হিটলারের ক্ষমতায় আসার আট দশক


     default
৮০ বছর, অর্থাৎ আট দশক আগে ক্ষমতায় এসেছিল আডলফ হিটলার৷ তার পরের ইতিহাস সবার জানা৷ শুধু জার্মানি নয়, প্রায় গোটা বিশ্বের উপর পড়েছিল তার পৈশাচিক শাসনকালের প্রভাব৷

১৯৩৩ সালের ৩০শে জানুয়ারি৷ বার্লিনের ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণ৷ বিশাল আয়োজন৷ নাৎসি প্রচারণাযন্ত্র প্রস্তুত৷ নাৎসি গুণ্ডা বাহিনীর প্রায় ২০,০০০ সদস্য মশাল জ্বালিয়ে কুচকাওয়াজ করছে৷ কয়েক ঘণ্টা আগেই আডলফ হিটলার তার লক্ষ্য পূরণ করেছে৷ প্রেসিডেন্ট পাউল ফন হিন্ডেনবুর্গ তাকে জার্মান রাইশের চ্যান্সেলর হিসেবে নিযুক্ত করেছেন৷ হিটলারের অনুগামীরা তাই উৎসবে মেতে উঠেছিল৷ গোটা আয়োজনের পৌরোহিত্য করেছিল হিটলারের প্রচারণা যন্ত্রের প্রধান ইয়োসেফ গ্যোবেলস৷ হিটলারকে চ্যান্সেলারের প্রাসাদের জানালায় দাঁড় করিয়ে জার্মানির জন্য নতুন যুগের সূচনার কথা ঘোষণা করে সে৷ নাটকীয় সেই রাতকে ঘিরে যেন এক মায়াজাল রচনা করা হয়েছিল৷
Eröffnung der Ausstellung 1933 Der Weg in die Diktatur
হিটলারের ক্ষমতায় আশার ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রদর্শনী
সে যুগেও গণমাধ্যমের শক্তি সম্পর্কে সচেতন ছিল গ্যোবেলস৷ সিনেমার পর্দায়ও হিটলারের ক্ষমতায় আসার ঘটনা অমর করে রাখার ব্যবস্থা হয়েছিল৷ মূল ছবির আগে সংবাদ পরিবেশনের যে রেওয়াজ ছিল, তাতে রাখা হতো হিটলারের এই জয়গান৷ কিন্তু ৩০শে জানুয়ারি পদচারীরা সেই পরিকল্পনার কথা তো আর জানতেন না৷ ফলে বার বার তারা নাৎসি গুণ্ডা বাহিনীর মাঝে চলে আসছিলেন৷ বিরক্ত গ্যোবেলস ভালো ছবির স্বার্থে পরে আবার নতুন করে কুচকাওয়াজ করায়৷
হিটলারের উত্থানের ইতিহাস ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতনের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে৷ ১৯১৮ সালে এই প্রজাতন্ত্রের গোড়ায়ই ছিল গণ্ডগোল৷ গণতান্ত্রিক ভাবাপন্ন মানুষ ছাড়াই এই গণতন্ত্র শুরু হয়েছিল৷ জনসংখ্যার একটা বড় অংশ এই প্রজাতন্ত্র মানতে চায় নি৷ বিশেষ করে শিল্প-বাণিজ্য জগত, সরকারি কর্মচারী এমনকি রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেও প্রতিরোধ শুরু করেছিলেন৷ অভ্যুত্থানের একাধিক প্রচেষ্টাও ঘটেছিল৷ এমন শূন্যতা পূরণ করতে আসরে এসেছিল হিটলার৷ কিন্তু জার্মানির মানুষ এক কালো অধ্যায় পেছনে ফেলে আরও ভয়ংকর এক যুগের দিকে এগিয়ে গেলেন৷ ৬০ লক্ষ ইহুদির গণহত্যার মতো ঘটনা আর কখনো, কোথাও ঘটে নি৷
Berlin Gedenkfeier für die Opfer des Nationalsozialismus
বার্লিন শহরে ইউরোপে গণহত্যায় নিহত ইহুদিদের স্মারক
যাঁরা নাৎসি আমলের শিকার হয়েছিলেন, তাঁদের প্রতি যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে বুধবার বার্লিনে একাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ চ্যান্সেলর ম্যার্কেল একটি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন৷ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতায় এসেও কীভাবে সব ক্ষমতার রাশ নিজের হাতে তুলে নেওয়া যায়, তা ফুটে উঠেছে সেই প্রদর্শনীতে৷
এসবি/ডিজি (এপি)

Post a Comment

Previous Post Next Post