ:
বাংলাদেশ শ্রম আইনে মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধাকে চারটি ভাগে ভাগ করেছে।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুবিধা।
২। মাতৃত্বকালীন সুবিধাবিহীন ছুটি।
৩। নোটিশের পূর্বে সন্তান জন্ম পরবর্তী মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধা।
৪। গর্ভপাত জন্য ছুটি।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুবিধা:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-৪৫ অনুযায়ী যদি কোন নারী কর্মী প্রতিষ্ঠানে সন্তান জন্মের পূর্বে ৬ মাস কাজ করেন এবং তার ২টি সন্তান জীবিত নেই।
সেক্ষেত্রে তিনি ১১২ দিনের মজুরীসহ ছুটি এবং ধারা-৪৮ অনুযায়ী ১১২ দিনের সুবিধা পাবেন।
২। মাতৃত্বকালীন সুবিধাবিহীন ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-৪৫ অনুযায়ী যদি কোন নারী কর্মী প্রতিষ্ঠানে সন্তান জন্মের পূর্বে ৬ মাস কাজ না করে থাকেন অথবা তার ২টি সন্তান জীবিত থাকে।
তবে তিনি মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন না কিন্তু এক্ষেত্রে তিনি কোন ছুটি পাইবার অধিকারী হইলে তাহা পাইবেন।
এক্ষেত্রে তার বৎসরিক ছুটি এবং অসুস্থতা ছুটি প্রথমে ভোগ করার পরে আর ছুটি প্রয়োজন হলে মজুরীবিহীন ছুটি পাবে।
৩। নোটিশের পূর্বে সন্তান জন্ম পরবর্তী মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধা:
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে নারী কর্মীরা মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য আবেদন করার পূর্বেই সন্তান জন্ম দান করেন।
উক্ত ক্ষেত্রে নারী কর্মী শুধুমাত্র ৫৬ দিনের ছুটি পাবেন এবং ১১২ দিনের মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন।
৪। গর্ভপাত জন্য ছুটি:
২০১৮ সালের সংশোধনীর পূর্বে কোন নারীর গর্ভপাতের জন্য কোন ছুটি বা সুবিধা পাইবার সুযোগ ছিল না কিন্তু ২০১৮ এর সংশোধনী অনুযায়ী কোন নারী কর্মীর গর্ভপাত হলে।
তিনি কোন মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন না কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার জন্য ছুটি ভোগ করতে পারবেন
⛔ অংশগ্রহণ কমিটি:
৬ জনের কম এবং ৩০ জনের অধিক হবেনা।
সাধারণ শ্রমিক সংখ্যা, কমিটির সদস্য সংখ্যা
১-১০০ জন = ৬ জন
১০১-৪০০ জন = ১০ জন
৪০১-৮০০ জন। = ১২ জন
৮০১-১৫০০ জন। = ১৪ জন
১৫০১-৩০০০ জন = ১৮ জন
৩০০১-৫০০০ জন। = ২২ জন
৫০০১-৭৫০০ জন = ২৪ জন
৭৫০১-ততোধিক = ৩০ জন
⛔ শ্রম আইন অনুসারে কিছু ছুটির হিসাব
শ্রম আইন অনুসারে কিছু ছুটির বিবরণঃ
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি।
২। সাপ্তাহিক ছুটি।
৩। নৈমেত্তিক ছুটি।
৪। অসুস্থতা ছুটি।
৫। বাৎসরিক ছুটি।
৬। উৎসব ছুটি।
৭। ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি।
৮। অস্থায়ী অক্ষমতা ছুটি।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের প্রথমে মাতৃত্বকালীন ছুটির কথা বলা আছে।
শ্রম আইনের ধারা-৪৬ অনুযায়ী একজন নারী কর্মী মোট ১৬ সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন ছুটি পাইবেন।
২। সাপ্তাহিক ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১০৩ ধারাতে সাপ্তাহিক ছুটি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
কারখানা এবং সড়ক পরিবহনের কর্মীরা এক দিন এবং দোকান,বাণিজ্যিক এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা দেড় দিন করে সাপ্তাহিক ছুটি পাবে।
৩। নৈমেত্তিক ছুটি:
ধারা-১১৫ অনুযায়ী একজন কর্মী ১০ দিন নৈমেত্তিক ছুটি পাইবার অধিকারী হইবেন।
তবে কোন কর্মী বছরের মাঝামাঝি সময়ে যোগদান করলে তিনি আনুপাতিক হারে নৈমেত্তিক ছুটি পাইবেন।
৪। অসুস্থতা ছুটি:
একজন কর্মী শ্রম আইনের ১১৬ ধারা অনুযায়ী ১৪ দিন অসুস্থতা ছুটি পাইবেন।
উক্ত ছুটি পেতে হলে একজন কর্মীকে ডাক্তারের প্রত্যয়নপএ প্রদর্শন করতে হবে।
৫। বাৎসরিক ছুটি:
কোন প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিক প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য একদিন বাৎসরিক ছুটি পাইবেন।
শ্রম আইনে একটি মাএ ছুটি যা নগদায়ন করা যায়।
৬। উৎসব ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১১৮ ধারা অনুযায়ী একজন কর্মী ১১ দিন উৎসব ছুটি পাইবেন।
প্রতি বছর ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে উক্ত ছুটির দিনগুলো নির্ধারন করতে হবে।
৭। ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি:
শ্রম আইনের দুটি ধারাতে ক্ষতিপূরন ছুটি দেয়ার কথা বলা আছে।
সাপ্তাহিক ছুটি এবং উৎসব ছুটির ক্ষেএে ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি প্রদান করতে হবে।
৮। অস্থায়ী অক্ষমতা ছুটি:
শ্রম আইনের ৫ম তফসিলে উক্ত ছুটির বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
১ বছরের বেশি কেউ উক্ত ছুটি পাইবেন না এবং পেশাগত ব্যাধির জন্য উক্ত ছুটি ২ বছরের বেশি কেউ পাবেন না।
⛔ সেফটি কমিটি গঠনের সময়সীমা:
*বিদ্যমান কারখানাসমুহের খেত্রে এ বিধিমালা কর্যকর হবার তারিখ হতে ৬(ছয়) মাসের মধ্যে
এবং
*বিধিমালা কার্যকরী হওয়ার পর স্থাপিত কারখানাসমুহের খেত্রে উৎপাদন চালু হওয়ার ৯(নয়) মাসের মধ্যে সেফটি কমিটি গঠণ করতে হবে।
সেফটি কমিটির সদস্য সংখ্যা:
*সেফটি কমিটিতে মোট সদস্য সংখ্যা ৬(ছয়) এর কম এবং ১২(বার) এর অধিক হবেনা।
মালিক এবং শ্রমিক সমসংখ্যক প্রতিনিধি থাকবে।
সাধারণ শ্রমিক সংখ্যা, কমিটির সদস্য সংখ্যা
৫০-৫০০ জন। = ৬ জন
৫০১-১০০০ জন। = ৮ জন
১০০১-৩০০০ জন। = ১০ জন
৩০০১-ততোধিক। = ১২ জন
(শ্রম বিধি-৮১)
⛔ পদত্যাগ (Resignation) বেপজার জন্য:
বেপজা নির্দেশনা অনুযায়ী শুধুমাএ স্থায়ী কর্মীদেরকে চাকুরী হতে পদত্যাগ করার জন্য নোটিশ প্রদান করতে হবে।
কোন স্থায়ী কর্মীকে চাকুরী হতে পদত্যাগের ৩০ দিনের আগাম নোটিশ অথবা ৩০ দিনের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে।
কোন অস্থায়ী কর্মীকে পদত্যাগের জন্য কোন নোটিশ বা টাকা প্রদান করতে হবে না।
শ্রম আইনের মত বেপজা নির্দেশনায় কোন সার্ভিস বেনিফিটের ব্যবস্থা নেই স্থায়ী কর্মীদের জন্য।
এছাড়াও কোন কর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চালু থাকাকালীন ৬০ দিন অতিক্রম না করলে চাকুরী হতে পদত্যাগ করতে পারবে না,যদি না মালিকের শর্ত মানে।
⛔ চুক্তিভিত্তিক(Contractual) কর্মী নিয়োগঃ
দেশের Corporate Office গুলোতে খুব বেশি জন প্রিয় শব্দ হল Contractual Employee.
সবাই প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ প্রদানে বেশ আগ্রহী থাকে কিন্তু শ্রম আইন কি বলে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৮ অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ দানের বিধান আছে।
তবে ২৮ ধারাতে সুকৌশলে একটা শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে।২৮ ধারা অনুযায়ী কোন কর্মীকে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসাবে নিয়োগ প্রদান করতে পারবেন তবে সেটা উক্ত কর্মীর অবসর গ্রহন করার পরে যদি তিনি উক্ত কাজের জন্য উপযুক্ত হন।
অথাৎ ৬০ বছরের পরে কোন কর্মীকে চুক্তিভিত্তিক হিসাবে নিয়োগ প্রদান করতে পারবেন।
আমি শ্রম আইনের ২৮ ধারা মানবো না,চুক্তি করে কর্মী নিয়োগ দিলে তা বৈধ হবে কি না?
বাংলাদেশের চুক্তি আইনটি ১৮৭২ সালের আইন।
উক্ত আইনের ২৩ ধারাতে বলা আছে:
The consideration or object of agreement is lawful; unless it is forbidden by law.
মূল বক্তব্য হল:-
আপনি কোন চুক্তি করেন তা আইনত বৈধ হতে হবে অন্যথায় উক্ত চুক্তি আইনে নিষিদ্ধ।
বিষয়টা কেমন হয়ে গেল না।
শ্রম আইনের ধারা-৫ অনুযায়ী একজন কর্মীকে নিয়োগ দিতে হলে নিয়োগপএ এবং পরিচয়পএ দেয়ার কথা বলা আছে।
কিন্তু আপনি নিয়োগপএ প্রদান না করে দিলেন চুক্তিপত্র,
কি সেই চুক্তিপএ বৈধ, না অবৈধ।
এটা বুঝতে আপনাকে আইনবিদ হতে হবে না নিশ্চয়ই।
"Contractual Employment" শব্দটা ভুলে যেতে পারেন কারন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অবৈধ ৬০ বছরের পূর্বে।
⛔বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারাঃ ০৪
শ্রমিকের শ্রেনীবিভাগ ও শিক্ষানবিশকাল
(কোন প্রতিষ্ঠানে সাধারনত ৭ ধরনের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়)
১. শিক্ষাধীনঃ(Apprentice) প্রশিক্ষনার্থী হিসেবে নিয়োগ করা হবে এবং প্রশিক্ষন কালে ভাতা প্রদান করা হবে।
২. বদলীঃ(Substitiute) প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কোন শ্রমিকের সাময়িক অনুপস্থিত সময়ে নিয়োগ করা হয়।
৩. সাময়িকঃ(Casual) প্রতিষ্ঠানের সাময়িক কোন কাজে কিছুদিনের জন্য নিয়োগ করা হবে।
৪. অস্থায়ীঃ(Temporary) এধরনের শ্রমিক কে নিয়োগ করা হয় একান্তভাবে অস্থায়ী কোন কাজের জন্য এবং কাজটি সীমিত সময়ের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
৫. শিক্ষানবিশঃ(Probationer) কোন স্থায়ী পদে তাকে নিয়োগ করা হয়,এবং শিক্ষানবিশ বলা হয় শিক্ষানবিশকাল সমাপ্ত না হওয়ার আগ পর্যন্ত।
৬. স্থায়ীঃ(Permanent) শিক্ষানবিশকাল সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ার পর স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হয়।
* কেরানী সংক্রান্ত কাজে শিক্ষানবিসকাল হবে ৬ মাস আর অন্যান্য ক্ষেত্রে হবে ৩ মাস।
*দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে তার কাজের মান যাচাইয়ের জন্য শিক্ষানবিসকাল ৩ মাসের পরিবর্তে আরো ৩ মাস বাড়ানো যেতে পারে।তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিষয়টি চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিতে হবে।
* অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৩ মাস পরে কনফারমেশন লেটার না দেওয়া হলেও তাকে স্থায়ী বলে গন্য করা হবে।
*যদি কোন শ্রমিক শিক্ষানবিসকালে চাকুরী থেকে চলে যায়,এবং পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে একই মালিকের অধীনে চাকুরীতে আসে তাহলে পূর্ববর্তী শিক্ষানবিসকালের দিন সংখ্যা বর্তমান দিনের সাথে যোগ করতে হবে।
৭. মৌসুমীঃ(Seasonal) মৌসুমকালে কোন শ্রমিককে মৌসুম কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং মৌসুম চলা কালীন সময়ে কর্মরত থাকেন।
⛔ধারাঃ১২ কাজ বন্ধ রাখা( Stoppage of work)
১. অগ্নিকান্ড,আকস্মিক বিপত্তি,যন্ত্রপাতি বিকল,বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ,মহামারী,ব্যাপক দাঙ্গা-হাঙ্গামা বা মালিকের নিয়ন্ত্রন বহির্ভুত অন্য কোন কারনে প্রয়োজন হলে মালিক যেকোন সময় তার প্রতিষ্ঠানের কোন শাখা বা শাখা সমুহ আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে পারবেন।এবং যে কারনে উক্তরুপ বন্ধের আদেশ দেওয়া হবে তা বিদ্যমান থাকা পর্যন্ত এই আদেশ বহাল রাখতে পারবেন।
২. যদি উক্তরুপ বন্ধের আদেশ কর্মসময়ের পরে দেওয়া হয়,তা হলে পরবর্তী কর্মসময় শুরু হওয়ার আগে মালিক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ঠ শাখার নোটিশ বোর্ড বা প্রকাশ্য কোন স্থানে লটকাইয়া দিয়ে বিষয়টি শ্রমিককে অবহিত করবেন।
৩. উল্লেখিত নোটিশে বন্ধ পরবর্তী কাজ কখন শুরু হবে ও কাজ পুনরায় শুরু হওয়ার কোন সময় তাকে কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে সে সম্পর্কে নির্দেশ থাকবে।
৪. যদি উক্তরুপ বন্ধ কর্মসময়ের মধ্যে সংঘটিত হয় তা হলে মালিক উপধারা ২ এর পন্থায় শ্রমিকগনকে যথাশিঘ্র অবহিত করবেন এবং নোটিশে বন্ধ পরবর্তী কাজ কখন শুরু হবে ও কাজ পুনরায় শুরু হওয়ার কোন সময় তাকে কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে সে সম্পর্কে নির্দেশ থাকবে।
৫. উক্তরুপ কাজ বন্ধের পর যে সমস্ত শ্রমিককে কর্মস্থলে অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হবে,তাদের অবস্থানের সময় ১ ঘন্টার কম হলে তারা মজুরী নাও পেতে পারে এবং অবস্থানের সময় এর অধিক হলে অবস্থান কালীন সম্পূর্ণ সময়ের জন্য মজুরী পাবেন।
৬. যদি কাজ বন্ধ এর মেয়াদ এক কর্মদিবসের চেয়ে বেশি না হয় তা হলে সংশ্লিষ্ঠ কোন শ্রমিক, উপধারা ৫ এর ক্ষেত্র ব্যতীত,কোন শ্রমিক মজুরী নাও পেতে পারে।
৭. যদি কাজ বন্ধের মেয়াদ ১ কর্মদিবসের বেশি হয় তাহলে সাময়িক বা বদলী শ্রমিক ব্যতীত সংশ্লিষ্ঠ শ্রমিককে ১ দিনের অতিরিক্ত সকল বন্ধ কর্মদিবসের জন্য মজুরী প্রদান করতে হবে।
৮. যদি কাজ বন্ধের মেয়াদ ৩ কর্মদিবশের বেশি হয় তাহলে শ্রমিকগনকে ধারাঃ১৬ (**** শীঘ্র আলোচনা করা হবে) অনুযায়ী লে অফ করা হবে।
৯. এই লে অফ কাজ বন্ধ হওয়ার ১ম দিন হতে বলবত হবে।এবং ১ম তিন দিনের জন্য প্রদত্ব কোন মজুরী সংশ্লিষ্ঠ শ্রমিককে প্রদেয় লে-অফ কালীন ক্ষতিপূরণ এর সাথে সমন্বয় করা হবে।
১০. কাজ বন্ধের কারনে যদি কোন ঠিকা হারের শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে উপধারা ৯ এর প্রয়োজনে তার পূর্ববর্তী এক মাসের গড় দৈনিক আয়কে দৈনিক মজুরী বলে গন্য করা হবে।
তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ শ্রম ও শিল্প আইন এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫
⛔ধারাঃ২৪ শাস্তির পদ্ধতি(Procedure for punishment)
১. ধারা ২৩ এর অধীনে কোন শ্রমিকের বিরুদ্ধে শাস্তির আদেশ প্রদান কিরা যাবে না,যদি
ক) তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়।
খ) অভিযোগের একটি কপি তাকে দেওয়া হয় এবং ইহার জবাব দেওয়ার জন্য অন্তত ৭ দিন সময় দেওয়া হয়।
গ)তাকে শুনানীর সময় দেওয়া হয়।
ঘ) মালিক ও শ্রমিকের সম সংখ্যক প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তের পর তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
- তবে শর্ত থাকে যে,উক্ত তদন্ত ৬০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে।
ঙ) মালিক বা ব্যবস্থাপক বরখাস্তের আদেশ অনুমোদন করেন।
২. অসদাচরনের অভিযোগে অভিযুক্ত কোন শ্রমিককে তদন্ত সাপেক্ষে সাময়িক বরখাস্ত করা যাবে,এবং যদি না বিষয়টা আদালতে বিচারাধীন থাকে,এই সময়িক বরখাস্তের মোট মেয়াদ ৬০ দিনের অধিক হবে না।
-তবে শর্ত থাকে যে,উক্তরুপ সাময়িক বরখাস্ত কালে মালিক তাকে খোরাকী ভাতা প্রদান করবেন এবং অন্যান্য ভাতা পূর্ণ ভাবে প্রাপ্য হবেন।
৩. সাময়িক বরখাস্তের কোন আদেশ লিখিতভাবে হবে এবং ইহা শ্রমিককে প্রদানের সাথে সাথে কার্যকর হবে।
৪. কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে,তার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কোন ব্যক্তি সহায়তা করতে পারবেন।
৫. যদি কোন তদন্তে কোন পক্ষ মৌখিক সাক্ষ্য প্রদান করেন তাহলে যার বিরুদ্ধে এই সাক্ষ্য প্রদান করা হবে তিনি সাক্ষীকে জেরা করতে পারবেন।
৬. যদি তদন্তে কোন শ্রমিককে দোষী পাওয়া যায়,এবং তাকে ধারা ২৩(১) এর অধীনে শাস্তি প্রদান করা হয়,তাহলে তিনি তার সাময়িক বখাস্তকালীন সময়ের জন্য কোন মজুরী পাবেন না।তবে উক্ত সময়ের জন্য তার খোরাকী ভাতা প্রাপ্য থাকবেন।
৭. যদি তদন্তেবকোন শ্রমিকের অপরাধ প্রমানিত না হয় তাহলে তিনি সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে কর্মরত ছিলেন বলে গন্য হবেন এবং ঐ সময়ের জন্য তার খোরাকী ভাতা সমন্বয় সহ মজুরী প্রদেয় হবে।
৮. শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে, শাস্তি অদেশের একটি কপি সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে দিতে হবে।
৯. যদি কোন শ্রমিক মালিক কর্তৃক প্রেরিত কোন নোটিশ,চিঠি, অভিযোগনামা,আদেশ বা অন্য কোন কাগজপত্র গ্রহন করতে অস্বীকার করেন,তাহলে উহা তাকে প্রদান করা হয়েছে বলে বুঝতে হবে যদি উহার একটি কপি নোটিশবোর্ডে প্রদর্শিত হয় এবং এরেকটি কপি মালিকের নথিপত্র হতে প্রাপ্ত শ্রমিকের ঠিকানায় রেজিষ্ট্রি ডাক যোগে প্রেরন করা হয়।
১০. কোন শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে মালিক সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের পূর্বতন নবি পত্র, অপরাধের [গুরুত্ব, চাকুরীকালীন কৃতিত্ব ও অবদান] এবং বিদ্যমান অন্য কোন বিশেষ অবস্থা বিবেচনায় আনবেন।
⛔ মজুরীসহ বাৎসরিক ছুটি শ্রমিক চাওয়ার পর মালিক প্রদান না করিলে মালিকের শাস্তি:
১১৭(৭) ধারা মূলত মালিকে শ্রমিকের বাৎসরিক মজুরীসহ ছুটি ভোগ করতে বাধা দান থেকে বিরত রাখার জন্য কারা হয়েছে।
এবার একটা ছোট গল্প দিয়ে ধারা ১১৭(৭) সম্পর্কে পরিস্কার হওয়া যাক। রাফি মামা লুঙ্গি নামক একটি কারখানায় চাকরি করেন।সে এই প্রতিষ্ঠানে ৩ বছর কাজ করে এবং ধারা ১১৭(৫) অনুযায়ী তার ৪০ দিন ছুটি বকেয়া পাওনা আছে,রাফির বন্ধুরা সবাই ঠিক করল সবাই ঈদের পরে কুয়াকাটা ঘুরতে যাবে।
যেই কথা সেই কাজ,রাফি মালিকের কাছে ১০ দিনের বাৎসরিক ছুটির জন্য আবেদন করল,মালিক তাকে জানালেন ঈদের পরে আমেরিকাতে লুঙ্গির শিপমেন্ট আছে।তাই ঈদের পারে তাকে কোন ছুটি দেয়া যাবে না।
অতএব, মালিকের ব্যবসায়িক প্রয়োজনে রাফির ছুটির আবেদন না মঞ্জুর করা হল।
এবার আসেন দেখি মালিকে ১১৭(৭) ধারায় কি শাস্তি দেয়া হবে। সকলের সুবিধার জন্য আমি ধারাটি উল্লেখ করে দিয়ে পরে বিশ্লেষণ করলে সকলের জন্য বুঝতে সুবিধা হবে।
"১১৭(৭) কোন শ্রমিক অর্জিত ছুটির জন্য দরখাস্ত করিলে যদি মালিক কোন কারনে উহা না-মঞ্জুর করেন,তাহা হইলে উক্ত না- মঞ্জুরকৃত ছুটি সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের হিসাবে উপধারা (৫) অথবা (৬) এ উল্লেখিত সীমার অতিরিক্ত পাওনা হিসাবে যুক্ত হইবে।"
★ প্রথম বিষয়ে হল, মালিক রাফির যে ১০ দিন ছুটি না মঞ্জুর করেছেন তা তার মোট বকেয়া সীমার ৫০ দিন ছুটির সাথে যোগ হবে।এটাই হল মালিকের শাস্তি ১১৭(৭) ধারা অনুযায়ী।
অথাৎ রাফি এখন মোট ৫০ টি ছুটি জমা রাখতে পারবে।
★এখন কথা হল বছরে কতবার মালিককৃত না-মঞ্জুরীকৃত বাৎসরিক ছুটি শ্রমিকের ছুটি হিসাবের সাথে যোগ হবে?
উত্তরটা হল মালিক যতবার বাৎসরিক ছুটি না-মঞ্জুর করবেন ততবার ধারা ১১৭(৫)অথবা(৬) ধারাতে বকেয়া ছুটি হিসাবে যোগ হবে।
★ এই ছুটি নগদায়ন করা যাবে কি না?
নগদায়ন করতে কোন বাধা নেই কারন শ্রম আইনের ধারা ১১ ও বিধি-১০৭ তে বলা আছে।
⛔ সাপ্তাহিক ছুটির আগে ও পরে কর্মী অনুপস্থিত থাকলে সাপ্তাহিক ছুটি পাবে কি না?
উত্তরটা হল ১০০% পাবে।
কারনটা কি?
প্রথমে বুঝতে হবে অনুপস্থিতি কি?
শর্ত হল প্রতিষ্ঠান খোলা থাকতে হবে,প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে অনুপস্থির প্রশ্ন কিভাবে আসে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-১২৬ এ বলা আছে নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী কোন ব্যক্তি কাজে উপস্থিত থাকার কথা কিন্তু তিনি উক্ত সময়ে কাজে না থাকলে,
তাকে বলা হবে অনুপস্থিতি।
আপনারা যখন কোন কর্মীকে নিয়োগপএ প্রদান করেন তখন তার নিয়োগপএে লিখে দেন তার অফিস কোন সময়ে থেকে কোন সময় পর্যন্ত।
তিনি সাপ্তাহিক ছুটি কোন দিন ভোগ করবেন তাও লেখা থাকে।
এবার আসেন ধারা-১১১ তে যেখানে কোন মালিক শ্রম পরিদর্শকের কাছ থেকে কাজের সময়ের অনুমোদন নিয়ে আসেন সেখানে নিদিষ্ট ভাবে বলা থাকে কোন দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে।
এখন দেখেন,
যেখানে মালিক নিজে দুটি জায়গাতে ঘোষনা দিয়ে রাখছে যে কোন দিনটি সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে।
ঠিক তার আগে ও পরের দিনটি অনুপস্থিত থাকলে কিভাবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনটি অনুপস্থিত দেখান যায়।
তাহলে যে দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে,তার আগের দিন যারা অনুপস্থিত থাকবে তারা সাপ্তাহিক ছুটি পেতে হলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আফিসে এসে দারোয়ানের সাথে কোলাকুলি করে যাবে।
আর রবিবারে এসে বলবে স্যার আমি বৃহ:পতি বার আসি নাই।
শুক্রবার কোলাকুলি করেছি দারোয়ানের সাথে।
শনিবার আসি নাই।
আজকে রবিবার আসছি।
আমি সাপ্তাহিক ছুটি পাব।
এক শ্রেনির লোক আছে যারা বিধি-১০৬ এর কথা বলেন।
বিধি-১০৬ অনুযায়ী আগে ও পরে ছুটির কথা বলা আছে অনুপস্থির জন্য কিছু বলা নাই।
যে দিন একটা প্রতিষ্ঠানের কর্ম দিবস থাকে না, সেই দিনটিকে কিভাবে অনুপস্থিত হিসাবে গন্য করেন।
ভেবেছেন কখন?
আগে নিজেদের ঠিক করেন পরে অন্যের দোষ দেন।
⛔ চাকুরীর বয়স গননার নিয়ম:
কোন কর্মীকে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২য় অধ্যায় অনুযায়ী কোন ক্ষতিপূরণ বা সুবিধা প্রদানের ক্ষেএে উক্ত কর্মীর চাকুরীর বয়স গননা করা একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়।
চাকুরীর বয়স গননার ক্ষেএে কিছু ভুল ধারনা আছে।
অনেকের ভুল ধারনা বাস্তবে ২৪০ দিন উপস্থিত থাকলেই তা ১ বছর হিসাবে গননা করা হবে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-১৪(১) এ বলা আছে
"কোন শ্রমিক কোন প্রতিষ্ঠানে পূর্ববর্তী (১২) বার পজ্ঞিকা মাসে বাস্তবে অন্তত ২৪০ দিন বা ১২০ দিন কাজ করিয়া থাকেন,তা হলে তিনি যথাক্রমে ১ বছর বা ৬ মাস প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করিয়াছেন বলিয়া গন্য হবে"
এখানে দুটি শর্ত লক্ষ্য করতে হবে,
১। পূর্ববর্তী ১২ পজ্ঞিকা মাসে।
২। বাস্তবে অন্তত ২৪০ দিন কাজ করিয়া থাকেন।
দিপ্তি XYZ কোম্পানিতে ৪ বছর ১১ মাস ২৫ দিন কাজ করেন।তারপরে তিনি ব্যক্তিগত কারন দেখিয়ে চাকুরী থেকে পদত্যাগ করে।
এখন প্রশ্ন হল ধারা ১৪ অনুযায়ী দিপ্তির চাকুরীর বয়স ৫ বছর হবে কি না?
উত্তর হল না।
কারন ধারা-১৪(১) অনুযায়ী দুটি শর্ত পূরন হতে হবে।
১। পূর্ববর্তী ১২ পজ্ঞিকা মাসে।
২। বাস্তবে অন্তত ২৪০ দিন কাজ করিয়া থাকেন।
দিপ্তির ক্ষেএে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল।তিনি ২য় শর্তটি পূরন করেছে ২৪০ দিনে উপস্থিত ছিলেন কিন্তু যে দিনে চাকুরী ছাড়ছেন।
তার ১২ পজ্ঞিকা মাস পূর্ন হয়নি।
অনেকে ভুল ধরতে চেষ্টা করবেন কিন্তু লক্ষ্য করুন যোগদানের তারিখ থেকে যোগদানের তারিখ ১২ পজ্ঞিকা মাস হিসাব করে তার মধ্যে ২৪০ দিন কাজের দিন হিসাব করুন।
তবে আর আমার কথাগুলো ভুল মনে হবে না।
অনেকের কাছে মনে হবে ৬ মাসের বেশি কাজ করলে এক বছর বিবেচনা করতে হবে, আইনে বলা আছে।
হ্যা,শুধুমাএ তা ধারা-১৯ এবং ২(১০) এর ক্ষেএে অন্য কোন ক্ষেএে না।
আর বাস্তবিক কাজের দিনের জন্য ধারা-১৪(২) এ উল্লেখিত দিনগুলোকে গননায় আনতে হবে।
⛔ ধারাঃ ০৪ - শ্রমিকের শ্রেনীবিভাগ ও শিক্ষানবিশকাল
(কোন প্রতিষ্ঠানে সাধারনত ৭ ধরনের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়)
১. শিক্ষাধীনঃ(Apprentice) প্রশিক্ষনার্থী হিসেবে নিয়োগ করা হবে এবং প্রশিক্ষন কালে ভাতা প্রদান করা হবে।
২. বদলীঃ(Substitiute) প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কোন শ্রমিকের সাময়িক অনুপস্থিত সময়ে নিয়োগ করা হয়।
৩. সাময়িকঃ(Casual) প্রতিষ্ঠানের সাময়িক কোন কাজে কিছুদিনের জন্য নিয়োগ করা হবে।
৪. অস্থায়ীঃ(Temporary) এধরনের শ্রমিক কে নিয়োগ করা হয় একান্তভাবে অস্থায়ী কোন কাজের জন্য এবং কাজটি সীমিত সময়ের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
৫. শিক্ষানবিশঃ(Probationer) কোন স্থায়ী পদে তাকে নিয়োগ করা হয়,এবং শিক্ষানবিশ বলা হয় শিক্ষানবিশকাল সমাপ্ত না হওয়ার আগ পর্যন্ত।
৬. স্থায়ীঃ(Permanent) শিক্ষানবিশকাল সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ার পর স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হয়।
* কেরানী সংক্রান্ত কাজে শিক্ষানবিসকাল হবে ৬ মাস আর অন্যান্য ক্ষেত্রে হবে ৩ মাস।
*দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে তার কাজের মান যাচাইয়ের জন্য শিক্ষানবিসকাল ৩ মাসের পরিবর্তে আরো ৩ মাস বাড়ানো যেতে পারে।তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিষয়টি চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিতে হবে।
* অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৩ মাস পরে কনফারমেশন লেটার না দেওয়া হলেও তাকে স্থায়ী বলে গন্য করা হবে।
*যদি কোন শ্রমিক শিক্ষানবিসকালে চাকুরী থেকে চলে যায়,এবং পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে একই মালিকের অধীনে চাকুরীতে আসে তাহলে পূর্ববর্তী শিক্ষানবিসকালের দিন সংখ্যা বর্তমান দিনের সাথে যোগ করতে হবে।
৭. মৌসুমীঃ(Seasonal) মৌসুমকালে কোন শ্রমিককে মৌসুম কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং মৌসুম চলা কালীন সময়ে কর্মরত থাকেন।
⛔ কোন কর্মী কি তদন্ত কমিটিতে তার সহায়তার জন্য আইনজীবিকে নিয়ে আসতে পারবে কি না :
আমি নিশ্চিত যে ৯৯.৯৯% বলবেন যে পারবে না কিন্তু আসল কথা হল পারবে।
কিভাবে এবং কোন ধারা বলে পারবে এটা হল প্রশ্ন।
পারবেন ধারা ২৪(৪) অনুযায়ী, এবার আসেন ধারাটাতে কি লেখা আছে
"২৪(৪) কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে, তাহার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত (কোন ব্যক্তি সাহায্য করিতে পারিবেন) এবং (কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে)তৎকতৃক মনোনীত কোন ব্যক্তি সাহায্য করিতে পারিবেন।
আপনারা লক্ষ্য করেন যে আমি ধারা ২৪(৪) কে একটু আলাদাভাবে লিখেছি আমার ব্যাখ্যা করার সুবিধার জন্য। যারা সাধারনভাবে ধারাটি পড়বেন তারা লক্ষ্য করেন।
এই ধারাতে " এবং " একটা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
ধারা ২৪(৪) এ দুটি বাক্য আছে যা "এবং" দিয়ে কৌশালে বলা হয়েছে যাতে আম জনতা বুঝতে না পারে। আমি যেভাবে লিখেছি আশা করি আপনারা বুঝতে পারবেন।
এছাড়াও কতজন লোককে কর্মী নিয়ে আসতে পারবে তদন্ত কমিটিতে সেটার কোন সংখ্যা বলা নাই তাই যত ইচ্ছা তত।
অনেকে এই লেখা পাড়ার পরে তদন্ত কমিটির সদস্যের সাথে সাহায্যকারীকে মিলাবেন না যেন কারন দুটি দুই জিনিস।
আর যারা English এর Compound Sentence এবং বাংলায় মিশ্র বাক্য ভাল ভাবে জানেন তারা "এবং" এর ব্যবহারটা ভাল ভাবে বুঝতে পারবেন।জেনে
⛔ওভার টাইম নীতি ও ওভার টাইম নির্নয়ের সুত্র
ওভার টাইম নীতি:
ওভার টাইম নীতি ও ওভার টাইম নির্নয়ের সুত্র – ইন্ডাঃ(প্রাঃ) লিঃ কর্তৃপক্ষ এই মর্মে ঘোষনা করছে যে, প্রচলিত শ্রম ও শিল্প কারখানা আইন ২০০৬, আর্ন্তজাতিক শ্রম আইন, আই,এল,ও এবং আর্ন্তজাতিক খ্যাতিমান ক্রেতা ও নিরিক্ষাকারী সংস্থা সমূহের নির্দেশিত আচরন বিধিমালা অনুযায়ী অত্র প্রতিষ্ঠানে কোন শিশু শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয় না। এবং অত্র প্রতিষ্ঠান উক্ত শিশু শ্রম সমর্থনও করে না।দেশের প্রচলিত আইন, আন্তজার্তিক শ্রমিক আইন অনুসারে অতিরিক্ত সময় নির্ধারণ এবং অতিরিক্ত সময়ের মজুরী প্রদান করে থাকে।
১। ওভারটাইম কাজ পুরোপুরিভাবেই কর্মীদের স্বেচ্ছাধীন।
২। কর্মীদের যে কোন সময় ওভারটাইম প্রত্যাখ্যান করার অধিকার আছে।
৩। আমরা ওভারটাইম সময়কে নিন্মোক্ত গন্ডির মধ্যে সীামত রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব:
ক) ওভারটাইম সহ দৈনিক কার্যঘন্টা হবে সর্বোচ্চ ১০ ঘন্টা।
খ) ওভারটাইম সহ সাপ্তাহিক কার্যঘন্টা হবে সর্বোচ্চ ৬০ ঘন্টা।
৪। আমরা নিশ্চিত করব যে, সকল কর্মী ওভারটাইম ডিউটি করার আগে স্ব -প্রণোদিত হয়ে একটি ওভারটাইম বিবৃতিতে স্বাক্ষর করবেন।
৫। কোন আকস্মিক এবং অনিবার্য কারণে সপ্তাহে ৬০ ঘন্টার বেশী ওভারটাইমের প্রয়োজন দেখা দিলে এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সংগে কর্মীদের সহযোগীতার মনোভাবকে ইতিবাচক ভাবে মূল্যায়ন করা হবে।
৬। ওভারটাইমের সকল পাওনা বেসিকের দ্বিগুন হিসাবে পরিশোধ করা হবে।
ওভারটাইম নির্নয় পদ্ধিতি : মূল বেতনের হারের দ্বিগুন।
মূল বেতন ওভার টাইম নির্নয়ের সুত্র : ————— X ২ = ঘন্টা প্রতি ওভার টাইমের হার। ২০৮
উদাহরন : একজন ব্যক্তির মোট বেতন ৮০০০ টাকা হলে তার ঘন্টা প্রতি ওভার টাইমের হার হবে নিম্নরুপ (৮০০০ – ১৮৫০) ÷ ১.৫ ওভার টাইম —————-- -–––-–—X ২ = ২০৮
টাকা (ঘন্টা প্রতি ওভার টাইমের হার। )
⛔ ধারাঃ৩৩ অভিযোগ পদ্ধতি (Section:33 Procedure of making complaint Procedure)
১. লে-অফ, ছাঁটাই,ডিসচার্জ,বরখাস্ত,অপসারন বা অন্য কোন কারনে চাকুরীর অবসান হয়েছে এবং শ্রমিকসহ যে কোন শ্রমিকের,এই অধ্যায়ের অধীন কোন বিষয় সম্পর্কে যদি কোন অভিযোগ থাকে এবং যদি তিনি তা সম্পর্কে এই ধারার অধীন প্রতিকার পেতে ইচ্ছুক হন তাহলে তিনি, অভিযোগের কারন অবহিত হওয়ার তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগটি লিখিত আকারে রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে মালিকের নিকট প্রেরন করবেন।
-তবে শর্ত থাকে যে,যদি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি সরাসরি গ্রহন করে লিখিতভাবে প্রাপ্তি স্বীকার করেন,সে ক্ষেত্রে উক্ত অভিযোগটি রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে না পাঠালেও চলবে।
২. মালিক অভিযোগ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ সম্পর্কে তদন্ত করবেন এবং সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে শুনানীর সুযোগ দিয়ে তা সম্পর্কে তার সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে জানাবেন।
৩. যদি মালিক উপধারা (২) এর অধীন সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হন অথবা সংশ্লিষ্ট শ্রমিক উক্তরুপ সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হন,তাহলে উপধারা(২) এ উল্লেখিত সময় অতিক্রান্ত হওয়ার তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে অথবা ক্ষেত্রমত, মালিকের সিদ্ধান্তের তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে শ্রম আদালতে লিখিতভাবে অভিযোগ পেশ করতে পারবেন।
৪. শ্রম আদালত অভিযোগ প্রাপ্তির পর উভয় পক্ষকে নোটিশ প্রদান করে অভিযোগটি সম্পর্কে তাদের বক্তব্য শ্রবণ করবেন। এবং উহার বিবেচনায় মামলার অবস্থাধীনে যেরুপ আদেশ দেওয়া ন্যায়সংগত সেরুপ আদেশ প্রদান করবেন।
৫. উপধারা(৪) এর অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ দ্বারা আদালত,অন্যান্য প্রতিকারের মধ্যে, অভিযোগকারীকে, বকেয়া মজুরীসহ বা ভাড়া ছাড়া
,তার চাকুরীতে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দিতে পারবে এবং কোন বরখাস্ত, অপসারন বা ডিসচার্জ এর আদেশকে ধারা ২৩(২) এ উল্লেখিত কোন লঘু দন্ডে পরিবর্তিত করতে পারবে।
৬. শ্রম আদালতের কোন আদেশ দ্বারা সংক্ষুদ্ধ কোন ব্যাক্তি আদেশের ৩০ দিনের মধ্যে ট্রাইবুনালের নিকট আপীল দায়ের করতে পারবেন,এবং এই আপীলের উপড় উহার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।
৭. এই ধারার অধীন কোন আভিযোগ বা আপীল দায়েরের জন্য কোন কোর্ট ফিস প্রদেয় হবে না।
৮.এই ধারার অধীন কোন অভিযোগ এই আইনের অধীন কোন ফৌজদারি অভিযোগ বলে গন্য হবে না।
৯. এই ধারায় যা কিছুই থাকুক না কেন,ধারা ২৬ এর অধীন প্রদত্ত চাকুরীর আদেশের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করা যাবে না,যদি না অবসানের আদেশটি সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের ট্রেড ইউনিয়ন কর্মকান্ডের কারনে অথবা উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে প্রদত্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয় অথবা যদি না তিনি উক্ত ধারার অধীন প্রাপ্য সুবিধা হতে বঞ্চিত হন।
⛔ ছাঁটাই : কাজের অতিরিক্ততার কারণে মালিক কর্তৃক শ্রমীকের চাকুরীর অবসান।
ছাঁটাইয়ের সুবিধা :
ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করা হলে যে দিন শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করা হয়েছে তার পরবর্তী ত্রিশ কর্মদিবসের মধ্যে নিন্মুক্ত পাওনা পরিশোধ করিতে হইবে।
১. বকেয়া মজুরী, ওভারটাইম ও অন্যান্যভাতা।
২. অভোগকৃত বাৎসরিক ছুটির মজুরী।
৩. শ্রমিক যতিদিন কাজ করেছে তার প্রতি পূর্ণ বছরের জন্য ৩০ দিনের মজুরী হারে খিতপূরন অথবা গ্রাচুইটি থাকলে এর মধ্যে যেটি বেশি হবে সেটি।
৪. ছাঁটাইয়ের এক মাস পূর্বে যদি নোটিশ না দিয়ে থাকে তাহলে এক মাসের মজুরী।
৫. প্রবিডেন্ট ফান্ডের বিধান থাকলে প্রবিডেন্ট ফান্ডের টাকা।
⛔ ধারাঃ২৫ জরিমানা সম্পর্কে বিশেষ বিধান (Section:25 Special provision relating to fine)
১. কোন মজুরী মেয়াদে প্রদেয় মজুরীর এক দশমাংশের অধিক পরিমান অর্থ কোন শ্রমিককে জরিমানা করা যাবে না।
২. পনের বছরের কম বয়স্ক কোন শ্রমিকের উপর জরিমানা আরোপ করা যাবে না।
৩. কোন শ্রমিকের উপর আরোপিত জরিমানা কিস্তি ভিত্তিতে বা উহা আরোপের তারিখ হতে ৬০ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর আদায় করা যাবে না।
৪. কোন জরিমানা,যে অপরাধের জন্য আরোপিত হয়েছে সে আপরাধ সংঘটনের তারিখেই উহা আরোপিত হয়েছে বলে গন্য হবে।
৫. সকল জরিমানা এবং উহার আদায় বিধি দ্বারা নির্ধারিত একটি রেজিস্টারে মালিক কর্তৃক লিপিবদ্ধ করা হবে এবং আদায়কৃত জরিমানা কেবলমাত্র প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শ্রমিকগনের কল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা যাবে।
⛔ শিক্ষানবিস কাল:
শিক্ষানবিস কাল নিয়ে সবার মাঝে ব্যাপক ভুল ধারনা আছে যেমন অনেকে প্রথমে শিক্ষানবিস কাল হিসাবে ৬ মাস দেয়ার পারে সেটা আবার ৩ মাস বৃদ্ধি করেন ইত্যাদি ইত্যাদি।
আসলে কি বলা আছে আইনে
কেরানি ধরনের কাজ যারা করেন তাদের শিক্ষানবিসকাল হবে ৬ মাস। এবার কেরানি নিয়ে আলোচনা করা যাক যে কেরানি কে?
আমরা যারা টেবিলে বসে কাজ করি তাদের কাজেকে কেরানির কাজ বলে। আমার একটা সাধারন উদাহরণ দিয়ে বলার চেষ্টা করলাম এটার আরও অনেক বিষয় আছে কিন্ত তা নিয়ে আলোচনা করলে বিষয়টা জটিল হয়ে যাবে।
যাই হোক, যেকোন কেরানি ধরনের কাজের জন্য শিক্ষানবিস কাল ৬ মাস এবং ইহা কোন অবস্থায় এই ধরনের কর্মীর শিক্ষানবিস কাল আর বৃদ্ধি করা যাবে না।
কেরানি ধরনের কর্মী ব্যতীত অন্য সকল কর্মীদের শিক্ষানবিস কাল হবে ৩ মাস এবং যদি নিয়োগকারী কর্মী অদক্ষ হয় তার শিক্ষানবিস কাল আর বৃদ্ধি করা যাবে না। কিন্ত যদি নিয়োগকারী কর্মীর নিয়োগপএে উল্লেখিত কাজে যদি পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকে তবে শিক্ষানবিস কাল ৩ মাস থেকে বৃদ্ধি করে ৬ মাস করা যাবে কিন্ত ৬ মাসকে কোন ভাবে ৯ মাস করা যাবে না।
অনেকে এই ভুলটি করেন যে শিক্ষানবিস কাল ৬ মাস থেকে ৯ মাস করে থাকেন। কিন্ত আপনি যেকোন ধরনের কর্মীই নিয়োগ করেন না কেন, কোন অবস্থাতেই শিক্ষানবিস কাল ৬ মাসের বেশি হবে না।
৬ মাসে মধ্যে যদি কর্মীর কাজের মান ভাল না হয় তবে আপনি তাকে শুভ বিদায় দিয়ে দিতে পারেন কিন্ত ৬ মাসের পরে একদিন বেশি হলেও সে স্থায়ী কর্মী হিসাবে বিবেচিত হবে আইন অনুযায়ী তাকে আপনি স্থায়ীকরন পএ দেন বা না দেন তাতে কিছু আসে যায় না।
⛔ Disciplinary Action Procedure:
1. প্রথমে মৌখিকভাবে সতর্ক করে দেয়া যে কাজ সে করছে সেটা ভালো নয় এটা তাকে বুঝিয়ে দেয়া ! এটা একটা রেজিস্টার খাতায় লিপিবদ্ধ করে তার সই নেয়া !
2. লিখিতভাবে নোটিশ করে সতর্ক করে দেয়া !
3. লিখিতভাবে কারণ দর্শানো নোটিশ করা এবং
জবাব সন্তোষজনক হলে লিখিতভাবে সতর্ক করে দেয়া !
4. অপরাধ মারাত্মক হলে কিংবা গুরুতর হলে
লিখিতভাবে কারণ দর্শানো নোটিশসহ সাময়িকভাবে থেকে বরখাস্ত করা এবং জবাব যুক্তিসংগত ও সন্তোষজনক হলে লিখিতভাবে সতর্ক করে দেয়া !
5. জবাব সন্তোষজনক না হলে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা এবং লিখিতভাবে তদন্তের নোটিশ করা !
6. তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর অপরাধ প্রমানিত না হলে
লিখিতভাবে সতর্ক করে দিয়ে কাজে যোগদানের অনুমুতি দেয়া ! আর অপরাধ প্রমানিত হলে লিখিতভাবে নোটিসের মাধ্যমে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা !
⛔ধারাঃ২৩ অসদাচরন এবং দন্ড-প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শাস্তি। (Punishment for misconduct and conviction)
১. এই আইনে লে-অফ, ছাঁটাই, ডিসচার্জ, এবং চাকুরীর অবসান সম্পর্কে অন্যত্র যা কিছু বলা হোক না কেন,কোন শ্রমিককে বিনা নোটিশে বা নোটিশের পরিবর্তে বিনা মজুরীতে চাকুরী হতে বরখাস্ত করা যাবে,যদি তিনি
ক) কোন ফৌজদারী অপরাধের জন্য দন্ড প্রাপ্ত হন।
খ) ধারাঃ২৪ এর অধীনে দোষী সব্যস্ত হন।
২. অসদাচরনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত কোন শ্রমিককে উপধারা (১) এর অধীন চাকুরী হতে বরখাস্তের পরিবর্তে,বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে, নিম্ন লিখিত কোন শাস্তি প্রদান করা যাবেঃ-
ক) অপসারন
খ) নীচের কোন পদে, গ্রেডে বা বেতন স্কেলে অনধিক ১ বছর পর্যন্ত আনয়ন।
গ) অনধিক ১ বছরের জন্য পদোন্নতি বন্ধ।
ঘ) অনধিক ১ বছরের জন্য মজুরী বৃদ্ধি বন্ধ।
ঙ) জরিমানা
চ) অনধিক ৭ দিন পর্যন্ত বিনা মজুরীতে বা বিনা খোরাকীতে সাময়িক বরখাস্ত।
ছ) ভতসনা ও সতর্কীকরন।
৩. উপধারা ২ (ক) এর অধীন অপসারিত কোন শ্রমিককে, যদি তার অবিচ্ছিন্ন চাকুরীর মেয়াদ অন্যুন ১ বছর হয়,মালিক ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রত্যেক সম্পূর্ণ চাকুরী বছরের জন্য ১৫ দিনের মজুরী প্রদান করবেন।
তবে শর্ত থাকে যে,কোন শ্রমিক উপধারা ৪ (খ) ও (ছ) এর অধীন অসদাচরনের জন্য বরখাস্ত করা হলে তিনি কোন ক্ষতিপূরন পাবেন না।তবে এরুপ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক তার অন্যান্য আইনানুগ পাওনাদি যথা নিয়মে পাবেন।
৪. নিম্ন লিখিত কাজ অসদাচরণ বলে গন্য হবেঃ-
ক) উপরস্থের কোন আইনসংগত বা যুক্তিসংগত আদেশ মানার ক্ষেত্রে এককভাবে বা অন্যের সংগে সংঘবদ্ধ হয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্যতা।
খ) মালিকের ব্যবসা বা সম্পত্তি সম্পর্কে চুরি, (আত্নসাৎ), প্রতারনা বা অসাধুতা।
গ) মালিকের আধীনে তাঁহার বা অন্য কোন শ্রমিকের চাকুরী সংক্রান্ত ব্যাপারে ঘুষ গ্রহন বা প্রদান।
ঘ) বিনা ছুটিতে অভ্যাসগত অনুপস্থিতি বা ছুটি না নিয়ে একসংগে ১০ দিনের বেশি সময় অনুপস্থিতি।
ঙ) অভ্যাসগত বিলম্বে উপস্থিতি।
চ) প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য কোন আইন,বিধি প্রবিধানের অভ্যাসগত লংঘন।
ছ) প্রতিষ্ঠানে উচ্ছৃংখলতা, দাংগা-হাংগামা,অগ্নিসংযোগ বা ভাংচুর।
জ) কাজে কর্মে অভ্যাসগত গাফিলতি।
ঝ) প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত চাকুরী সংক্রান্ত শৃঙ্খলা, আচরনসহ যে কোন বিধির অভ্যাসগত লংঘন।
ঞ) মালিকের অফিসিয়াল রেকর্ডের রদবদল,জালকরন,অন্যায় পরিবর্তন, উহার ক্ষতিকরন বা উহা হারিয়ে ফেলা।
৫. উপধারা ১(ক) এর অধীন বরখাস্তকৃত কোন শ্রমিক যদি আপীলে খালাশ পান,তাহলে তাকে পূর্বতন পদে বহাল করতে হবে,অথবা নতুন কোন উপযুক্ত পদে তাকে নিয়োগ করতে হবে।এবং ইহার কোনটিই যদি সম্ভব না হয়, তাহলে তাকে ডিসচার্জকৃত কোন শ্রমিককে প্রদেয় ক্ষতিপূরণের সমান হারে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।তবে বরখাস্ত হওয়ার কারনে ইতোমধ্যে প্রাপ্ত ক্ষতিপূরণের টাকা ইহা হতে বাদ যাবে।
Tags:
Garments